ডেস্ক রির্পোট:- ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আনোয়ারুল আজীমকে হত্যার পর লাশ টুকরো করার বর্ণনা দিয়েছেন জড়িতরা। কলকাতায় গ্রেপ্তার জিহাদ হাওলাদার ওরফে ‘কসাই জিহাদ’ জানান, নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের বাথরুমে টুকরো টুকরো করা হয় এমপি আজীমের লাশ। এর আগে প্রায় এক ঘণ্টা মরদেহটি মেঝেতে পড়ে ছিল। পরে চারজন মিলে টেনে সেটি বাথরুমে নিয়ে যান। সোমবার (২৭ মে) তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে এমপি আজীম হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহীন ও কিলিং মিশনের সদস্য সিয়ামকে গ্রেপ্তারে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থার (ইন্টারপোল) সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর গত ২০ মে শাহীন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে প্রথমে দিল্লি যান। সেখান থেকে যান নেপালে।
এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশের পাশাপাশি শাহীনের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে। তাই তার ব্যাপারে ইন্টারপোলের যুক্তরাষ্ট্র ডেস্কে সোমবার চিঠি পাঠানো হয়। আর সিয়াম ঘটনার পর ভারত থেকে নেপালে গেছেন বলে জানা যায়। তাকে আইনের আওতায় আনতে ইন্টারপোলের নেপাল শাখায় চিঠি পাঠানো হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রের তথ্য, এমপি আজীম হত্যায় অন্যতম অভিযুক্ত জিহাদ হাওলাদার জেরায় জানিয়েছেন- হত্যার পর মাথা কেটে শরীর থেকে আলাদা করার দায়িত্ব ছিল তার। এরপর তা টুকরো টুকরো করা হয়। শরীর থেকে চামড়া ছাড়িয়ে আলাদা করা হয় মাংস ও হাড়। লাশ টুকরো করার কাজ জিহাদ করলেও তা গায়েব করার দায়িত্ব ছিল ফয়সালের ওপর।
এর আগে কলকাতা থেকে ভিডিও কলে ঢাকায় গ্রেপ্তার তিনজনকে জেরা করেন গোয়েন্দারা। আজীমকে ফ্ল্যাটে নেয়ার পর কী ঘটে তখন, তার বর্ণনা দেন তারা। ঢাকায় গ্রেপ্তার শিমুল ভূঁইয়া, সেলিস্তি রহমানসহ তিনজনের দেয়া তথ্যের সঙ্গে জিহাদের দেয়া তথ্যের মিল আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, একজন সংসদ সদস্যকে কলকাতায় হত্যা করা হয়েছে। তদন্তে নেমে এ ঘটনায় বাংলাদেশে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। কলকাতা পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। যে কায়দায় হত্যা করা হয়েছে, এটা মেনে নেয়া কঠিন। ঠান্ডা মাথায় লাশের টুকরো গুম করা হয়েছে।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, যে আলিশান বাড়িতে সংসদ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে, মনে হয় এখনও সেখানে ঘাতকদের অট্টহাসি শুনতে পাচ্ছি। চাকরি জীবনে অনেক খুনের তদন্ত করেছি। কিন্তু এমন ঠান্ডা মাথার খুন দেখিনি। দেশে ফিরে সেলিস্তি রহমানের সঙ্গে কথা বলব। তার ভূমিকার চুলচেরা বিশ্লেষণ করব।