শিরোনাম
চাঁদা না পেয়ে ১০ দোকানে তালা, জামায়াত নেতাসহ গ্রেপ্তার ৪ ‘জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা কীভাবে দেশ ছেড়ে পালালো, সেটিও বিচারের দাবি রাখে’ খাগড়াছড়িতে পুলিশের অভিযানে ৮০০ পিস ইয়াবাসহ আটক ১ রাঙ্গামাটিতে ইউপিডিএফ এর আস্তানায় সেনাবাহিনীর অভিযান একে ৪৭ ও রাইফেলসহ অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার রাঙ্গামাটির কাপ্তাই নৌবাহিনীর ফ্রি চিকিৎসা সেবা চবি শিক্ষার্থী খাগড়াছড়ির সানু,সামাজিক কাজে জাতীয় স্বীকৃতি পেলেন জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ,রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চেয়ে চিঠি প্রাথমিকের ৬৫,৫০২ প্রধান শিক্ষক ১০ম গ্রেড পাচ্ছেন, প্রজ্ঞাপন জারি আগামী ১১ দিন নৈরাজ্যের আশঙ্কা, ঠেকাতে এসপিদের এসবির চিঠি মাইলস্টোনের রাঙ্গামাটির শিক্ষার্থী উক্য ছাইন মারমার শ্মশানে বিমান বাহিনীর শ্রদ্ধা

জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ,রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চেয়ে চিঠি

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫
  • ৪০ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ তৈরি করেছে। জুলাই সনদের খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার খসড়ার এই অংশের বিষয়ে তাদের মতামত প্রদানের জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্রে এটা জানা গেছে। সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেই চূড়ান্ত সনদ তৈরি করা হবে। জুলাই বিপ্লবের প্রেক্ষাপট ও ঘোষণার পাশাপাশি সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যেসব সংস্কারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলো ইতোমধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। সেগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেই জুলাই সনদ চূড়ান্ত হচ্ছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মধ্যস্ততায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পর পর ২০ দিন বৈঠক শেষে এ খসড়া তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। এর আগে একক ও যৌথভাবে বেশ কয়েক দফায় বৈঠক করে ঐকমত্য কমিশন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয় ৬টি সংস্কার কমিশনের প্রধানকে নিয়ে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রিয়াজ কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বৈঠকগুলোতে সভাপতিত্ব করেন। যেসব সাংবিধানিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের সহায়তায় রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পূর্নপ্রবর্তন, একজন ব্যাক্তির সবোর্চ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকা, সংসদের উচ্চকক্ষ সৃষ্টি করে দ্বিক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন,নারী আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের ব্যাপারে দলগুলো একমত হয়েছে বলেছে যে, জাতীয় সংসদে অর্থবিল ও আস্থাভোট ছাড়া সব বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন সংসদ সদস্যরা। তবে বিষয়টিতে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে একমত হয়েছে বিএনপি। দলটি জানিয়েছে, তারা ক্ষমতায় গেলে দুটোর সঙ্গে সংবিধান সংশোধন এবং জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে দলের বিপক্ষে এমপিরা ভোট দিতে পারবেন না, এ বিধান যুক্ত করবে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ব্যাপারে ঐকমত্যের ভিত্তিতে করা সংস্কার প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সরকারি হিসাব কমিটি, অনুমিত হিসাব কমিটি, সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটি ও বিশেষ অধিকার-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি এই চারটি সংসদীয় কমিটির সভাপতি যিনি হবেন বিরোধী দল থেকে নেওয়া হবে। চারটি স্থায়ী কমিটিসহ জনগুরুত্বপূর্ণ কমিটিগুলোতে সংখ্যা আনুপাতিক হারে বিরোধী দল থেকে সভাপতি পদ দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে দলগুলো।

নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের বিষয়ে বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় যথাযথ দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে একটি বিশেষায়িত কমিটি গঠনের মাধ্যমে সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণের কথা বলা হয়। এরপর প্রতি আদমশুমারি অনধিক ১০ বছর পর সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের জন্য সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদের দফা একের ‘ঘ’ শেষে আইনের দ্বারা একটি বিধান যুক্ত করা। এর অর্থ হচ্ছে, সংসদীয় আসন নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা। প্রেসিডেন্টের ক্ষমা সম্পর্কিত বিধানে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের ক্ষমা প্রদর্শনের বিষয়ে একটি সুপারিশ কমিটি বা বোর্ড গঠন করা হবে। এ কমিটি নির্দিষ্ট মানদ- অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমার বিষয়ে পরামর্শ দেবে। বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনে একমত হয়েছে দলগুলো। তবে বিএনপির পক্ষে প্রস্তাব করা হয়েছে বিষয়টির জন্য সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নিতে হবে। নাগরিক সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে অধস্তন আদালত স্থাপনে একমত হয়েছে দলগুলো। একই সঙ্গে বিদ্যমান চৌকি আদালত, দ্বীপাঞ্চল ও ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত উপজেলা আদালতকে স্থায়ী আদালত করে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের পরামর্শ দিয়েছে দলগুলো। প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বলা হয়েছে, আপিল বিভাগ থেকে জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে প্রেসিডেন্ট প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন। কোনো রাজনৈতিক দল বা জোট নির্বাচনে ইশতেহার-পূর্বক যদি জনগণের ম্যান্ডেট লাভ করে, তাহলে তারা আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম দুজন বিচারপতি থেকে একজনকে প্রেসডেন্ট প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করবেন। এমন বিধান সংযোজন করতে পারবে। তবে অসদাচরণ বা অসামর্থ্য অভিযোগের কারণে ৯২ অনুচ্ছেদের অধীন কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান থাকলে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়ে সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, ১৪১-এর ক(১) ধারা মতে, রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এমন জরুরি অবস্থা বিদ্যমান রয়েছে, যা যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের দ্বারা বাংলাদেশ বা এর যেকোনো অংশের নিরাপত্তার বা অর্থনৈতিক জীবন বিপদের সম্মুখীন, তাহলে তিনি অনধিক নব্বই দিনের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ ঘোষণার বৈধতার জন্য ঘোষণার আগেই মন্ত্রিসভার লিখিত অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

মন্ত্রিসভার ওই বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা বা বিরোধীদলীয় উপনেতা উপস্থিত থাকবেন। সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়, নিম্নকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ, উচ্চকক্ষে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, সুনির্দিষ্ট বিষয়ে গণভোট। নিম্নকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ, উচ্চকক্ষে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা, গণভোটের ব্যবস্থা না থাকা এবং উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে পর্যন্ত নিম্নকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ এবং সুনির্দিষ্ট বিষয়ে গণভোট। বিদ্যমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অন্তর্ভুক্তির পর ভবিষ্যতে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে। দ্বিকক্ষের সংসদের বিরোধিতা করছে সিপিবি ও বাসদ। বাকি ২৮টি দল একমত। নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলোর মতভিন্নতা রয়েছে। বিএনপি, এনডিএম, লেবার পার্টি, ১২-দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট বিদ্যমান সংরক্ষিত নারী আসন বণ্টনের মতো উচ্চকক্ষের আসন বণ্টনের পক্ষে মত দিয়েছে। জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন সংখ্যানুপাতিকে উভয় কক্ষের নির্বাচনের দাবি করেছে। এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টি, জেএসডি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামসহ বাকি ২১টি দল সংখ্যানুপাতিকে (পিআর) উচ্চকক্ষের প্রস্তাব করেছে। সংসদে নারী আসন বাড়ানোর পক্ষে অধিকাংশ দলই একমত। বিএনপি ও তার সমমনা চারটি দল বিদ্যমান ব্যবস্থায় আসন বণ্টনের পক্ষে। জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন হলে ১০০ আসনের পক্ষে। এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলন, সিপিবি, বাসদসহ কয়েকটি দল সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে। বিএনপি ও তার সমমনা চারটি দল এবং জোট সংসদ সদস্যদের গোপন ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পক্ষে। জামায়াতসহ অধিকাংশ দল ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পক্ষে। দু-একটি দল সরাসরি ভোট চেয়েছে। বিএনপি, জামায়াতসহ অধিকাংশ দল কমিশনের প্রস্তাবিত পাঁচটি মূলনীতির পাশাপাশি সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে যুক্ত হওয়া আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস যুক্ত করার পক্ষে। এনসিপি কমিশনের প্রস্তাবে একমত। সিপিবি, বাসদসহ বামপন্থি দলগুলো কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে বিদ্যমান মূলনীতি রাখার পক্ষে। বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত সফল ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পুনর্গঠনের এক ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, জোট ও শক্তিসমূহের প্রতিনিধিরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন বিষয়ে সংস্কারের লক্ষ্যে নিম্নলিখিত বিষয়ে ঐকমত্যে উপনীত হয়েছি।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions