ডেস্ক রির্পোট:- ভারতের মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের ব্যবসায়ী রাজা রঘুবংশীকে খুনের ঘটনায় নতুন তথ্য দিলেন তার মা উমা রঘুবংশী। তিনি জানান, রাজা হানিমুনে যাওয়ার সময় ১০ লাখ রুপিরও (১৪ লাখের বেশি টাকা) বেশি মূল্যের সোনার গয়না পরে ছিলেন—যার মধ্যে ছিল একটি হিরের আংটি, একটি চেইন এবং একটি ব্রেসলেট। এসব গয়না পরার জন্য তাঁকে উৎসাহিত করেছিলেন তাঁর সদ্য বিবাহিত স্ত্রী সোনম রঘুবংশী।
আজ সোমবার ভারতীয় এনডিটিভি জানিয়েছে, রাজা ও সোনম গত ১১ মে বিয়ে করেন এবং ২৩ মে মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি ভ্রমণে গিয়ে নিখোঁজ হন। তাঁরা ২২ মে স্থানীয় নংরিয়াতে গিয়ে পৌঁছান এবং সেখানে একটি হোমস্টে থেকে চেক আউট করার পর তাদের আর দেখা যায়নি। পরদিন সোহরারিম এলাকায় তাঁদের ভাড়া করা স্কুটারটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
রাজার উমা রঘুবংশী বলেন, ‘সোনম সব টিকিট বুক করেছিল—যাতায়াত ও থাকার। তবে ফেরার কোনো টিকিট বুক করেনি। সে হয়তো শিলং পর্যন্ত ভ্রমণ বাড়িয়েছিল। কারণ আমার ছেলে সেই এলাকা চিনত না। সোনমের মা বলেছেন, তারা গত বছরও শিলং গিয়েছিলেন।’
উমা রঘুবংশী আরও জানান, ‘যখন আমি রাজাকে এত সোনা পরে যেতে দেখেছিলাম, জিজ্ঞেস করায় সে বলেছিল, সোনম চায় সে এগুলো পরে যাক। এখন যদি সোনম এই খুনে জড়িত থাকে, তবে তাকে ফাঁসি দেওয়া হোক। পুলিশ সকালে আমাদের জানায়নি যে সোনমকে পাওয়া গেছে। আমি চাই, এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত হোক। যদি সে নির্দোষ হয়, তবে কেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠবে? সোনম তো ভালো ব্যবহার করত, আমাকে জড়িয়ে ধরত।’
উমা রঘুবংশীর প্রশ্ন, ‘যদি সে আমার ছেলেকে ভালোবাসত, তবে কীভাবে তাকে মরতে দিল? সে কীভাবে নিরাপদে রইল? যারা এর পেছনে আছে, সবাইকে কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত।’
নিখোঁজের ১০ দিন পর, রাজার মরদেহ পাওয়া যায় রিয়াত আরলিয়াং এলাকার ওয়াইসাওডং পার্কিং লটের নিচে একটি গভীর খাদে। সেখানেই একটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়, যা হত্যায় ব্যবহৃত হয়েছে বলে সন্দেহ।
এদিকে গত শনিবার রাতে উত্তরপ্রদেশের গাজীপুরে একটি ধাবার সামনে অচেতন অবস্থায় সোনমকে পাওয়া যায়। তাঁকে গাজীপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকেই তিনি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন এবং পরে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পুলিশের দাবি, সোনমের একটি পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। রাজু কুশওয়াহার নামের সেই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করে রাজাকে হত্যা করেন সোনম। তদন্তে জানা গেছে, সোনম প্রায়শই রাজুর সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মধ্যপ্রদেশ থেকে আসা তিন-চারজন সন্দেহভাজন খুনি এই ঘটনায় জড়িত।
এখন পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের মূল পরিকল্পনাকারী ও খুনিদের শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।