রাঙ্গামাটি:- বৈরী আবহাওয়াতেও জমে উঠেছে পাহাড়ি জেলা রাঙ্গামাটিতে কোরবানি পশুর হাট। জেলা শহরের একমাত্র কোরবানি পশুর হাট পৌর ট্রাক টার্মিনাল হাটের নিচে কাপ্তাই হ্রদের ঘাটে বোট ভিড়তেই বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যাপারীরা গরুর দরদাম করে নিয়ে যাচ্ছেন। কোরবান উপলক্ষে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ ট্রাক পাহাড়ি গরু বিভিন্ন জেলায় নেওয়া হচ্ছে। ইজারাদারও জানিয়েছেন, বৈরী আবহাওয়াতেও মানুষ গরু কিনতে হাটে ভিড় করেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, হাটে হাজারখানেক গরু বিক্রি হবে।
সুবলং বাজার থেকে গরু নিয়ে আসা খামারী মানিক জয় চাকমা বলেন, এখানে যেসব গরু আনা হয়, তারমধ্যে দেশি পাহাড়ি গরুর চাহিদা বেশি। আমরা এই গরুগুলো পাহাড়ি চড়িয়ে বড় করি। এদেরকে কোনও ধরণের ফরমালিন বা মোটাতাজাকরণ ট্যাবলেট খাওয়ানো হয় না। তাই এই গরুগুলো প্রাকৃতিকভাবে বড় হওয়ায় এদের মাংসগুলো খুব সুস্বাদু হয়।
আরেক খামারী সুকুমার খীসা বলেন, পাহাড়ি গরুগুলোকে শুধু কৃত্রিম ঔষুধ ব্যাতীত অন্য কিছু খাওয়ানো হয় না। এরা পাহাড়ে চড়ে ঘাস খেয়ে বড় হয়, আর আমরা কুড়া খাওয়াই। এই গরুগুলো দেখতে সুন্দর আর প্রাকৃতিকভাবে বড় হওয়ায় ক্রেতারা এগুলো পছন্দ করেন।
গরু ব্যাপারী আজগর আলী বলেন, আমি এখান থেকে গরু কিনে নিয়ে গিয়ে চট্টগ্রামে বিক্রি করি। আমাদের ওদিকে পাহাড়ি গরুর চাহিদা বেশি। কারণ এই গরুগুলোতে কোন চর্বি হয় না এবং ইনজেকশনও দেয়া হয় না।
আরেক ব্যাপারী সালাম মিয়া বলেন, আমি এখান থেকে গরু কিনে নিয়ে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া মরিয়মনগর বিক্রি করি। চর্বি না থাকায় এখানকার গরুগুলোর চাহিদা অনেক বেশি। আমি এখন ১৩টি গরু নিয়ে যাচ্ছি।
পৌর ট্রাক টার্মিনাল হাটে গরু কিনতে আসা হামদান আল নোমান বলেন, এই বছর গরুর দাম খুব বেশিও না আবার কমও না। গতবছরের মতই মনে হচ্ছে। কয়েকটা গরু দেখেছি, দামেদরে হচ্ছে না। বিকেলের দিকে আবার আসবো।
বিক্রেতা সবুর আলী বলেন, আমি মোট ৫টা দেশি গরু এনেছি, ৪টা বিক্রি হয়ে গেছে, আর একটা আছে। এটাও দামাদামি চলছে। রাঙ্গামাটির বাজারে দেশি গরুরই চাহিদা বেশি।
আরেক বিক্রেতা আবু বক্কর বলেন, ক্রেতারা দামাদামি করছেন, কিন্তু কিনছেন না। বাজারের অবস্থা খুব বেশি সুবিধার না। আমি সবগুলো দেশি গরু এনেছি।
রাঙ্গামাটি পশুর হাটের ইজারাদার মো. দিদারুল আলম বলেন, আমাদের হাটে পর্যাপ্ত পরিমাণ গরু রয়েছে। বৃষ্টির কারণে গত কয়েকদিন বিক্রি কম থাকলেও, গতকাল(বুধবার) থেকে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে হাটে হাজার খানেকের মত গরু আছে, বিক্রি হয়েছে প্রায় আড়াইশোর মত।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. তুষার কান্তি চাকমা বলেন, আসন্ন কোরবানিতে রাঙ্গামাটিতে ১৯টি হাটের মাধ্যমে পশু কেনাবেচা হচ্ছে। এবছর জেলায় পশুর চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৮ হাজার ৮৬০টি। এর বিপরীতে বিভিন্ন খামারে ও ব্যক্তি উদ্যোগে কোররানির পশু প্রস্তুত আছে ৬২ হাজার ৮৮৩টি।পাহাড়২১৪