বান্দরবান:- নিন্মচাপের প্রভাবে বান্দরবানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। ঝড়ে গাছ ভেঙে আলীকদমে এবং তার ছিড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল।
প্রশাসন ও স্থানীয়রা জানায়, নিন্মচাপের প্রভাবে কয়েকদিন ধরেই জেলার সাতটি উপজেলায় থেমে থেমে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলার সাতটি উপজেলার চৌত্রিশটি ইউনিয়নে ২২০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ঝড়ের সময়ে আলীকদম উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের মেনরত পাড়ায় বাড়ির উঠানের কাজ করার সময়ে গাছ ভেঙে পড়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের নাম তাইপাও ম্রো। সে স্থানীয় বাসিন্দা রিংয়ং ম্রো এর ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ আল মুমিন।
অপরদিকে বৃষ্টির পর নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিছামারা এলাকায় বাড়ির পাশ্ববর্তী পতিত জমিতে গরু বাঁধতে গিয়ে ঝড়ে ছিড়ে পড়া বিদ্যুতের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম নূর ফয়েজ (৪০)। সে দক্ষিণ বিছামারা এলাকার বাসিন্দার বদিউল আলমের ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাসরুরুল হক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশটি উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল করে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এদিকে টানা ভারী বৃষ্টিতে পাহাড় ও সড়ক ধসে লামা-সূয়ালক সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে পাহাড় ধসের মাটি সড়ক থেকে অপসারণের পর রুমা সড়ক যোগাযোগ চালু হয়েছে।
এদিকে থানচি, রোয়াংছড়ি-রুমা, থানচি-আলীকদম, অভ্যন্তরিন সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে ছোটখাটো পাহাড় ধসে সড়কে কাদা মাটি জমে সড়কগুলো পিচ্ছিল বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। পাহাড়ী ঢল বৃষ্টিতে সাঙ্গু ও মাতামুহুরি নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কায় ঝুকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে স্থানীয়দের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি জানান, শুক্রবারও জেলার সাতটি উপজেলায় প্রচুর বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদেে ঝুকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
প্রশাসন পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ও ফায়ার সার্ভিস ও রেডক্রিসেন্টের লোকজন মাইকিং করে লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে উদ্ভুদ্ধ করছেন। দূর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র এবং কন্টোল রুম খোলা হয়েছে।