লিটন শীল :- মাঘ মাসের শিরশিরে হিমেল হাওয়ায় বয়ে চলা শীতকে উপেক্ষা করে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে জেগে উঠা জলে ভাসা জমিতে বোরো ধানের চারা লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় কৃষকরা। শুষ্ক মৌসুমের আগেই এ বছর হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় ফলে হ্রদের উপর নির্ভরশীল চাষীরা এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে চরগুলোতে আগাম চাষাবাদ শুরু করে দিয়েছে। অনেকেই কাপ্তাই হ্রদে শুষ্ক মৌসুমে জলে ভাসা জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। বিশেষ করে জলে ভাসা জমিতে চাষাবাদ করে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, হ্রদের এই জলে ভাসা জমিগুলো পলি ভরাট থাকার ফলে নাঙ্গল ছাড়াই চাষাবাদ করা সম্ভব হয়। তাছাড়া মাটি নরম থাকার ফলে পরিশ্রম যেমন কম হয় তেমনি চাষাবাদে খরচও অনেকটা সাশ্রয়ী হয়। আবার কেউ কেউ চাষ করছেন বর্গা হিসেবে। জুরাছড়ি উপজেলা সংলগ্ন হ্রদের বেশ কিছু অংশে দেখা গেছে, পরিবারের এক সদস্য জমি থেকে চারা উত্তোলনে ব্যাস্ত এবং অন্যান্য সদস্যরা জমিতে ধানের চারা রোপনে ব্যাস্ত।
অন্যদিকে জমিতে রোপনকৃত বোরো ধানের সবুজ আবরণে ছেয়ে গেছে হ্রদের চারদিক। এ যেন সবুজের সাথে হ্রদ পাহাড়ের অপূর্ব মিতালি। চারদিকে কৃষান-কৃষানিরা বোরো
ধানের চারা লাগানোর সমারোহ। ব্যাস্ত কৃষান-কৃষানিদের সাথে কথা হলে তারা জানান, এ বছর আগাম হ্রদের পানি শুকানোর ফলে জমিতে পাম্প মেশিন ব্যবহার করে বেশ আশা নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেছি নিজ সামর্থ্য অনুসারে। আবহাওয়া ও ভৌগলিক পরিবেশ ভালো থাকলে আশা করি ফসল ভালো হবে। উপজেলার কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় কয়েকশ পরিবারের মাঝে বিভিন্ন জাতের ধানের বীজ সহ অন্যান্য বীজ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কৃষকরা সময়মতো সেই বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে জমিতে রোপন করছে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি। এছাড়া চাষিদের কৃষিকাজে সব ধরনের তথ্য পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা
হচ্ছে। সাধারণত শীতকালীন সময়টাকে রবি মৌসুম সময়কাল হিসেবে ধরা হয়। আশ্বিন থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত অর্থাৎ মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত। নভেম্বর থেকে মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত রবি মৌসুম বলে। এ সময়ে যে শস্য বা ফসলের চাষাবাদ হয় এদের রবি শস্য বা রবি ফসল বলে। অন্যদিকে চৈত্র থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত সময়কে খরিপ মৌসুম বলে।