লিটন শীল:- রাঙ্গামাটির দূর্গম জুরাছড়ি উপজেলার পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষেরা পাহাড়ের ঢালে জুমের ধানের পাশাপাশি হলুদ চাষ করে থাকেন। জুমের মিশ্র ফসল চাষাবাদের মধ্যে হলুদের চাষ অন্যতম। এবার পাহাড়ে হলুদের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষান-কৃষানির মুখে হাসি ফুটেছে। তাই হলুদে ভরপুর থাকছে স্থানীয় হাটবাজারগুলো।
পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া উপযুক্ত থাকায় উৎপাদিত হলুদের ফলন হয়েছে বেশ। মাঠে কৃষান-কৃষানিরা হলুদ ওঠাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখন। ইতোমধ্যে কাঁচাহলুদ চাতালে সিদ্ধ করে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে শুরু করেছেন চাষিরা। এবার হলুদ চাষে সফল হয়েছেন বলে জানান চাষিরা। এ ছাড়া কম খরচে, ব্যাপক ফলন হওয়ায় লাভও বেশি। তাই কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে মানোন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখছে জুরাছড়িতে উৎপাদিত হলুদ। পাহাড়ে উৎপাদিত হলুদের বেশ চাহিদা থাকায় এই হলুদ রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
তবে যোগাযোগব্যবস্থা অনুন্নত ও পরিবহন সংকটের কারণে সঠিক সময়ে হলুদ বাজারজাত করতে পারছেন না ইউনিয়নের পাহাড়ি কৃষকরা। জুরাছড়ির দূর্গম জনতা পাড়ার হলুদচাষি সাবিনা ও ঊষা চাকমা জানান, এখানে প্রতিবছর পাহাড়ে উৎপাদিত হাজার হাজার টন হলুদ যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। চাহিদা বেশি থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা হলুদ নিতে আসছেন পাহাড়ের হাট বাজারগুলোতে।
তাই কৃষকরা বেশি দামের আশায় পাহাড় থেকে সংগৃহীত হলুদ সিদ্ধ করে রৌদে শুকানোর পর বাজারে নিয়ে আসছেন। আর এসব হলুদের রঙ দেখে ঝুকে পড়ছেন বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, হলুদ বহুল ব্যবহৃত একটি মসলাজাতীয় ফসল। তাই চাহিদার সঙ্গে জনপ্রিয়তা বেশি। এ ছাড়া হলুদের অনেক ভেষজ গুণও রয়েছে। প্রায় সব ধরনের মাটিতে হলুদ চাষ করা যায়। তবে দোআঁশ ও বেলে-দোআঁশ মাটি হলুদ চাষের জন্য অতি উত্তম। তাই পাহাড়ে হলুদ চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ডিমলা ও সিন্দুরী নামে হলুদের দুটি উন্নত জাত রয়েছে। ডিমলা জাতটি স্থানীয় জাতের তুলনায় তিন গুণ ফলন বেশি দেয়। আর পাহাড়ে সাধারণত ডিমলা জাতের হলুদ বেশি
হয়ে থাকে।