বান্দরবান:- বান্দরবানে আ.লীগ ২৭ নেতার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুদক। তাদের মধ্যে ১৬ জনের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তের কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক কমিশন।
জানা যায়, বিগত ফ্যাসিবাদী আওয়ামিলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক দেখিয়ে লুটপাট শুরু করে এই নেতারা। অনিয়ম-দুর্নীতির ষোলকলা দেখিয়ে সম্পদের সাম্রাজ্যের গড়ে তোলে। ক্ষমতা অপব্যবহার করে একে একে হয়ে উঠে কোটি টাকার অর্থের অবৈধ সম্পত্তি মালিক।
গেল আগষ্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান এই নেতারা। এরপর আওয়ামিলীগের এই নেতারাদের সম্পদের খোজে দুদকের অনুসন্ধানে নামে। বেড়িয়ে আসতে থাকে এসব নেতাদের থলের বিড়াল। এসব নেতাদের বিরুদ্ধে থানায় ৫টি মামলা ও রয়েছে।
এতে তালিকাভুক্ত আছেন- আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, আওয়ামী লীগের জেলা সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, সেক্রেটারি ও জেলা পরিষদের সদস্য লক্ষী পদ দাস, পৌরশাখার সভাপতি অমল কান্তি দাস, জেলা যুগ্ন সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, পৌরশাখার সেক্রেটারি ও বান্দরবান পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. সামসুল ইসলাম, জেলা বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক উজ্জ্বল কান্তি দাস, লামা উপজেলা সভাপতি ও লামা পৌরসভার সাবেক মেয়র জহিরুল ইসলাম, লামা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও লামা উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাস, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, জেলায় অনেকের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুদক। এদের মধ্যে প্রথম দফায় ৫ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ১১ জনসহ মোট ১৬ জনের প্রাথমিক তথ্য উপাত্ত যাচাই বাছাই করে তদন্তের কাজ শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দুদকের আবেদনে সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং ও তার পরিবারের ৫ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এ তালিকায় রয়েছে আরও কয়েকজন।
নাগরিক পরিষদের নেতা মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, বীর বাহাদুর ও তার আত্মীয় ক্যশৈহ্লা পরিবারের বিরুদ্ধে ৩৭ হাজার কোটি টাকা জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। যা দুদক অনুসন্ধান করছে। দুর্নীতিবাজ এই নেতাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
বান্দরবান জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অংচমং মারমা বলেন, জেলায় অনেকের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের তদন্ত করছেন দুদক। স্থানীয়ভাবে দুদকের অনুসন্ধানে বিভিন্ন ধরনের তথ্য উপাত্ত সরবরাহ করে তদন্তে সহযোগিতা করছে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি। সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর করতে যত বড় রাঘবোয়াল ও ক্ষমতাধর হোক, তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত।