হাসিনার সহযোগীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে বিপুল অর্থ ব্যয় করছে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৩৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যুদ্ধ পরিস্থিতির মতো সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আমাদের যুদ্ধ পরিস্থিতির মতো সতর্ক থাকতে হবে। এ বছরটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে দেয়া উচিত হবে না। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নিরাপত্তা প্রধানদের সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন সরকারপ্রধান। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণি এবং পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, ডিএমপি, কোস্ট গার্ড ও বিশেষ শাখার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সহযোগীরা বিশৃঙ্খলা উসকে দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করছে। সবার উচিত এসব বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা। তিনি বলেন, যেকোনো পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবিলা করার জন্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে সর্বাধুনিক যোগাযোগ সরঞ্জামের সর্বাধিক ব্যবহার করতে হবে। আমাদের একটি কমান্ড সেন্টার বা একটি কমান্ড সদরদপ্তর স্থাপন করতে হবে, যেটি পুলিশ ও সব নিরাপত্তা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করবে। ড. ইউনূস বলেন, নতুন কমান্ড স্ট্রাকচার দেশের সব সংস্থা, থানা ও সব আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মধ্যে দক্ষতার সঙ্গে নিবিড়ভাবে যোগাযোগ স্থাপন করবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করার যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে নিরাপত্তা প্রধানদের সতর্ক থাকার নির্দেশও দেন তিনি। এছাড়া প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষা এবং ধর্মীয় বা জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর যেকোনো হামলা প্রতিহত করতে নিরাপত্তা প্রধানদের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমরা যদি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে না পারি, তবে বিশ্বব্যাপী আমাদের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে আমাদের খুব স্বচ্ছ হতে হবে। এদিকে পবিত্র রমজান মাসে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধেও কঠোর হতে বলেছেন সরকারপ্রধান। প্রধান উপদেষ্টা অনলাইনে মামলা দায়েরের ব্যবস্থা চালু করতে সারা দেশে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। বর্তমানে এফআইআর দায়ের করতে নিকটস্থ থানায় যেতে হয়, যা কষ্টকর এবং অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়। তিনি বলেন, পুলিশের একটি ডেডিকেটেড কল নম্বর সেট করা উচিত (যেমন-৯৯৯), যাতে অভিযোগকারীরা দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে একটি প্রথম তথ্য প্রতিবেদন দাখিল করতে পারে। আইজিপি বাহারুল আলমকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অনলাইন এফআইআর ফাইলিংয়ের জন্য একটি নতুন ফোন নম্বর চালু করার নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এতে মামলা করার সময় ঝামেলার সম্মুখীন হওয়া কমাবে। এছাড়া পুলিশ প্রধানকে অনলাইনে মামলা দায়েরের বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য একটি ডেডিকেটেড কল সেন্টার স্থাপনের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। বলেন, যারা অনলাইনে মামলা করতে কষ্ট করে, তারা সহজেই যেন কল সেন্টার থেকে সাহায্য নিতে পারে। বৈঠকে পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেন, জুলাই-আগস্টে হাসিনার নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংসতা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলাগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য পুলিশ ১০টি দল গঠন করেছে। প্রধান উপদেষ্টা পুলিশকে এই মামলাগুলোর দ্রুত বিচার এবং এ মামলাগুলোতে কোনো নিরপরাধ মানুষকে যেন হয়রানি করা না হয় তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। পুলিশ প্রধান বাহারুল আলম বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করার জন্য ইন্টারপোলের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই তাদের সাড়া পাবো। বৈঠকে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেন, পুলিশ নিরাপত্তা জোরদার করার পর রাজধানীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা কমেছে। আমাদের এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions