খাগড়াছড়ি:- সারাদেশের মতো খাগড়াছড়িতে গত ২০ জানুয়ারি থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে পরিপত্রের মারপ্যাচে খাগড়াছড়িতে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রমে বিপুল সংখ্যক ভোটার হওয়ার যোগ্য বাঙালি সম্প্রদায়ের লোকজন বাদ পড়ছে। মূলত: এর ফলে সন্তু লারমার দীর্ঘদিনের দাবীই বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনের কাছে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ ওয়াদুদ ভূইয়ার একপত্রে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। পত্রে ওয়াদুদ ভূইয়া অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিপত্র নং ১৭.০০.০০০০.০২৬.৩২.০১২.২৩.৩০৮, তারিখঃ ২১ আগস্ট, ২০২৪ ইং-এ অনুসরণ করতে গিয়ে খাগড়াছড়িতে বাঙালি জনগোষ্ঠী ভোটার নিবন্ধন ও হালনাগাদ-এ অন্তভূক্ত হতে পানরছে না।
পার্বত্য জেলায় উপজাতীয় এবং বাঙালিদের (মুসলিম ও হিন্দু-বড়ুয়া) মধ্যে কিছুটা মানসিক দ্বন্দ্ব রয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ভোটার নিবন্ধন ও হালনাগাদ কার্যক্রম যারা করছেন, তাঁদের অধিকাংশই উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর কর্মচারীদের দায়িত্বে রয়েছেন। পরিপত্রের অনুহাজত দেখিয়ে বাঙালিদের ভোটার তালিকা করছে না। খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের সুত্রোক্ত স্মারকে বর্ণিত শর্তের দোহাই দিয়ে বাবা-মায়ের অস্থায়ী এবং স্থায়ী বাসিন্দার সনদ চাওয়া হচ্ছে। বিগত প্রায় ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে হামলা-মামলার কারণে খাগড়াছড়ি জেলার অধিকাংশ ভোটার ঘরবাড়ী ছাড়া অবস্থায় ছিল।
অপরদিকে পার্বত্য জেলায় স্থায়ী বাসিন্দার সনদ জেলা প্রশাসক বা সার্কেল চিফ হতে নেয়ার পক্রয়া খুবই দীর্ঘ এবং এতে একমাসের অধিক লেগে যায়। বাঙালি জনগোষ্ঠীকে উপজাতীয় সার্কেল চিফ জায়গা-সম্পত্তির মালিক না হলে স্থায়ী বাসিন্দার সনদ দিতে চান না। সে হিসেবে নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্রুত ভোটার নিবন্ধন বা হালনাগাদ কার্যক্রম করা দূরুহ হয়ে পড়ছে। কমিশনের পরিপত্রের নির্দেশনার আলোকে বিশেষ ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম সহজীকরনের লক্ষ্যে ভোটার নিবন্ধনকে ৩টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। তম্মধ্যে, “বি” ক্যাটাগরির ৩ ও ৪ নং ক্রমিক অনুযায়ী বাবা-মায়ের অস্থায়ী ও স্থায়ী বাসিন্দার সনদ চাওয়ায় পার্বত্য অঞ্চলের ভোটার নিবন্ধনকে সহজীকরণের বদলে জটিল করা হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে স্থায়ী বাসিন্দা সনদ শুধুমাত্র তারাই পায় যাদের রেজিষ্ট্রিকৃত ভূমি আছে। আর স্থায়ী বাসিন্দা সনদ পাওয়ার প্রক্রিয়াটি সময় সাপেক্ষ ব্যপার। পার্বত্য অঞ্চলে ৭৫% লোক শিক্ষার হার হতে বঞ্চিত। সেক্ষেত্রে পরিপত্রের উক্ত ৩ ও ৪ নং ক্রমিকের জন্য এখানে অসংখ্য ভোটার নিবন্ধন করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি নির্বাচন কমিশনের সুত্রোক্ত স্মারকে বর্ণিত শর্তের “বি” ক্যাটাগরির ৩ ও ৪ নং ক্রমিক বাতিল করে পার্বত্য অঞ্চলের ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে সহজীকরণের জন্য দাবী জানান।