রাঙ্গামাটি:-হাজারো নির্যাতনের মধ্যে জামায়াত পিরামিডের মতো গড়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও চট্টগ্রাম- লোহাগাড়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী।
শনিবার (৩০নভেম্বর) সকালে দীর্ঘ ১৭ বছর পর রাঙ্গামাটি শহরের আল আমিন মাদ্রাসার মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মী সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সাবেক সংসদ সদস্য বলেন, পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খান, ৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিলো। ইসলামকে মূলৎপাঠন করতে শেখ মুজিব বেশি ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু জামায়াতে ইসলাম ক্ষমতা চায় না। আল্লাহর দ্বীনকে কায়েম করতে চাই। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে হামলা, মামলা, আয়না ঘর দিয়ে জামায়াতকে নির্যাতন করা হয়েছে। শেখ মুজিব আমাদের দাবায়ে রাখতে পারে নাই। তার বেটিও আমাদের দাবায়ে রাখতে পারিনি।
জামায়াতের এ কেন্দ্রীয় এ নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আগামীতে জামায়াতকে ক্ষমতায় বসাতে অপেক্ষা করছে। শেখ হাসিনা বলেছিলো জামায়াত রাজনৈতিক দল। জামায়াত রাজনৈতিক দল নয়। জামায়াত আল্লাহর হুকুম মেনে নবীর দায়িত্ব পালন করা দল। জামায়াতের বিরুদ্ধে রাজাকার, আলবদর, জঙ্গী বলে প্রচার করেছিলো ফ্যাসিস্ট সরকার। চলতি বছরের ৩১ জুলাই জামায়াত- শিবিরকে ১৯৯৩ সালের সন্ত্রাস দমন আইনে নিষিদ্ধ করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার। নিষিদ্ধ করার পাঁচদিনের মধ্যে হাসিনাকে হিন্দুস্তানে পালাতে হলো। জামায়াত- শিবিরের উপর আল্লাহর রহমত আছে। কারাবন্দি অবস্থায় দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে পৃথিবীর অনেক দেশ নিয়ে যেতে চেয়েছিলো। তিনি যায়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রেষ্ট সন্তান নবাব সিরাজুল্লাহ, গোলাম আজম, কামরুজ্জামান, মতিউর রহমান নেজামী। সংসদে বসে শেখের বেটি অহংকার করে বলতেন তিনি পালান না। কিন্তু পালালেন। তিনি শেখের বেটি নয়; নরেন্দ্র মোদির বেটি। তার কাছে চলে গেছেন।
জামায়াত নেতা আরও বলেন, পার্বত্য এলাকায় নির্ভয়ে ২৯ বছর পর বক্তব্য রাখতে পারছি। সন্তু লারমাকে আমিসহ আমরা ৯২ সালে ভারতের ত্রিপুরা থেকে নিয়ে এসেছিলাম খাগড়াছড়িতে। শান্তিচুক্তি তো জামায়াত-জোট সরকারের সাথে হওয়ার কথা। কিন্তু ভারতের ষড়যন্ত্রের কারণে হয়নি। হাসিনা পরবর্তীতে শান্তিচুক্তি নামে যে চুক্তি করেছিলো তা বৈষম্য চুক্তি। এ চুক্তি পাহাড়ে শান্তি আনতে পারে না। এ চুক্তির কারণে পাহাড়িরা সমতল-পাহাড় সবখানে সকল সুযোগ নিতে পারলেও বাঙালীরা পাহাড়ে কোন সুযোগ পায় না।
তিনি জামায়াত ইসলামকে কোন সাম্প্রদায়িক দল নয় বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, পাহাড়ি-বাঙালী কোন পার্থক্য করতে চাই না। আমরা সকলে বাংলাদেশী। এ অঞ্চলের সকল জাতি মিলেমিশে সকলে কাঁধে কাঁধ রেখে বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলবো। এইজন্য হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান, পাহাড়ি জনগোষ্টি সকলকে জামায়াতর ছায়াতলে আসার আহবান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল, মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান।
এর আগে সংগঠনটির নেতৃত্বে রাঙ্গামাটি পৌরসভা থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
জামায়াতের রাঙ্গামাটি পৌর কমিটির সভাপতি আব্দুল সালামের সভাপতিত্বে এসময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য মুহাম্মদ জাফর সাদেক, জেলা কমিটির আমির অধ্যাপক আব্দুল আলীম, নায়েবী আমির মাওলানা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, সেক্রেটারী জেনারেল মনছুরুল হকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা বক্তব্য রাখেন।