পিলখানা হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ যাচ্ছে ট্রাইব্যুনালে, হাসিনাসহ অভিযুক্ত যারা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৪৮ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- রাজধানীর পিলখানায় বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) শীর্ষ কর্মকর্তাদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ‘সঠিক বিচার’ চাইতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যাবেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

এ হত্যাকাণ্ডের ‘প্রকৃত’ ঘটনা উন্মোচনসহ ‘পর্দার আড়ালের ষড়যন্ত্রকারীদের’ বিচার নিশ্চিত করতে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিলের কথা জানিয়েছেন পিলখানায় শহীদ কর্নেল কুদরত ইলাহীর সন্তান অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মহাখালী রাওয়া ক্লাব হলে ‘পিলখানায় ৫৭ অফিসারসহ ৭৪ জনের হত্যার বিচার এবং শহীদ সেনা দিবস’-এর দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রায় ১৬ বছর ধরে চলা বিডিআর কর্মকর্তাদের হত্যার মামলাটি আপিল ডিভিশনে থাকলেও সর্বশেষ পরিস্থিতি শহীদ পরিবারের সদস্যদের জানা নেই বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান।

তিনি বলেন, ‘মামলা চলাকালীন এই দীর্ঘ সময়ে আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি। আমরা যারা ভুক্তভোগী তারাই মামলার পরিস্থিতি জানি না, দেশের মানুষ কিভাবে জানবে?’

তিনি আরো বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পর্দার আড়ালের ষড়যন্ত্রকারী, যারা গত সরকারের সময় ক্ষমতায় ছিল—আমাদের প্ল্যান অব অ্যাকশন হচ্ছে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করব।’

অ্যাডভোকেট সাকিব বলেন, ‘শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করব। আন্তর্জাতিক আইনের ডকট্রিন অব কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকেও বিচারের মুখোমুখি আনা সম্ভব।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসেবে তিনিও দায় এড়াতে পারেন না। তার বিরুদ্ধেও আমরা অভিযোগ করব। এ ছাড়া তৎকালীন সেনা কর্মকর্তা, বিশেষ করে ডিজিএফআই কর্মকর্তা যারা ছিলেন, তখনকার সময় কিছু সাংবাদিক যারা ভুল ন্যারেটিভ সৃষ্টি করেছেন তাদের বিরুদ্ধেও আমরা অভিযোগ আনব।’

তৎকালীন বিডিআর প্রধান মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকীন আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদ সরকার আওয়ামী লীগ চাইবে না গুম-খুনের বিচার হোক।
যেহেতু এখন বাধা নেই, তাই বিডিআর সদস্য হত্যার তদন্ত দ্রুত শেষ করে জড়িতদের আইনের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হোক।’

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের দিনটিকে শহীদ দিবস ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে রাকীন বলেন, ‘জড়িতদের সাজা দিলে দেশের সব মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়াবে। যারা হত্যাকাণ্ডের বিচার চাওয়ায় চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে তাদের সুনির্দিষ্ট একটি ব্যবস্থা করতে হবে।’

শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে দাবিগুলো তুলে ধরেন শহীদ কর্নেল মজিবুল হকের স্ত্রী নাহরীন ফেরদৌসী। তিনি বলেন, ‘গ্যাজেটের মাধ্যমে ২৫ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক।
২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের আগেই ২৫ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা করে এদিন দেশজুড়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হোক।’

পিলখানা হত্যার ঘটনা সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে নতুনভাবে তদন্ত শুরুর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত ইনকোয়ারি কমিশনের অগ্রগতি আমাদের জানানো হোক। আগের সব তদন্তের প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করার হোক। অফিসিয়াল গ্যাজেটে নিহত ৫৭ বীর সেনানীকে শহীদের মর্যাদা দেওয়া ও পিলখানা ট্র্যাজেডিকে উপযুক্তভাবে স্কুলের পাঠ্যবইয়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা এবং দ্রুত বিচার শেষ করে আটক নির্দোষ সবাইকে দ্রুত ন্যায় বিচার দেওয়া, ঘটনার দ্রুত বিচার শেষ করে আটক নির্দোষ সবাইকে দ্রুত ন্যায় বিচার দেওয়ার দাবি জানাই।’

সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল লুৎফুর রহমান খানের মেয়ে ফাবলিহা বুশরা, বক্তব্য দেন শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী রবি রহমানের স্ত্রী ডা. ফৌজিয়া রশিদ ও তার ভাই কাজী ওলি রহমান, শহীদ কর্নেল এরশাদের ভাই ডা. মামুন, শহীদ কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজর নুরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল আলম হান্নান, শহীদ কর্নেল কুদরত এলাহির স্ত্রী লবী রহমান প্রমুখ।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions