আগামী জাতীয় নির্বাচন মাথায় রেখে মাঠে ছুটছেন নেতারা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৩২ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- আগামী জাতীয় নির্বাচন মাথায় রেখে মাঠে ছুটছেন নেতারা। নিজেদের নির্বাচনি এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ রাজপথে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীরা। নিচ্ছেন নির্বাচনি প্রস্তুতি। প্রায় প্রতিটি এলাকায় প্রত্যেক দলের একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী দলীয় কর্মসূচি, গণসংযোগ, নানান আচার-অনুষ্ঠান কিংবা জনকল্যাণের নামে চষে বেড়াচ্ছেন নিজ এলাকা। ধর্মীয় ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। উঠান বৈঠক করছেন। দলীয় নেতা-কর্মীসহ এলাকার গণমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন। এমনকি গত ১৫ বছর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে কখনোই মাঠে ছিলেন না- তাঁরাও এখন ঘন ঘন এলাকায় গিয়ে গণসংযোগ করছেন। এরই মধ্যে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই দল গোছাতে চায় বিএনপি। জেলা-উপজেলা কমিটি পুনর্গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। দেশের বেশির ভাগ নির্বাচনি এলাকা থেকেই এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছেন আগামী সংসদ নির্বাচনে দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। নিচ্ছেন নির্বাচনি প্রস্তুতি। প্রতিটি এলাকায় গড়ে তিন থেকে চারজন করে মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতা জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন নিজ নিজ এলাকায়। বিভিন্ন কৌশলে ও নানা রকমের জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে তাঁরা মূলত নির্বাচনি প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে জনসংযোগ, জনস্বার্থে কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর স্পষ্ট নির্দেশনা, যে করেই হোক এলাকার জনগণের ভালোবাসা ও মন জয় করতে হবে। প্রতিটি এলাকায় বিগত আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত নেতা-কর্মী, সমর্থকসহ সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পরিষ্কার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ ও ‘জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন’সহ বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক সংগঠনের মাধ্যমে নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন রকমের সহযোগিতামূলক কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছেন।

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, নির্বাচনমুখী গণতান্ত্রিক দল হিসেবে নির্বাচনকেন্দ্রিক একটি প্রস্তুতি সব সময়ই দলের থাকে এবং সে অনুযায়ীই এখন দলীয় নেতারা কাজ করছেন। এটাই স্বাভাবিক। নির্বাচনের প্রস্তুতি সব সময়ই আমাদের ছিল এবং এখনো আছে। তাছাড়া বিগত ১৫ বছরের বহু ত্যাগ-তিতিক্ষার আন্দোলনের মাধ্যমেই বিএনপির নির্বাচনি প্রস্তুতি আগেই চূড়ান্ত হয়ে আছে।

বিএনপির নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যৌক্তিক সময়ে নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে তাগিদ দিলেও বিএনপির প্রধান টার্গেট আগামীতে একটি অর্থবহ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যেই জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার চান- দলের নীতিনির্ধারকরা। তাঁদের মতে, দেশের জনগণের কাছে মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের। আর মানুষকে সেবা প্রদানের দায়িত্ব হলো নির্বাচিত সরকারের। নিরপেক্ষ নির্বাচনে জনগণের ভোটে যে-ই সরকার গঠন করুক না কেন- মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করাটাই বিএনপির টার্গেট। এ লক্ষ্যে সারা দেশে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা রকমের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে বিএনপি। দলীয় নেতা-কর্মীদের যে করেই হোক সাধারণ মানুষের মন জয় ও ভালোবাসা অর্জনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দলের হাইকমান্ড থেকে। নেওয়া হচ্ছে গণসংযোগ, সভা-সমাবেশসহ নানা রকমের ইতিবাচক সাংগঠনিক কর্মসূচির উদ্যোগ। ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে- দলের ভবিষ্যৎ করণীয়-প্রতিশ্রুতিসহ ৩১ দফা সংস্কারের বিষয়গুলো। জানা গেছে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশব্যাপী নেতা-কর্মীদের প্রতি জনকল্যাণমুখী কর্মসূচি গ্রহণ ও পালনের নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে ইতোমধ্যে দল ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের প্রায় সহস্রাধিক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কারণ দর্শানো নোটিস দেওয়া হয়েছে তারও বেশি। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী, সারা দেশে নানা রকমের জনসংযোগের পাশাপাশি সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে যোগদান এবং স্ব স্ব এলাকায় দলের প্রতিটি ইউনিটকে পুনর্গঠন করে সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করছেন নেতারা। এর মূল উদ্দেশ্য হলো- আগামী নির্বাচনের জন্য দল ও নিজেদের অবস্থান সুসংহত করা। এর পাশাপাশি গত ১৫ বছরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থাকা দলগুলোর নেতাদের এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের তাঁদের এলাকায় গণসংযোগ তথা অঘোষিত নির্বাচনি তৎপরতার কাজে সহায়তার জন্য কেন্দ্র থেকে ইতোমধ্যে তৃণমূল বিএনপির নেতাদের চিঠি দিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরিষ্কার বলেছেন- প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার শেষে অন্তর্বর্তী সরকারকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার ও তার প্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া জনগণের মালিকানা তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া কিংবা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কোনোটিই সম্ভব নয়।

সম্ভাব্য সংসদ নির্বাচন সামনে রেখেই দেশজুড়ে বিএনপির প্রস্তুতি ও নেতা-কর্মীদের কর্মকান্ডে পরোক্ষভাবে নির্বাচনি প্রস্তুতিই প্রাধান্য পাচ্ছে। এসব জনমুখী কর্মসূচি পালন ও কার্যক্রমের মধ্য দিয়েই মূলত বেরিয়ে আসবে আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রকৃত বা চূড়ান্ত প্রার্থী কারা হবেন। বিএনপি পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত চলতি বছরের ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এর আগে ২০১৮ সালে দলটি অংশ নিয়েছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিতর্কিত নেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষে। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। দলের নীতিনির্ধারকদের মতে, বিএনপির সার্বিক নির্বাচনি প্রস্তুতিতে এবার মূলত প্রাধান্য পাবে ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলীয় প্রার্থী, বিশেষ করে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল-যুবদল থেকে উঠে আসা অপেক্ষাকৃত তরুণ ও ত্যাগী নেতারা। এ ছাড়া দলের সাবেক এমপিদের মধ্যে যারা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তারাও নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যে দলের বিবেচনায় থাকার সবুজসংকেত পেয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ২০২৩ সাল থেকেই বলে আসছেন, জনগণের ভোটে নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে অর্থাৎ জাতীয় সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করা হবে। যেসব দল আন্তরিকভাবে আন্দোলনের মাঠে এবং বিএনপির সঙ্গে ছিল- তারাও সেই সরকারে থাকবে। ফলে নির্বাচনি প্রস্তুতিতে এ বিষয়টি নিঃসন্দেহে বিবেচনায় রয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় ভোটের প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সেসব সমমনা দলের নেতারাও বিএনপির বিবেচনায় রয়েছেন।

২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকে দলের নেতারা মামলা ও হামলাসহ নানা কারণে এলাকায় অনিয়মিত ছিলেন কিংবা অনেকে থাকতে পারেননি। এ কারণে গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিএনপির অনুকূলে আসার পর থেকেই দেশজুড়ে কমিটি পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছে দলটির হাইকমান্ড। এরই মধ্যে অনেক জেলা ও মহানগরীর কমিটি বাতিল ও পুনর্গঠনও করা হয়েছে। দল ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় প্রতিটি ইউনিটকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। সাংগঠনিক কর্মকান্ড জোরদার করা হচ্ছে। এসব কর্মকান্ডের মাধ্যমেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বিএনপি। বিএনপির তিন সহযোগী সংগঠন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল ইতোমধ্যেই সারা দেশে যৌথভাবে প্রতিটি জেলায় যৌথ কর্মিসভা করছে, যার মূল উদ্দেশ্য ভবিষ্যৎ নির্বাচনকে সামনে রেখে তারেক রহমানের নির্দেশনা প্রতিটি জেলায় পৌঁছে দেওয়া। তিনটি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা জেলা পর্যায় সফর করে এ সমাবেশগুলো সমন্বয় করছেন।

বিএনপির সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ কেন্দ্রীয় নেতা, ২০১৮ সালের নির্বাচনের দলীয় প্রার্থী এবং নতুন করে আগ্রহী প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ শুরু করেছেন। এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীম আহমেদ বলেন, বাগেরহাট-৩ (মোংলা ও রামপাল উপজেলা) এলাকায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুসারে ব্যাপকভিত্তিক জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি শুরু করেছি। জনকল্যাণমুখী এসব সাংগঠনিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়েই ইনশাআল্লাহ আমাদের নির্বাচনি প্রস্তুতির কাজও সম্পন্ন হবে। মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবির বলেন, এলাকায় জনসচেতনতামূলক ব্যাপক গণসংযোগের পাশাপাশি জনকল্যাণমুখী কর্মসূচি শুরু করেছি। সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিনই এলাকায় কোনো না কোনো কর্মসূচি থাকে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা যেভাবে নিজ নিজ এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছি- আশা করি আমরা দলকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি এক দিন এলাকাসহ সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সফল হব ইনশাআল্লাহ।

ভোটের মাঠে ছোট-বড় সব দল : আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক মাঠের নেতৃত্বে চলে এসেছে বিএনপি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যাপারে তারা শতভাগ আশাবাদী। বিএনপি ছাড়াও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ (আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকা দলগুলো ছাড়া) সব দলই এখন নির্বাচনমুখী। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা না হলেও নির্বাচনি মাঠ গোছাচ্ছে দলগুলো।

দলগুলোর নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে নির্বাচন টার্গেট করে সারা দেশে সংগঠন গোছাচ্ছেন তারা। পতিত সরকারের দমন, পীড়ন ও প্রশাসনিক বাধার কারণে এতদিন সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে পারেননি। সক্ষমতা থাকলেও জনগণের কাছে পরিচিত হতে পারেননি। গত ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর নির্বিঘ্নে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে এখন রাজনীতির মাঠে বড় দল হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন।

এরই মধ্যে দেশের ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে জোট গড়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী ৩০০ আসন ঘিরেই সাংগঠনিক তৎপরতা চালাচ্ছে। তবে বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে মতবিনিময় ও বৈঠক হয়েছে। জোট গঠনের ব্যাপারে সবাই আগ্রহ দেখাচ্ছে। কোনো কিছুই এখনই চূড়ান্ত হয়নি।

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, বিগত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই মূলত আমাদের দল আরও শক্তিশালী ও সুসংহত হয়েছে। এখন আমরা রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে জনসংযোগসহ নানা কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। এর মধ্য দিয়েই প্রাক-নির্বাচনি প্রস্তুতির কাজও সম্পন্ন হচ্ছে দলীয় নেতাদের। তবে নির্বাচনের মনোনয়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পরই বলা যাবে কে প্রার্থী হচ্ছেন।

ইসলামী আন্দোলনের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের নেতৃত্বে কওমিভিত্তিক ছয়টি দলকে একত্রিত করে জোট বা সমঝোতা করার চেষ্টা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। নীতিগতভাবে ঐকমত্য পোষণ করছে কওমি দলগুলো।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশে একটি বড় পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের অনুভূতিগুলোও অদলবদল হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি মানুষের কাছে যাওয়ার। অনেকে আমাদের দলে যোগ দিচ্ছেন। বলা যায়- বাধাহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছি। প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে।

বিগত আন্দোলনে সক্রিয় নিবন্ধিত দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। দলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশে একটি মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে এসেছে। এ পরিবেশকে সবাই কাজে লাগাতে চাইবে। আমাদের দলও তার ব্যতিক্রম নয়। বিভিন্ন জেলায় রাজনৈতিক বহুমাত্রিক কর্মসূচির পাশাপাশি নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজও চলছে। আমার ধারণা, ছোট দলগুলো জনগণের আস্থায় যেতে পারবে। জনগণের মন জয় করতে পারবে। ক্রমান্বয়ে ছোট দলগুলো বড় হয়ে উঠতে পারবে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, জন-আকাক্সক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে কর্মসূচি সাজাচ্ছি। সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করছি। নির্বাচন সামনে রেখে জেএসডি বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপির চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ পরিচিত মুখ। তিনি বলেন, অবশ্যই আমাদের জন্য বড় সুযোগ এসেছে। আমরা সেটি কাজেও লাগাচ্ছি। ঢাকার ১২৫টি ওয়ার্ডে বিজেপির অঙ্গসংগঠনের কমিটি গঠন হয়েছে। আমাদের নেতা-কর্মীরা ওপেন কার্যক্রম চালাচ্ছেন। আগে যা করতে পারেননি। এখন নির্দ্বিধায় কাজ করা যাচ্ছে। ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের নেতিবাচক কর্মকান্ডের কারণে মানুষ রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়েছিল। এখন পুনরায় রাজনীতিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমাদের দলকে নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করছে। গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, সব জেলায় আমাদের কার্যক্রম রয়েছে। বিভিন্ন জেলায় আমাদের সাংগঠনিক সফর চলছে। সমাবেশগুলোতে বড় জমায়েত হচ্ছে। তিনি বলেন, আপাতত ৩০০ আসনেই সংগঠন গোছাচ্ছি। সম্প্রতি নিবন্ধন পাওয়া দল আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আমাদের দলে জাতীয় নির্বাচনবিষয়ক একটা উপকমিটি আছে যারা সার্চ কমিটির মতো কাজ করে যাচ্ছেন। কে বা কারা কোন এলাকাতে প্রার্থী হওয়ার যোগ্য, সেটি বোঝার চেষ্টা করছেন। দলের সিনিয়র নেতারা টিম গঠন করে বিভিন্ন জেলা ও মহানগরী সফর করছেন, কমিটি পুনর্গঠন করছেন, যোগ্য ও সক্রিয় নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব দিচ্ছেন কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য। ডিসেম্বরে হবে দলের প্রথম কাউন্সিল অধিবেশন। এ ছাড়াও মুসলিম লীগ, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), ১২-দলীয় জোট, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, খেলাফত মজলিস, ববি হাজ্জাজের এনডিএম ও ফরায়েজী আন্দোলন প্রভৃতি দল মাঠ গোছাচ্ছে।বাংলাদেশ প্রতিদিন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions