জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সুযোগ রাখবেন না ট্রাম্প, শঙ্কায় ১০ লাখ ভারতীয়

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৪২ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম অগ্রাধিকার হলো, দেশটিতে জন্মসূত্রে অভিবাসীদের সন্তানেরা যে নাগরিকত্ব পান সেটি রদ করা। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর রানিং মেট জেডি ভ্যান্সের যৌথ ওয়েবসাইটে এই বিষয়ক নির্বাহী আদেশের একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার দিনেই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নির্বাহী আদেশ দিতে পারেন।

ট্রাম্প-ভ্যান্সের এই পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, এই নির্বাহী আদেশ যদি বাস্তবায়িত হয় তবে কেবল যারা অবৈধ অভিবাসী তাদের সন্তানই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ হারাবে না। পাশাপাশি, যারা নাগরিক হওয়ার প্রাথমিক ধাপ ‘গ্রিন কার্ড’ পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তারাও প্রভাবিত হবেন। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ফেডারেল এজেন্সিগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হবে যে, অনাগত সন্তানদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিক হওয়ার জন্য পিতা-মাতার অন্তত একজনকে মার্কিন নাগরিক বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

নির্বাহী আদেশের পর এটি আইন হিসেবে পাস হলে, তা ভারতীয় প্রবাসীদের জন্য এক বিশাল ধাক্কা হয়ে দেখা দেবে। গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চের বিশ্লেষণ অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪৮ লাখ ভারতীয় আমেরিকান আছে। যাদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ বা ১৬ লাখ যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছে। নতুন আইন হলে, এই অভিবাসীদের অনেকেই আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে আর স্থায়ী বাসিন্দা বা নাগরিক হতে পারবেন না।

ট্রাম্প-ভ্যান্সের নির্বাহী আদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, এটি মার্কিন সংবিধানের ১৪ তম সংশোধনীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে অভিবাসন আইনজীবীরা মনে করেন, এটি ঠিক নয়। তাঁরা বলছেন, নির্বাহী আদেশ এই আইন পাস হলে তারা বিষয়টি আদালতে চ্যালেঞ্জ করবেন।

ইমিগ্রেশন অ্যাটর্নি রাজীব এস খান্না বলেন, ‘ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের জন্য কোনও স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব না দেওয়ার পরামর্শ দেয় ৷ এটি প্রায় নিশ্চিতভাবে মার্কিন সংবিধানের ১৪ তম সংশোধনীর লঙ্ঘন। ট্রাম্পের ভুল ব্যাখ্যার মোকাবিলায় সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় পাওয়া যাবে বলে আমরা আশা করি।’

একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে,২০২৩ সালের মার্চে নাগাদ আমেরিকার অভিবাসন প্রক্রিয়ার কর্মসংস্থানভিত্তিক ‘গ্রিন কার্ডের’ অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা ভারতীয় সংখ্যা এক মিলিয়ন ছাড়িয়েছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক কেটো ইনস্টিটিউটের অভিবাসন বিষয়ক পরিচালক ডেভিড বিয়ার এই তথ্য দিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে, মৃত্যু ও বয়স উত্তীর্ণ হওয়ার কারণে কিছু ভারতীয় এ তালিকা থেকে বাদ পড়বেন। নতুন আইন পাস হলে, এসব কারণ বিবেচনায় নিলে বলা যায়—এসব ভারতীয়দের গ্রিন কার্ডের জন্য অপেক্ষার সময় হবে ৫৪ বছর। আর যদি এসব কারণ বিবেচনা না করা হয়, তবে অপেক্ষা হতে পারে ১৩৪ বছর। এই দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষায় ৪ লাখ ১৪ হাজার ভারতীয় মারা যাবেন এবং ১ লাখের বেশি ভারতীয় শিশু ২১ বছর পূর্ণ হওয়ার পর নির্ভরশীল ভিসা বা ‘ডিপেনডেন্ট ভিসার’ বৈধতা হারাবে এবং গ্রিন কার্ডের তালিকা থেকে বাদ পড়বে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions