ডেস্ক রির্পোট:- বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা এলাকায় চাঁদাবাজি এবং বাড়িঘর ও মাছের ঘের দখল চলছে। বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য কাজী খায়রুজ্জামান শিপনের (শিপন কাজী) বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলে চাঁদাবাজি ও দখলবাজি বন্ধে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন ওই এলাকার ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
আজ শনিবার ওই মানববন্ধনে মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলার সহস্রাধিক ভুক্তভোগী অংশ নেন। মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হলে সুযোগসন্ধানী শিপন কাজী লন্ডনে চলে যান।
এর আগে তিনি এলাকায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চলতেন। তার কারণেই দীর্ঘ ১৭ বছরে বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে আওয়ামী লীগের দুঃশাসন বিরোধী কোনো আন্দোলন গড়ে ওঠেনি।
এ সময় বক্তারা বলেন, গত ৫ আগস্টের পর শিপন কাজী লন্ডন থেকে দেশে ফিরে আওয়ামী দুঃশাসনের দোসর, অর্থ জোগানদানতা ও সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে তাদের দলে যোগদান করিয়ে নব্য বিএনপি সাজিয়ে নিজস্ব গ্রুপ গড়ে তুলেছেন। এরপর তাদের দিয়ে মৎস্য ঘের দখল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন।
আওয়ামী দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেলেও কথিত নব্য বিএনপির দাপটে প্রকৃত বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলার শিকার হয়ে বাড়িঘর ছাড়া হতে বাধ্য হচ্ছেন।
ভুক্তভোগী ইউসুফ শেখের নাতনি হাসান শেখ বলেন, ‘আমার নানার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা নিয়েছে, বাড়িঘর দখল করে নিয়েছে। আমরা সবাই এখন বাড়িছাড়া। স্বৈরাচার হাসিনার চেয়েও খারাপ শিপন কাজী ও তার বাহিনীর লোকজন।
আমি নানার টাকা ফেরত চাই।’
আরেক ভুক্তভোগী তানিয়া ইসলাম বলেন, ‘কাজী শিপনের চাঁদাবাজি ও দখলের হাত থেকে আমরা সবাই রেহাই পেতে চাই। স্থানীয় বিএনপি নেতা ও প্রশাসনের কাছে গিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। আমার আত্মীয়-স্বজন অনেকের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে, আমরা এলাকা ছাড়া। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমার পরিবারের নিরাপত্তা ও দখলকৃত ঘের ফেরত চাই।
’
হাফেজ মাওলানা মুফতি মতিউর রহমান বলেন, ‘শিপন কাজী ও তার লোকজন এলাকায় চাঁদাবাজি ও লুটপাট করে কোটি কোটি টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছে। ৫ আগস্টের আগে শিপন কাজী আওয়ামী লীগের বি-টিম হিসেবে কাজ করেছেন। তার নেতৃত্বে দুই শতাধিক মাছের ঘের দখল হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে আমরা এর প্রতিকার চাই।’
আওয়ামী লীগ দ্বারা নির্যাতিত যুবদল নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির সাইনবোর্ডকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে দল সাজাচ্ছে শিপন কাজী। আমার বাড়িঘর ভাঙচুর ও সাড়ে চার লাখ টাকা লুট করেছে আওয়ামী লীগ নেতা দাউদ মৃধা। তাকেও বিএনপিতে যোগদান করিয়েছেন। স্থানীয় সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে এলাকায় লুটপাট ও অনিয়মের কোনো নিউজ প্রকাশ করতে দিচ্ছেন না তারা।
স্থানীয় বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট ফারহানা জাহান নিপা বলেন, ‘এলাকার আওয়ামী এজেন্ট ও দালাল শিপন কাজীর বিরুদ্ধে এলাকায় ঝাড়ু মিছিল হয়েছে। সে অর্থের বিনিময়ে থানা ও উপজেলায় বিএনপির পকেট কমিটি করেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান বাদশাকে দলে যোগদান করিয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করেছে।’