খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৬ বছরে ১৯ হত্যাকাণ্ড: বিচারের অপেক্ষায় মানুষ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৬৭ দেখা হয়েছে

খাগড়াছড়ি:- খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৬ বছরের শাসনামলে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হওয়া নির্মম নির্যাতনের চিত্র আজও ভেঙে ভেঙে আসে। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সাবেক দুই সংসদ সদস্য যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার শাসনামলে ১৯ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে এবং দেড় শতাধিক আহত হয়েছেন।

এই সময়কালে খাগড়াছড়ির জনপদ যেন হয়ে উঠেছিল রক্তাক্ত পলিন, যেখানে বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বিচারে আক্রান্ত হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের বিচার তো দূরের কথা, মামলাও করতে পারেননি তারা। মামলার ক্ষেত্রে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের মনগড়া আসামীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে এবং বিভিন্ন সময়ে ভীতি দেখানো হয়।

গত ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর, নজরুল ইসলাম নামের এক বিএনপি নেতাকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরও তার পরিবার বিচার পায়নি। নজরুলের ছেলে রাসেল বলেন, “আমার পিতাকে হত্যার পর লাশ গুম করার চেষ্টা করা হয়েছিল। হত্যাকারীরা এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”

এদিকে, ২০১০ সালে সিরাজুল ইসলাম নামের একজন শ্রমিক দলের সভাপতি খুন হন। তার স্ত্রী খাদিজা বেগম জানান, “স্বামীর হত্যাকারীদের নাম মৃত্যুর আগে বললেও মামলা করতে পারেনি।” সিরাজুলের ছেলে আবু ইউছুফ রানা অভিযোগ করেন, “পুলিশ সাদা কাগজে সাক্ষর নিয়ে মামলা করেছে।”

এই ঘটনাগুলির মাঝে খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক সাহাজ উদ্দিন সাজুর হত্যার ঘটনা উল্লেখযোগ্য। পুলিশ তাকে আটক করে পিটিয়ে হত্যা করে বলে অভিযোগ। সাজুর পিতা মো: আব্দুল্লাহ বলেন, “বিচার তো দূরের কথা, মামলা পর্যন্ত করতে পারিনি।”

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এক বা দুইটির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের খেসারত দিতে হয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীদের।

আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৬ বছরে ৫০ হাজারেরও বেশি বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে, যার ফলে তারা গৃহহীন ও নিগৃহীত হয়ে পড়েছেন।

এ প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানান, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ঘটে যাওয়া সকল রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। আদালতের নির্দেশনা পেলে পুলিশ সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

বিএনপির নেতারা দাবি করেছেন, নিহত ও আহতদের পুনর্বাসন করা হবে এবং তারা বিচার পেতে আশাবাদী। খাগড়াছড়ির শান্তির জন্য তারা সকলের সহাবস্থান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions