ডেস্ক রির্পোট:- রাষ্ট্র সংস্কারে আরও চারটি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে সরকার। এসব কমিশন হলো- স্বাস্থ্য কমিশন, গণমাধ্যম কমিশন, নারী বিষয়ক কমিশন ও শ্রমিক অধিকার কমিশন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা রিজওয়ান হাসান। তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
চার কমিশনের দায়িত্ব পেলেন যারা: রিজওয়ানা হাসান জানান, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন ড. একে আজাদ খান। গণমাধ্যম সংষ্কার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে কামাল আহমেদকে। নারী বিষয়ক কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন শিরিন হক। আর শ্রমিক অধিকার সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব পেয়েছেন সৈয়দ সুলতানউদ্দিন আহমেদ।
পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যে কমিশন চারটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে। এ ছাড়া শিক্ষা কমিশন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে সাংবিধানিক সংস্কারে ৬ কমিশেন গঠনের কথা জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছিলেন, দেশে সাংবিধানিক সংস্কার করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্ব ও স্বার্থ নিশ্চিত এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তাকে প্রতিফলিত করা এ সংস্কারের লক্ষ্য। এসব বিষয়ে সংস্কার করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে আমরা প্রাথমিকভাবে ৬টি কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এসব কমিশনের কাজ পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককে এই কমিশনগুলো পরিচালনা করার দায়িত্ব দিয়েছি। এরপর আরও বিভিন্ন বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়া আমরা অব্যাহত রাখব।
ওই ভাষণে নির্বাচন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান- এই ৬ বিষয়ে সংস্কার কমিশন গঠনের কথা জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে ড. শাহদীন মালিক দায়িত্ব পালন করবেন। পরবর্তীতে ড. শাহদীন মালিকের পরিবর্তে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে অধ্যাপক আলী রীয়াজকে। ৩ ও ৭ অক্টোবর তাদের নিয়োগ দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়েছে- রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত ছয় কমিশনের প্রধানরা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সমান মর্যাদা, বেতন-ভাতা ও সুবিধা পাবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন স্বাক্ষরিত গেজেটে বলা হয়, ৩ অক্টোবর গঠিত নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন এবং ৬ অক্টোবর গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিশনের কমিশন প্রধানরা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতির মর্যাদা, বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।
এতে আরও বলা হয়, এসব কমিশনের সদস্যদের যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত না, তারা কমিশনের প্রত্যেক সভায় অংশগ্রহণের জন্য ১০ হাজার টাকা সম্মানী এবং যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত তারা কমিশনের প্রত্যেক সভায় অংশগ্রহণের জন্য পাঁচ হাজার টাকা সম্মানী পাবেন।