শিরোনাম
পাহাড়ে কুড়িয়ে পাওয়া ডিম ফুটিয়ে গড়েছে বনমোরগের খামার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন,প্রথম খসড়া তালিকায় নিহত ৮৫৮ জন, আহত সাড়ে ১১ হাজার আনুপাতিক হারে জাতীয় নির্বাচনের চিন্তা, বিএনপি কোন পথে সিভিল সার্ভিসে বিশৃঙ্খলার শঙ্কা, কলমবিরতি-মানববন্ধন-সমাবেশের ঘোষণা সংসদ নির্বাচন ইভিএমে হবে না, যন্ত্রগুলো কী করবে ইসি মঞ্চ প্রস্তুত আরেকটি এক-এগারোর? আসছে হাসিনা আমলের চেয়ে বড় বাজেট,আকার হতে পারে ৮ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা ফের আন্দোলনে নামছে বিএনপি,দ্রুত সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি, চলছে নির্বাচনি প্রস্তুতি প্রশাসনিক সংস্কারে ডিসিদের আপত্তি! বিশেষ সম্মাননা পাচ্ছেন বেবী নাজনীন, জয়া আহসান ও ফাহিম আহমেদ

ইউনিটপ্রতি সৌরবিদ্যুতের ক্রয়মূল্য,ভারত-পাকিস্তানে সাড়ে ৩ থেকে ৪ টাকা, বাংলাদেশে প্রায় ১১ টাকা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৯১ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ভারতে দুই হাজার মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয় গত বছরের মার্চে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সোলার এনার্জি করপোরেশন অব ইন্ডিয়া (এসইসিআই) এ দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্রে অংশ নিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ পায় ছয় কোম্পানি। বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম অনুমোদন হয় ৩ সেন্টে, যা ভারতীয় মুদ্রায় ২ রুপি ৬০ পয়সা। ডলারের বিনিময় হার ১১৯ টাকা ৪৮ পয়সা হিসাবে ওই বিদ্যুতের ট্যারিফ বাংলাদেশী মুদ্রায় দাঁড়ায় ৩ টাকা ৫৮ পয়সা। এত কম দামে বিদ্যুতের ক্রয়চুক্তি দেশটিতে বেশ আলোচনাও তুলেছে। ‘‌বিল্ড-ওউন-অপারেট’ মডেলের ভিত্তিতে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২৫ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কিনবে এসইসিআই। দেশটিতে সাম্প্রতিককালে অনুমোদন দেয়া অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও ট্যারিফ নির্ধারণ হয়েছে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ৩ থেকে সাড়ে ৪ সেন্টের মধ্যে।

বেসরকারি খাতে সৌরবিদ্যুতের ট্যারিফ কমিয়ে আনতে চলতি বছরেই প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। এজন্য বেঞ্চমার্ক হিসেবে সৌরবিদ্যুতে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা প্রস্তাব করা হয় ৫ সেন্ট। মূলত আমদানিনির্ভর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর চাপ কমাতে সৌরবিদ্যুতের ট্যারিফসংক্রান্ত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। পাকিস্তানে সম্প্রতি অনুমোদিত বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ট্যারিফ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৫০০ থেকে আড়াই হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে ক্রয়চুক্তি হয়েছে সর্বোচ্চ ৭ সেন্ট থেকে সর্বনিম্ন সাড়ে ৩ সেন্টের কিছু বেশিতে। ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশী টাকার হিসাবে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের সর্বনিম্ন দাম পড়েছে ৩ টাকা ৮২ পয়সা। প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজার সৃষ্টি, প্রণোদনা ও আমদানিনির্ভর জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসতে সৌরবিদ্যুতের খরচ সামনের দিনগুলোয় আরো কমাতে চায় পাকিস্তান।

সৌরশক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখন শীর্ষস্থানে রয়েছে চীন। চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৬ লাখ ১০ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ সক্ষমতা তৈরি করেছে দেশটি, যা বিশ্বে মোট সৌর সক্ষমতার ৪২ শতাংশ। এ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত সোলার প্যানেল, ইনভার্টার, ব্যাটারি স্টোরেজ উৎপাদনের সক্ষমতায় যেকোনো দেশের তুলনায় এগিয়ে চীন। এমনকি সৌর প্রযুক্তির বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রকেও পেছনে ফেলেছে দেশটি। সৌরবিদ্যুতে প্রযুক্তি ও এ খাতের কাঁচামাল উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনায় প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ পড়ছে গড়ে সাড়ে ৪ সেন্ট, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৫ টাকা ৩৮ পয়সার মতো। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সৌরবিদ্যুতে সক্ষমতা, প্রযুক্তি, জনবল ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বিবেচনায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর চেয়ে বহু গুণ এগিয়ে চীন।

বাংলাদেশে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয়ে চুক্তি হচ্ছে ৯ থেকে ১০ সেন্টে। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর সর্বনিম্ন দাম পড়ছে ১০ টাকা ৭৫ পয়সা। তবে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি ভিন্ন হওয়ায় দামে কিছুটা তারতম্য দেখা যায়, যা কিলোওয়াটপ্রতি সর্বনিম্ন ১০ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১৩ টাকাও পড়ছে।

চলতি বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে বেসরকারি খাতে ৫০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। এটি নির্মাণ হবে নেত্রকোনা জেলার চল্লিশা ইউনিয়নের বিল সুলঙ্গীতে। প্যারাগন বাংলাদেশ, রাইজেন এনার্জি ইউকে ও সেন্টার ফর রিনিউয়েবল এনার্জি যৌথভাবে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করবে। ২০ বছর মেয়াদে কেন্দ্রটি থেকে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ কিনতে ব্যয় হবে ৯ সেন্ট, যা বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশী মুদ্রায় ১০ টাকা ৭৫ পয়সা।

চলতি বছরের ১৪ মার্চ খুলনা জেলার রূপসা উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট (এসি) সক্ষমতার, মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট (এসি) সক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয়। কেন্দ্র তিনটি থেকে ২০ বছর মেয়াদে ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০ টাকা ৯২ পয়সা হিসেবে বিদ্যুৎ কেনা হবে।

সৌরবিদ্যুতে গত বছর অনুমোদিত কেন্দ্রগুলো থেকে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ কিনতে বিপিডিবির গড়ে সর্বনিম্ন ১১ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৪ টাকা পর্যন্ত খরচ পড়বে। জ্বালানি খরচ না থাকা সত্ত্বেও এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দাম নির্ধারণ হয়েছে মূলত বেসরকারি কোম্পানি ও বিপিডিবির দরকষাকষির ভিত্তিতে। বিদ্যুৎ, জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ আইন) আওতায় নির্মিত এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের খরচ বেশি পড়ার অভিযোগ করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

তাদের ভাষ্যমতে, প্রতিবেশী দেশগুলো যেখানে সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমিয়ে এনেছে, সেখানে বাংলাদেশ এখনো তাদের কয়েক গুণ বেশি দামে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে বিদ্যুতের ক্রয়চুক্তি করছে। এ খরচ কমিয়ে আনা উচিত। এক্ষেত্রে সরকারি প্রণোদনা, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে প্রতিযোগিতামূলক বাজার, সঞ্চালন অবকাঠামো নির্মাণ ও জমি সংস্থানে সহায়তা দিতে হবে। সেটি করা গেলে সৌরবিদ্যুতের দাম বর্তমানের চেয়ে অর্ধেকে নামিয়ে আনা যাবে।

ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিসিস (আইইইএফএ) প্রধান জ্বালানি বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, ‘গ্রিড স্কেলে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের ক্ষেত্রে সরকার খরচের একটা বেঞ্চমার্ক তৈরি করতে পারে, যার মাধ্যমে বিপিডিবি আলোচনার মাধ্যমে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের ট্যারিফ কমিয়ে আনতে পারে। এছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে ক্রয়চুক্তিতে প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি করতে হবে। এটি করা গেলে ট্যারিফ কমানোর ক্ষেত্রে বড় সুযোগ তৈরি হবে। নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের ক্ষেত্রে জমির সংস্থান সরকার নিজে থেকে করার ব্যবস্থা করতে পারে। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় না করে জেলাভিত্তিক নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা গেলে সেক্ষেত্রে ট্যারিফে বড় সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।’

বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুতের দাম প্রতিবেশী দেশের চেয়ে বেশি হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তাদের যুক্তি অনুযায়ী, সৌরবিদ্যুতের দাম কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয় রয়েছে। এগুলোর অন্যতম হলো সূর্যের তাপের ভিন্নতা, সৌরবিদ্যুতে শুল্ক-করছাড়, জমির দাম ও সংস্থান এবং বিদ্যুতের সঞ্চালন অবকাঠামো সংকট। প্রতিবেশী দেশ ভারত এসব সুবিধায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। যে কারণে সেখানে সৌরবিদ্যুতের দাম কমে এসেছে। বাংলাদেশে এ সুযোগ সৃষ্টি করা গেলে সৌরবিদ্যুতের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনা সম্ভব।

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ (সিইআর) পরিচালক মো. শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমাতে হলে ভূমির সংস্থান সরকারকে করতে হবে। পাশাপাশি সৌরবিদ্যুতে ট্রান্সমিশন অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। দেশে যেসব সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে সেখান থেকে ট্রান্সমিশন লাইনের দূরত্ব বেশি হচ্ছে। এ অবকাঠামো গড়ে তুলতে গেলে তা বিদ্যুতের উৎপাদন খরচের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া সৌরবিদ্যুতের যন্ত্রাংশ আমদানিতে আগে শুল্ক ও করছাড় ছিল, বর্তমানে সৌরবিদ্যুতের যন্ত্রাংশ আমদানিতে এসব খরচ যুক্ত হয়েছে। নবায়নযোগ্য খাতে উৎসাহ দিতে হলে খরচের জায়গাগুলো কমাতে হবে। মৌলিক কিছু খরচ কমানো গেলে একদিকে যেমন এ খাতে বেশি বিনিয়োগ বাড়বে, অন্যদিকে উৎপাদন খরচও ৭ সেন্টের মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’

নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ প্রাপ্তির অংশ হিসেবে সৌরবিদ্যুতের একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয় ২০২১ সালে। ইউএনডিপির অর্থায়নে তৈরি করা এ রোডম্যাপের একটি খসড়া বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়। সেখানে বলা হয়, দেশের কোন অঞ্চলগুলোয় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা গেলে খরচ কম হবে, পাশাপাশি কোন এলাকাগুলো সৌরবিদ্যুতের সবচেয়ে সম্ভাবনাপূর্ণ। যদিও এ পরিকল্পনা এখনো অনুমোদন দেয়া হয়নি।

দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত নিয়ে গবেষণা, উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ ও উৎসাহসহ নানা ধরনের কাজ করছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা)। সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয়ের বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে স্রেডার সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘দেশে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনে মৌলিক প্রতিবন্ধকতা হলো প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান না হওয়া। যেখানে জমি পাওয়া যায় সেখানে কাগজপত্রের নানা ধরনের জটিলতা থাকে। আবার যেসব পরিত্যক্ত এলাকা রয়েছে, সেখানে সঞ্চালন অবকাঠামো নেই। ভারতে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের বড় একটি অংশ নির্মাণ হয়েছে রাজস্থানে বা মরু এলাকায়। আর ভারত নিজেই সৌর যন্ত্রাংশের বড় একটি অংশ উৎপাদন করে থাকে, যেখানে বাংলাদেশ পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। ভারতে এ খাতে বিনিয়োগের জন্য সরকারি সহায়তাও অনেক বেশি। বাংলাদেশ সেদিকে এগোলেও এখনো পথটা মসৃণ নয়। এসব বিষয় একীভূত করলে বাংলাদেশে উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে। তবে বিগত এক দশকে এ খরচ অনেক কমিয়ে আনা গেছে।’বণিক বার্তা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions