শিরোনাম
প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হারাচ্ছেন বড় গ্রুপের প্রভাবশালীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঘুষের সিন্ডিকেট,বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার সঙ্গে দেনদরবারেও জড়িত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ-ভারত বৈঠকের প্রস্তুতি, হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা বিচারের পর আ.লীগকে নির্বাচনে স্বাগত জানানো হবে-টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস আগামী নির্বাচন নিয়ে দিল্লি ভয়ংকর পরিকল্পনা করছে: জাগপা নেতা রহমত নতুন সিইসি নাসির উদ্দীনের নাম ছিল বিএনপির তালিকায় নাসির উদ্দীনকে সিইসি করে নির্বাচন কমিশন গঠন ‘জনগণ যাতে ক্ষমতার মালিক হতে পারেন তেমন দেশ গড়তে চাই’ রাঙ্গামাটির কাপ্তাই অটল ছাপ্পান্ন আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন

কারাগারে বন্দি কমেছে সাড়ে ২২ হাজার

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪
  • ৪৮০ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কারামুক্ত হয়েছেন রাজনৈতিক কারণে আটক বিপুলসংখ্যক মানুষ। এর প্রভাবে গত তিন সপ্তাহে দেশে কারাবন্দির সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২২ হাজার কমে গেছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া প্রায় ২ হাজার বন্দিও আছেন।

কারা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩১ জুলাই সারা দেশে ৬৮টি কারাগারে মোট বন্দি ছিলেন ৭৯ হাজার ৪৮ জন। এরপর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কারণে আটক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়। এর মধ্যে জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে গণগ্রেপ্তারের শিকার ছাত্র-জনতার পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে আটক বিএনপি-জামায়াত ও অন্যান্য দলের নেতাকর্মীরাও রয়েছেন। বিপুলসংখ্যক মানুষ কারামুক্ত হওয়ায় গত মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দেশের সব কারাগারে বন্দির সংখ্যা ৫৬ হাজার ৪২৭ জনে দাঁড়ায়। সেই হিসাবে তিন সপ্তাহে কারামুক্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৬২১ জন।

কারা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আন্দোলন চলাকালে ছাত্রদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক যেসব মামলা হয়েছে, তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রত্যাহার এবং বন্দিদের জামিনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ ছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের জামিন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সরকারের এই উদ্যোগগুলোর কারণে জামিনের আদেশ পাওয়া সাপেক্ষে বন্দিরা কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন।

অন্যদিকে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে ও পরে বেশ কয়েকটি কারাগারে বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। অন্তত ৮টি কারাগার ভেঙে বন্দিরা পালিয়ে যান। কারা অধিদপ্তর থেকে সঠিক হিসাব পাওয়া না গেলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই নরসিংদী জেলা কারাগার ভেঙে ৮২৫ বন্দি পালিয়ে যান। অস্ত্র ও গুলি লুট হয়। ওই সময় কারাগারের ভেতরে অগ্নিসংযোগও করা হয়।

এরপর সরকার পতনের পর গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা জেলা কারাগার ভেঙে ৫৮০ জন বন্দি বেরিয়ে যান। একইদিন শেরপুর জেলা কারাগারে বিক্ষুব্ধ লোকজন ভাঙচুর করে আগুন দেয়। সুযোগ পেয়ে কারাগারে থাকা ৫১৮ বন্দির সবাই বের হয়ে যান। সেই সময় কারাগারের অস্ত্র ও মূল্যবান সামগ্রী লুটের ঘটনা ঘটে।

সরকার পতনের পরদিন ৬ আগস্ট গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে পালিয়ে যান ২০৯ জন বন্দি। এর মধ্যে জঙ্গিবাদে অভিযুক্তরাও ছিল। ৭ আগস্ট কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যান ৫৫ জন। এ ছাড়া ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, জামালপুর জেলা কারাগার থেকে বন্দিরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসব ঘটনায় কারারক্ষীদের গুলিতে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে দুজন, কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে ছয়জন এবং জামালপুরে সাতজন নিহত হন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের ফের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে সবশেষ পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে কতজন গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে, সেই তথ্য কারা অধিদপ্তর থেকে পাওয়া যায়নি। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে প্রায় ৬০০ জনকে ফের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।

কারা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশের কারাগারগুলোতে সর্বমোট ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৮৬৬ জন। গত তিন সপ্তাহে ২২ হাজারের বেশি মুক্তি পাওয়ার পরও ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ১৪ হাজারের বেশি বন্দি রয়েছেন কারাগারগুলোতে। ৬৮টি কারাগারে ৫৬ হাজার ৪২৭ জন বন্দির মধ্যে ৫৪ হাজার ১৪৬ জন পুরুষ এবং ২ হাজার ২৮১ জন নারী রয়েছেন।

জানা গেছে, ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে বন্দি রয়েছেন ৫ হাজার ৮৬৬ জন। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এ বন্দি রয়েছেন ১ হাজার ৪০ জন। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ বন্দির সংখ্যা ২ হাজার ৫৬০। কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে বন্দি রয়েছেন ২ হাজার ৪৪৫ জন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ৩ হাজার ৭৬৫ জন এবং রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ২ হাজার ৭২৭ জন বন্দি আছেন।

কারা সূত্রে আরও জানা যায়, বন্দির মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির সংখ্যা ১৭ হাজার ৭২০ জন। আর বিচারাধীন হাজতি রয়েছেন ৩৮ হাজার ৭০৭ জন। কয়েদির মধ্যে পুরুষ ১৬ হাজার ৯৪৩ এবং নারী ৭৭৭ জন।

কারা অধিদপ্তরের ডিআইজি (প্রিজন) মনির হোসেন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কারাগারগুলো অশান্ত হয়ে পড়েছিল। বর্তমানে কারা কর্তৃপক্ষ শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। বন্দিদের সঙ্গেও মানবিক আচরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়, সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।’

কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ধরার জন্য কারা কর্তৃপক্ষ আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও এই কর্মকর্তা জানান।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন কারাগারে বন্দি এবং অস্ত্র গোলাবারুদ ছিনতাই, কারা এলাকায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় দেশের কারাগারগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন দাবিতে সোচ্চার হন। তাদের দাবিগুলো যাচাই-বাছাইয়ের জন্য গত ২১ আগস্ট রাজশাহী বিভাগীয় কারা মহাপরিদর্শক মো. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে উত্থাপিত দাবিগুলো পর্যালোচনা করে বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়ে সুপারিশসহ দুই কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।কালবেলা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions