শিরোনাম
রাঙ্গামাটিতে আগামী সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোখতার আহমেদ রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এপ্রোচ রোড ও ভূমি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন আমাকে হত্যার জন্য পরিবারই খুনি ভাড়া করেছিল: পপি প্রাথমিকে সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে বাতিল সরকারি জায়গা দখল করে আ.লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুলিশের সাবেক আইজিপি শহিদুলের ব্যাংক হিসাবে ৫৬০ কোটি টাকার লেনদেন সন্তানসহ সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈসিং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা বান্দরবানে পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় আহত দুই সংবাদমাধ্যমকে সঙ্গে নিয়েই আয়নাঘর পরিদর্শনে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা অভিনেত্রী শাওন আটক

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪
  • ১২৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- সারাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারি এবং শিক্ষার্থীদের চলমান দুই আন্দোলনের দাবি-দাওয়াকে যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত উল্লেখ করে তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে এসে প্রযুক্তি ও জ্ঞানভিত্তিক বৈশ্বিক ব্যবস্থায় টিকে থাকতে হলে মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। তাই সাধারণ ছাত্র সমাজের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবিসমূহের সাথে আমরা একমত। আমরা আশা করি, সময় থাকতে সরকার ছাত্র সমাজের ন্যায়সঙ্গত যৌক্তিক দাবিসমূহ মেনে নেবে, আমরা এই সমস্যার সমাধানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারিদের যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে তা অবশ্যই যৌক্তিক ও সমর্থন যোগ্য। আমরা তাদের এই যৌক্তিক আন্দোলন সমর্থন করছি এবং অবিলম্বে এই পেনশন স্কীম প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
গতকাল শনিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই দুই আন্দোলন সম্পর্কে দলের অবস্থান জানাতে গিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষকদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, শিক্ষকদের ব্যাপারটা সেনসেটিভ। কারণ তাদের তো অন্য কোনো সোর্স অব ইনকাম নেই। অন্যান্যদের চুরি-চামারি, দুর্নীতির অভিযোগ থাকতে পারে, শিক্ষকদের তো সেটা নেই। তাই তাদেরকে শুধু বাধ্য হয়ে এই বেতনের ওপরে নির্ভর করতে হয়। এজন্য তারা বেশি বিক্ষুব্ধ এবং তারা মনে করে যে এটা তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের মতো ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা যদি কখনো সরকারের যাই, এটা (প্রত্যয় স্কীম) যদি তখন পর্যন্ত টিকে থাকে এটা আমরা বাতিল করব।

কোটা ৫৬% নয়, বড়জোর ১৫% হতে পারে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কোটা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কিছুটা থাকতে পারে, প্রতিবন্ধীর জন্য আর ক্ষুদ্র-নৃজাতির জন্য, এরকম পিছিয়ে পড়া যারা আছে তাদের জন্য কোটা থাকতে পারে। তবে সেটা ৫৬ শতাংশ নয়, এটা বড়জোর ৫-১৫ শতাংশ হতে পারে। এর বেশি হলে মেধার বিষয়টা থাকে না।

তিনি বলেন, এমনিতেই মুক্তিযোদ্ধারা নেই এখন, প্রায় অনেকের বয়স হয়ে গেছে, আমাদের বয়সের জায়গায় চলে গেছেন। তাদের সন্তানের পাবেন, সেটায় আপত্তি নেই আমাদের। তবে সেটার নাম করে যে কাউকে মুক্তিযোদ্ধ্রা সার্টিফিকেট দিয়ে, হাজার হাজার সার্টিফিকেট দিয়ে তাদেরকে চাকরি ব্যবস্থা করে দিচ্ছে টাকার বিনিময়, সেটা তো আমরা কখনোই সমর্থন করতে পারি না।

সংবাদ সম্মেলনে এই দুই আন্দোলনের বিষয়ে দলের অবস্থানও স্পষ্ট করেন বিএনপি মহাসচিব যা সম্প্রতি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত কয়েকদিন যাবত শিক্ষার্থীরা চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাস্তায় আন্দোলন করছে। এই আন্দোলন আস্তে আস্তে বেগবান হচ্ছে এবং সম্পৃক্ততা বাড়ছে। যে দাবি নিয়ে ছাত্ররা আন্দোলন করছে তারা অতীতেও আন্দোলন করেছিলো। তখন কোটা অনেক কমিয়ে নিয়ে এসছিল। এখন আবার আমরা দেখতে পারছি যে, হাইকোর্ট থেকে একটা রায় দিয়েছে যে রায়ে আগের সেই অর্থাৎ ৫৬ শতাংশ কোটা বিভিন্ন বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, আরও কয়েকটা- এগুলো নিয়ে ৫৬% কোটা দিয়ে সরকারি চাকরি পাবেন। এখানে সমস্যাগুলো হচ্ছে যে, ৫৬% যদি কোটাতেই চলে যায় তাহলে কিন্তু মেধার বিকাশ একেবারেই সম্ভব হবে না। এজন্য সরকারি চাকরি কিংবা অন্যান্য ক্ষেত্রে একটা মেধার শূণ্যতাই দেখা দিচ্ছে, প্রকৃত পক্ষে সেই মেধার শূণ্যতাই চলছে।

কোটা নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে দলটির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, গত কয়েকদিন যাবত ছাত্ররা কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাস্তায় আন্দোলন করছে। এটা ছাত্রদের আন্দোলন আমাদের এখানে সম্পৃক্ততা হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে দেশের একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে কোটার বিষয়ে বিএনপির মতামত হচ্ছে- মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রীয় আচার অনুষ্ঠান, জাতীয় দিবসসমূহ এমনকি তাদের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মানের সাথে দাফন করা হয়। এগুলো তাদের প্রাপ্য। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতাসহ নানা সুবিধা আছে। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধের অর্থ্যাৎ স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান অঙ্গীকার ছিলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করা, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ বিনির্মাণ করা। সাংবিধানিকভাবে ও আইনের দৃষ্টিতে সকল নাগরিক সমান। কিন্তু সংবিধানের ২৮(৪) ও ২৯(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নারী ও নাগরিকদের মধ্যে পিছিয়ে পড়া অংশ এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও শারীরিক প্রতিবন্ধীর বাইরে ব্যতিক্রম হিসেবে কিছু সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ৫৬% কোটা ব্যবস্থা বহাল রেখে প্রযুক্তি ও মেধানির্ভর বিশ্বব্যবস্থার জাতি হিসেবে টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনী কোনো শ্রেনীতেই কোটা পদ্ধতি মেধা বিকাশের সহায়ক হতে পারে না এবং মেধা ভিত্তিক বৈষম্যহীন জাতি ও সমাজ বিনির্মানের মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারের সাথে সাংঘর্ষিক।

সরকার আদালতকে সরকার ব্যবহার করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান অবৈধ, অনির্বাচিত, কর্তৃত্ববাদী সরকার বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে অর্থ্যাৎ আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে জনগণের ন্যায্য দাবিসমূহ দমিয়ে রাখার ঘৃণ্য পুরোনো কৌশলেই ছাত্র সমাজের ন্যায্য আন্দোলনকে দমানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আইন ও বিচার বিভাগের দোহাই দিয়ে ছাত্র সমাজের যৌক্তিক দাবি সমূহকে দমানোর সকল অপচেষ্টা ব্যর্থ বলে আমরা বিশ্বাস করি। কারণ ইতিহাসের শিক্ষা হচ্ছে, জনগণের নায়সঙ্গত আন্দোলন কখনো দমানো যায় না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদান, পরীক্ষা গ্রহণসহ সকল প্রকার কর্মকাণ্ড বন্ধ রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রকৃত পক্ষে এটি এই দেউলিয়া সরকারের দুর্নীতির আরেকটি পথ খুলে দেওয়া। যেহেতু দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চরম সংকটাপন্ন সেহেতু অন্যান্য খাতসহ শিক্ষকদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে এই পেনশনের টাকা তুলে নিতে চাচ্ছে।

তিনি বলেন, সরকারের আর্থিক দুরাবস্থার মধ্যে সার্বজনীন পেনশন স্কিম নামে নতুন স্কিম চালু করা সরকারের দুর্বল আর্থিক খাত মেরামত করার একটা কৌশল। এটি এই অবৈধ ও আর্থিক দেউলিয়া সরকারের আরেকটি নতুন লুটপাটের স্কিম, যার নাম পেনশন স্কিম, প্রত্যয় স্কিম। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারিদের সাথে অর্থ্যাৎ অংশীজনদের সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই স্বেচ্ছাচারি কায়দায় বাধ্যতামূলকভাবে এটা চালু করতে চাচ্ছে অবৈধ সরকার। এই প্রেক্ষিতে শিক্ষক সমাজের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তা অবশ্যই যৌক্তিক ও সমর্থনযোগ্য।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের অব্যবস্থাপনা ও দুর্বলতাকে পূঁজি করে শাসকগোষ্ঠির আর্শিবাদপুষ্ট এক শ্রেনীর ব্যবসায়িক লুটেরা সিন্ডিকেট ও কিছু কিছু সরকারি দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারিরা সীমাহীন লুটপাট করছে। ব্যাংক ও সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত সম্পূর্ণভাবে ধবংস করে তারা বিদেশে অর্থ পাচার করছে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সেরকম পরিস্থিতিতে নাগরিকরা সারাজীবনের অর্জিত সম্পদ কোন ভরসায় এই নতুন লুটপাট স্কিমে বিনিয়োগ করবে? রাষ্ট্রীয় কোষাগার প্রায় শূণ্য, ব্যাংকিং খাত প্রায় দেউলিয়া, এরকম লুটেরা তন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্য এরকম পেনশন স্কিমের মতো আরও স্কিম চালু করে জনগণের পকেট শূণ্য করতে চায় এই লুটেরা সরকার। সরকারের এই হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত ও অনৈতিক তথাকথিত পেনশন স্কিমসহ ইত্যকার সকল প্রকল্প প্রত্যাখান করেছে জনগণ।###

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions