ডেস্ক রির্পোট:- জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ জব্দ (ক্রোক) অবরুদ্ধের (ফ্রিজ) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনে শুনানির পর ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশারফ হোসেন কাজল। আদালতের আদেশটি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেন এই আইনজীবী।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে, কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালসহ ১৪ জনের ৮৭টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ছয় কোটি ৯৬ লাখ টাকা। তার ও তার স্ত্রীসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দুই কোটি ৫৫ লাখ টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্র অবরুদ্ধ করেছেন আদালত। এ ছাড়া কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের ঢাকার একটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠার দুটি প্লট জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মোশারফ হোসেন কাজল কালের কণ্ঠকে বলেন, “এনবিআরের প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের সম্পদ নিয়ে দুদক অনুসন্ধান করছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে দুদক ঢাকায় কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের ফ্ল্যাট, দুটি প্লট, সঞ্চয়পত্রসহ ১৬ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ পেয়েছে। এসব সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করার জন্য দুদকের পক্ষ থেকে আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।”
কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল ছাড়া যাদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে তারা হলেন- শেখ নাসির উদ্দিন, মমতাজ বেগম, রওশন আরা খাতুন, আহম্মেদ আলী, খন্দকার হাফিজুর রহমান, ফারহানা আফরোজ, আশরাফ আলী মুনির, আফতাব আলী তানির, মাহফুজা আক্তার, মাইনুল হাসান, আফসানা জেসমিন, মাহমুদা হাসান ও কাজী খালিদ হাসান।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল তার নিজ নামে ও তার স্ত্রী আফসানা জেসমিনের নামে জলসিঁড়ি আবাসন প্রকল্পে মোট দুই কোটি ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে ৫ কাঠার প্লট কিনেছিলেন।
অনুসন্ধান চলাকালে সেই প্লট বিক্রি করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অপরাধলব্ধ সম্পদ বিক্রি করার চেষ্টা করছেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়। অপরাধলব্ধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত বর্ণিত সম্পদ/সম্পত্তির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নিলে তা বেহাত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
দুদক আবেদনে আরো বলেছে, আবু মাহমুদ ফয়সাল সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ লেনদেন করেছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত আয়ের উৎস গোপনের জন্য নিজের নামসহ তার আত্মীয়স্বজনের নামে ৭০০টির বেশি হিসাব খোলেন।
উদ্দেশ্য ছিল অপরাধলব্ধ আয়ের উৎস গোপন করা। দুদকের পক্ষ থেকে আবু মাহমুদ ফয়সালের সম্পদের বিস্তারিত বিবরণ আদালতের কাছে তুলে ধরা হয়।
ছাগলকাণ্ডে এখনো আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমান। এর মধ্যে তাকে এনবিআর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।