বান্দরবান:- বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ম্যালেরিয়া ও ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গত দুই সপ্তাহে এ দুই রোগে অন্তত ৪৮ জন নারী-পুরুষ আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। সোমবার উপজেলার ৪ নং কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ক্রাত প্রু ম্রো এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বর্ষা মৌসুমে জেলার দুর্গম এলাকায় সুপেয় জলের সংকটের কারনে ডায়রিয়ার এবং মশা বেড়ে যাওয়ায় ম্যালেরিয়া আক্রান্ত রোগের প্রদুর্ভাব দেখা দেয়। বর্ষায় বৃষ্টির পানির সাথে ঝিরি থেকে বয়ে আসা ময়লা পানি পান করার কারণে বিভিন্ন রোগের পাশাপাশি ডায়রিয়া রোগের আক্রান্ত হন স্থানীয়রা। পানিতে পাহাড় স্যাঁতসেতে থাকায় ম্যালেরিয়া জীবাণুবাহী আনোফেলিশ মশার উপদ্রবও বেড়ে যায়, সেই সাথে মশারি ব্যবহার না করার ফলে বাড়ে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা।
বিগত বছরগুলোতে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে অনেকের। অন্যান্য বছরের মত এবারও বর্ষার শুরু হতে না হতেই এই এলাকায় বেড়েছে ডায়রিয়া ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। গত দুই সপ্তাহে কুরুকপাতা ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে অন্তত ৩০ জন ম্যালেরিয়া ও ১৮ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে উপজেলার ৪০ হাজার ৯৫৮ জনকে পরিক্ষায় ২ হাজার ৩৩৫ জনের শরীরে ম্যালেরিয়ার উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছিল। চলতি বছরের মে পর্যন্ত ১৬ হাজার ৬৫৪ জনের পরিক্ষায় ২২৩ জনের শরীরে ম্যালেরিয়া রোগের জীবানু শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে কুরুকপাতা ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাত প্রু ম্রো আরো জানান, ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯ নাম্বার ওয়ার্ডে গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত ৩৫ জন ম্যালেরিয়া ও ২০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া গত ২০ দিন আগে ডায়রিয়ায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন ক্রাত প্রু ম্রো।
এদিকে আলীকদম উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মাহাবুব সাংবাদিকদের জানায়, গত কয়েক সপ্তাহে কুরুকপাতা এলাকায় জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত সপ্তাহে একটি মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছিল । সেখানে কয়েকটি পাড়ার ৪৫ জনকে পরিক্ষার পর ২৭ জনের শরীরে ম্যালেরিয়া রোগের জীবানুর উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের সবাইকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। আবারও রোগের প্রদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় সোমবারও একটি মেডিকেল টিম আক্রান্ত পাড়াগুলোতে পাঠানো হয়েছে।