খাগড়াছড়ি:- খাগড়াছড়ির রামগড়ে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে মো. আবু মিয়া (৫৬) নামে এক শ্রমিক খুন হয়েছেন। ডিউটি-রত অবস্থায় অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে। থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. মনির হোসেন খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের পুরাতন ডাকবাংলো আনসার ক্যাম্পের পাশের এলাকা থেকে আবু মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের মাথার বামপাশে কানের উপরে লোহার এঙ্গেলের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মরদেহের পাশ থেকে লোহার এঙ্গেলটি আলামত হিসেবে পুলিশ জব্দ করেছে। পুলিশ বলছে, লোহার এঙ্গেলের আঘাতে আবু মিয়ার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের ছোট ছেলে মো. হানিফ জানান, বুধবার সকাল ৯টার দিকে রামগড়ের নুরপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তার বাবা কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ডিউটির উদ্দেশ্যে বের হন। দুপুরের খাবার খেতে বাসায় না আসায় তার মা বেলা ২টার দিকে মোবাইলে কল করলে ফোন বন্ধ পান। পরে একাধিকবার কল দিলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। রাতেও বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন বেশ খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান পায়নি।
মো. হানিফ আরও বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের এক স্টাফের ফোন পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে এসে বাবার মরদেহ দেখতে পান।
তিনি আরও বলেন, বুধবার তার বাবা বেতন-বোনাসও উত্তোলন করেন। পুলিশ জানায়, নিহতের মরদেহের জামার পকেটে টাকা পাওয়া যায়। তবে তাৎক্ষণিক-ভাবে টাকার পরিমাণ জানা যায়নি।
মো. হানিফ বলেন, তার বাবার সাথে কারও কোন বিরোধ বা শত্রুতা ছিল না।
তিনি বলেন, ‘কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের যেখানে মরদেহ পাওয়া যায় ঐ ন্থানটি স্থানীয় বখাটে ও মাদকাসক্ত তরুণ-যুবকদের আড্ডা-স্থল। নেশাখোরদের বাধা দেয়ার কারণে তারা বাবাকে খুন করেছে কি না বলতে পারছি না।’
রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ফয়সাল বলেন, নিহত আবু মিয়া তাদের নিয়মিত শ্রমিক। ডিউটি-রত অবস্থায় কে বা কারা তাকে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা কাজ করতে গেলে তার মরদেহ দেখতে পায়। পরে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনির হোসেন বলেন, খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, লোহার এঙ্গেলের টুকরা দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়। আলামত হিসেবে এঙ্গেলটিও ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নিহতের ছেলে মো. হানিফ বাদী হয়ে মামলা করবেন। মামলা রুজুর প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্তর জন্য মরদেহ খাগড়াছড়ি জেলা সদর হসপিটালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপরতা শুরু করেছে।