শিরোনাম
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় আন্তর্জাতিক চাপে সরকার বাংলাদেশ নিয়ে আমার মন্তব্য বিজেপি বিকৃত করেছে-মমতা ব্যানার্জি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকাশ্যে,পাল্টাপাল্টি দোষারোপ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার আগে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ কোটা সংস্কার আন্দোলন চিকিৎসাধীন তিনজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ২০৬,ছুটির দিনেও রাজধানী ফাঁকা এএসআই মোক্তাদিরের ওপর নৃশংসতায় স্তব্ধ পরিবার সারা দেশে অভিযান,এলাকা ভাগ করে ‘ব্লক রেইড’ ‘গুলি আর কারা করবে, আমরা নিরস্ত্র ছিলাম’-মিফতাহ সিদ্দিকী ‘এত মৃত্যু দেখে কেউ চুপ থাকতে পারে না’ কোটা বিক্ষোভ দমনের পর প্রান্তসীমায় বাংলাদেশ,ক্রাইসিস গ্রুপের রিপোর্ট

রামগড় চা বাগানে ব্যবস্থাপক-শ্রমিক দ্বন্দ্বে উত্তেজনা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪
  • ৫৪ দেখা হয়েছে

খাগড়াছড়ি:- চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি লাগোয়া রামগড় চা বাগানে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বাগান ব্যবস্থাপকের দ্বন্দ্বের জেরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার করা মামলাকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক বলে দাবি করেছেন শ্রমিক নেতারা। কাজে যোগ দেওয়ার দুই দিন পর আবার ওই শ্রমিক নেতাদের কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছে বাগান কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিন গিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বুধবার শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে ফটিকছড়ির উত্তরের রামগড় চা বাগানে উপস্থিত হন পঞ্চায়েত নেতা যতন কর্মকার ও বিপ্লব মুন্ডা। এ সময় তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের ঘর মেরামত না করা, বাগানের হাসপাতালের দুরবস্থা, মানসম্মত বিদ্যালয় ও শৌচাগারের দাবি জানান। একপর্যায়ে ব্যবস্থাপক এবং শ্রমিক নেতাদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

শ্রমিকদের দাবি, বাগানের ব্যবস্থাপক জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে সহকারী ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম, শিমুল, নগেন্দ্র ও গাড়িচালক ফারুক শ্রমিক নেতাদের ওপর হামলা চালান। এ সময় তারা পাল্টা হামলা করে। তবে তাতে কেউ গুরুতর আহত হয়নি। পরবর্তী সময়ে বাগান ব্যবস্থাপক জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে শ্রমিক নেতা যতন ও বিপ্লবকে আসামি করে ফটিকছড়ির ভুজপুর থানায় মামলা করেন। পরে রাতেই পুলিশ বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করে।

ভুজপুর থানায় করা মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, রামগড় চা বাগানের ব্যবস্থাপক জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, গত বুধবার সকালে আসামিরা (যতন কর্মকার ও বিপ্লব মুন্ডা) চা বাগানের কার্যালয়ে রড দিয়ে তাঁর ওপর হামলা করেন। উপস্থিত লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে।

চা শ্রমিক চট্টগ্রাম ভ্যালির সাধারণ সম্পাদক যতন কর্মকার বলেন, ‘শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে রামগড় চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি বিপ্লবকে সঙ্গে নিয়ে গত বুধবার রামগড় চা বাগান কার্যালয়ে যাই। তখন বাগান ব্যবস্থাপক জয়নাল আবেদীনকে এসব দাবি জানালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তার নেতৃত্বে আমাদের মারধর করে কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বিপ্লবকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এর প্রতিবাদে শ্রমিকেরা একদিন কাজ বন্ধ রাখে। পরে বাগান বাজার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান রোস্তম আলীর মধ্যস্থতায় শ্রমিকেরা কাজে ফেরে। তবে দুদিনের মধ্যে আমাকে ও বিপ্লবকে কাজে যোগ দিতে নিষেধ করে বাগান কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রীয় শ্রমিক নেতাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। মামলা প্রত্যাহার ও পুনরায় কাজে নিয়োগ দিতে টালবাহানা করলে পুনরায় আন্দোলন চালিয়ে যাবে শ্রমিকেরা।’

সদ্য জামিনে মুক্তি পাওয়া বিপ্লব মুন্ডা বলেন, মামলা করার পর গত বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ভুজপুর থানা-পুলিশ। গত রোববার জামিনে মুক্তি পান তিনি। শ্রমিকেরা তাঁদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। অধিকারের কথা বললে বাগান ব্যবস্থাপক জয়নাল আবেদীন সব সময় তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। আগেও ক্যাডার বাহিনী দিয়ে তিনি শ্রমিকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন।

রামগড় চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মদন রাজগড় বলেন, চা শ্রমিকদের বাড়িঘরগুলো খুবই নিম্নমানের কাঠ দিয়ে তৈরি। এসব ঘর এখন বসবাসের অনুপযুক্ত। বাগানের একমাত্র হাসপাতালের অবস্থা আরও খারাপ। রোগী রাখার একটি বেড পর্যন্ত নেই। পর্যাপ্ত ওষুধ নেই। নামেমাত্র বিদ্যালয় থাকলেও এর কোনো কার্যক্রম নেই। শৌচাগারের অবস্থা খুবই খারাপ। এসব সমস্যার কথা বিভিন্ন সময় বাগান কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা আমলে নেয়নি। বাগান ব্যবস্থাপক জয়নাল আবেদীন শ্রমিকদের সঙ্গে সব সময় মারমুখী আচরণ করেন। সর্বশেষ ঘটে যাওয়া ঘটনায় শ্রমিকদের ওপর মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। মামলা প্রত্যাহার না হলে পুনরায় আন্দোলন করা হবে।

বাগান ব্যবস্থাপক জয়নাল আবেদীন এ বিষয়ে প্রতিবেদন না করতে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, বাগান বাজার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রোস্তম আলীর মধ্যস্থতায় শ্রমিকেরা কাজে ফিরেছে। মামলা প্রত্যাহার করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।

বাগান বাজার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রোস্তম আলী বলেন, চা বাগানে শ্রমিক ও ব্যবস্থাপকের মধ্যে মারামারির ঘটনা তিনি শুনেছেন। ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুরোধে তিনি দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে অনুরোধ করেন। শ্রমিকেরা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে কাজে ফিরলেও তাদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে।

ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, মারামারির খবর পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক ফোর্স পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোজাম্মেল হক বলেন, চা বাগানে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions