ডেস্ক রির্পোট:- স্বপ্নের অত্যাধুনিক ডিজেল মালটিপল ইউনিট (ডেমু) প্রকল্পের ব্যর্থতার দায় নিচ্ছে না রেলের কেউ। প্রকল্পটি অনুমোদন, দরপত্র প্রক্রিয়া, ক্রয় প্রক্রিয়া এসবের প্রায় প্রতিটি ধাপে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা ২০ সেট ডেমু শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে।
৩৫ বছর মেয়াদ থাকলেও প্রথম ২ বছর থেকেই অকেজো হওয়া শুরু। এখন কোনো অবস্থাতেই এগুলো মেরামত করা সম্ভব নয়। ডেমুর মালামাল স্থানীয়ভাবে কোথাও পাওয়া যায় না। চীন এগুলোকে একটি বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে চালাত। সেই সফটওয়্যারও নেই। যে কদিন ট্রেনগুলো চলাচল করেছে সে সময় মেরামতের পেছনে অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে লোকসান হয়েছে আরও প্রায় ৩০ কোটি টাকা। সব মিলে ডেমু ট্রেনের পেছনে সরকারের ৬৫০ কোটি টাকার পুরোটাই জলে গেছে।
২০১৩ সালে নেওয়া প্রকল্পের পিডিসহ সংশ্লিষ্ট বেশকিছু কর্মকর্তা অবসরে গেছেন। প্রকল্প তৈরির সময় রেলের মহাপরিচালক এবং তার পরের মহাপরিচালকও অবসরে। তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী এবং পরিকল্পনামন্ত্রী মারা গেছেন। কিছু কর্মকর্তা এখন চাকরিতে থাকলেও তাদের কেউ দায় নিচ্ছেন না।
এছাড়া বর্তমানে যারা দায়িত্বে আছেন তারা বলছেন প্রকল্প গ্রহণ ক্রয়সহ এ সংক্রান্ত কাজের সময় তারা ছিলেন না। কেনার সময় অতি আগ্রহ এবং পরে যে কোনোভাবে দায় এড়ানোয় ডেমু প্রকল্পের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। এখন ট্রেনগুলো নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার পাঁয়তারাও চলছে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে শনিবার সন্ধ্যায় রেলপথমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, ‘ডেমু ট্রেন নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। তবে ট্রেনগুলো আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কেনা হয়নি। যে মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকার সময়ে ট্রেনগুলো কেনা হয়েছে তিনি আর নেই। তাছাড়া ডেমু কেনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কারা ছিলেন-সেটা আমার জানা নেই। কেনাকাটা এবং ডেমু প্রশিক্ষণে বিদেশে যেসব কর্মকর্তা গিয়েছিলেন, তাদের বিষয়েও আমি জানি না। তবে জবাবদিহি থাকা প্রয়োজন।’ এখন অকেজো ডেমুগুলোর কি হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ডেমু বিষয়ে আমি খুব একটা জানি না। তবে এ বিষয়ে আমি খোঁজ নেব।’
শুক্র ও শনিবার ২ দিন গোপনে ঢাকা রেলওয়ে লোকোশেডে ঘুরে দেখা যায়, শেডের দক্ষিণ পাশে সারি সারি ডেমু পড়ে আছে। গাছপালা, লতাপাতায় ভরা জায়গাটি ভূতুড়ে পরিবেশ। শত শত কোটি টাকার ডেমুতে গাছপালা গজিয়ে গেছে। দরজা খোলা, ভেতরে মলমূত্রও চোখে পড়েছে। সিট এবং ডেমুর সামনের (ইঞ্জিন) অংশ ভাঙাচুরা। মাকড়সা আর মরিচা পড়া প্রতিটি ডেমুতে যেন পচন ধরেছে। একেকটি ডেমু সেটে দুটি করে ইঞ্জিন। বেশ কয়েকটি ইঞ্জিনে উঠে দেখা গেছে, মালটি ডিসপ্লেগুলো ভাঙাচুরা-ছেঁড়া। যেন একেকটা ডেমুর কঙ্কাল। শেডে দায়িত্বরত এক কর্মকর্তার ভাষ্য, ডেমুর কঙ্কালগুলো পড়ে আছে। তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে ডেমু থেকে কোন যন্ত্রাংশগুলো হাওয়া হয়ে গেছে। এর জন্য দায়ী কে বা কারা তা শনাক্ত করাও সম্ভব হবে।
শেডটির ভেতর প্রায় ৭টি ডেমু পড়ে আছে। লতাপাতা আর গাছে ঢাকা বেশ কয়েকটি ডেমুর অংশ বিশেষ শুধু দেখা যাচ্ছিল। দক্ষিণ পাশের বিশাল এলাকাজুড়ে পড়ে থাকা ডেমুগুলোর উপরিভাগে শ্যাওলার আস্তর পড়েছে। শেডে দায়িত্বরত অপর এক কর্মকর্তা বলেন, ডেমুগুলো বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে। অবশিষ্ট ১২টি ডেমু চট্টগ্রাম এবং লালমনিরহাট শেডে পড়ে আছে। একটি মাত্র ডেমু চট্টগ্রাম দোহাজারী রুটে চলছে। সেও একদিন চলে এরপর ৪ দিন বন্ধ হয়ে থাকে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
রেলপথ সচিব ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, এখন ডেমু সেভাবে চলছে না। এটি যাত্রীবান্ধব হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা সমস্যার কারণে তা হয়নি। ডেমুর বর্তমান অবস্থান নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আলোচনার পর নির্ধারণ করা হবে এ বিষয়ে কি করা যায়। এছাড়া ডেমু ক্রয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত ছিল, তাদের অবস্থান আমার জানা নেই। এ প্রকল্পে যারা বিদেশে গিয়েছিলেন, নিশ্চয় তাদের জবাবদিহিতা থাকবে। জবাবদিহি থাকা প্রয়োজন।
সচিব আরও বলেন, রেলে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। উন্নয়নের সুফল যাতে সাধারণ মানুষ পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। ডেমুর মতো ট্রেনগুলো সচল থাকলে কম দূরত্বের রেলওয়ে স্টেশনগুলোতে পর্যাপ্ত ট্রিপ দেওয়া যেত। এদিকে অকেজো ডেমু ট্রেনের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট যুগান্তরের হাতে এসেছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠিত ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা হয়েছে গত বছরের ১১ মে। তদন্ত রিপোর্টের সুপারিশে বলা হয়, ডেমু কিছুতেই মেরামত করা সম্ভব নয়। এতে ব্যবহৃত মডিউল, সেন্সর আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ না হলে মেরামত হবে না। চীনা ঠিকাদারি কোম্পানির কাছ থেকেই শুধু ওই সব যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করতে হবে, কারণ ওই সব যন্ত্রপাতি শুধু তারাই দিতে পারবে। এ বিষয়ে চীনের সিআরআরসিকে আহ্বান করা যেতে পারে। সুপারিশে আরও বলা হয়, ডেমু মেরামত বিষয়ে রেলওয়ের পরিপূর্ণ কারিগরি সক্ষমতা গড় উঠেনি। এ জন্য ডেমু বিষয়ে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন পরামর্শক জরুরি। কমিটির এক সদস্য যুগান্তরকে বলেন, ডেমু ক্রয় থেকে দেশে চলাচল শুরু পর্যন্ত পুরো সময়েই অনিয়ম-দুর্নীতির মধ্য দিয়ে গেছে। পুরো অর্থটাই জলে গেছে।
জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে একটি ডেমু মেরামত করে কিছুদিন চালানো হয়েছে। রেলের সাবেক প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান ২০২২ সালে একটি ডেমু মেরামত করেন। প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ করে মেরামত করা একটি ডেমু লালমনিরহাট সেকশনে কিছু দিন চালানোও হয়। পরে সেটি চূড়ান্ত ভাবে অচল হয়ে পড়ে। সে সময় বলা হয়েছিল দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে অন্য ট্রেনগুলোও মেরামত করা সম্ভব। কিন্তু সংস্কারের কিছু দিন পর ট্রেনটি বসে গেলে বাকিগুলোর পেছনে আর অর্থ ব্যয় করা হয়নি।
পূর্বাঞ্চল রেলের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী সাজিদ হাসান নির্ঝর বলেন, ‘ডেমু ট্রেনের প্রায় সবকটি অকেজো হয়ে আছে। একটি ডেমু চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত চলাচল করে-তাও একদিন চললে ২ দিন নষ্ট হয়ে পড়ে থাকে। এটিও চূড়ান্তভাবে অচল হয়ে পড়বে। দিন দিন এগুলো ধ্বংস হচ্ছে। এখন কোনো অবস্থাতেই মেরামত করা সম্ভব নয়। তাছাড়া ডেমুর মালামাল স্থানীয় ভাবে কোথাও পাওয়া যায় না। চীন এগুলোকে একটি বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে চালাত। ওই সফটওয়্যারও নেই। চীন থেকে আসা সংশ্লিষ্টরা কয়েক বছর পরেই চলে গেছেন। এখন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে ডেমুগুলো নিলামে বিক্রি করা যেতে পারে।’
জানা গেছে, ডেমু ক্রয়ে ২০১০ সালে রাজস্ব খাত থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাব দিয়ে তা অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পটি নাকচ করে দেয়। প্রস্তাবটিতে ডেমু ট্রেনের কোনো কামরায় এসি ছিল না, জানালা, টয়লেটও নেই। এতে বায়ু সঞ্চালের কোনো ব্যবস্থাও ছিল না। মূলত ট্রেনটি শীতপ্রধান দেশের জন্যই তৈরি হয়েছিল। ট্রেনটি বাংলাদেশের উপযোগী নয় বলে সংশ্লিষ্টরা প্রকল্পটির বিরোধিতা করেন। কিন্তু পরে ২০১০ সালের জুনে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী ওই সময়ের পরিকল্পনামন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ এবং লিখিত চিঠি দিয়ে প্রকল্পটির অনুমোদ নেন।
ডেমু প্রকল্পের দরপত্রে অংশ নেওয়া তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চীনের দুটি এবং ইন্দোনেশিয়ার একটি ছিল। এর মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র মূল্যায়নে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়া হয়। এক কর্মকর্তা জানান, ‘রীতি অনুসারে দুটি প্রতিষ্ঠান অযোগ্য হওয়ায় পুনরায় দরপত্র আহ্বান করার কথা। কিন্তু তাড়াহুড়ো করে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা কোম্পানিকে কাজটি দেওয়া হয়।
রেলের সাবেক মহাপরিচালক মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমি যখন ছিলাম তখন ডেমু দেশে এসেছে। ডেমু গ্রহণ করেছে মেকানিক্যাল দপ্তরের কর্মকর্তারা। ডেমু ক্রয়ের পুরো বিষয়টি আগেই সম্পন্ন হয়েছিল। যখন ডেমু চালানো হলো তখন যাত্রীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। কারণ ডেমু ছিল নন-এসি। কিন্তু পুরো ডেমুর দরজা বন্ধ অবস্থায় চালানো হতো। জানালা ছিল না। ছিল না টয়লেট। ভেতরে ফ্যানও ছিল না। প্রচণ্ড গরমে যাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়তেন। তাছাড়া ডেমু কেনার পরও এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ছিল না ওয়ার্কশপ-দক্ষ জনবলও।’
রেলওয়ে মেকানিক্যাল দপ্তর ঘুরে জানা যায়, শুরুতে ডেমু ক্রয় প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) ছিলেন রেলের তৎকালীন প্রধান যন্ত্রকৌশল প্রকৌশলী সাইদুর রহমান। তার হাত ধরেই ডেমু যুক্ত হয় রেলবহরে। ওই সময় ডেমু নিয়ে লেখালেখি শুরু হলে তৎকালীন রেলের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকল্প পরিচালক সাইদুর রহমান এবং ডেমু প্রকল্পের অধীনে চীন সফর করা ৮ কর্মকর্তাকে দায়ী করা হয়। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সাইদুর রহমানকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হলেও বাকিদের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
সূত্র জানায়, ডেমু কিনতে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করে ৮ কর্মকর্তাকে চীনে পাঠানো হয়েছিল। তাদের দায়িত্ব ছিল ডেমুর কার্যকারিতা ও অন্যান্য বিষয় দেখে আসা। এদের মধ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ে বিভাগের ৬ কর্মকর্তা এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) ও পরিকল্পনা কমিশনের একজন করে কর্মকর্তা ছিলেন। রেলের এক কর্মকর্তা বলেন, এরা প্রায় দেড় মাস চীনে অবস্থান করেন। ফেরার সময় ব্যাগভর্তি শপিং করে এসেছেন।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের লালমনিরহাট ডিএমই শাহিনুল হক বলেন, ‘ওই পথের মিটারগেজ লাইনে ২ সেট ডেমু চলাচল করত। শুরু থেকেই নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে ডেমুগুলো চালানো হতো। দিন যত গেছে, সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমরা চেষ্টা করেছি মেরামত করে চালাতে, কিন্তু পারিনি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একটি ডেমু মেরামত করে কিছু দিন চালিয়েছিলেন। কিন্তু তা বেশি দিন নয়। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই তা অচল হয়ে পড়ে। এখন নির্দেশনা পেলে এগুলো নিলামে বিক্রি ছাড়া উপায় নেই।’
,রেলওয়ে অপারেশন ও অবকাঠামো দপ্তর সূত্র বলছে, এ প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে অপারেশন ও অবকাঠামো দপ্তরকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। ডেমু কেনার পরিকল্পনা থেকে দেশে আসা পর্যন্ত-এর রক্ষণাবেক্ষণ ও ওয়ার্কশপ বিষয়ে কর্ণপাত করেননি সংশ্লিষ্টরা। চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদার কোম্পানি মালামাল না দিলেও তা এড়িয়ে যান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ওয়ার্কশপ না থাকায় নষ্ট হওয়া ডেমুগুলো মেরামত করা যায়নি। সাধারণ ট্রেনের ওয়ার্কশপে নষ্ট ডেমুগুলো মেরামতের জন্য নেওয়া হলেও সেখানে যথাযথভাবে কাজ করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া সাধারণ ওয়ার্কশপে ডেমু মেরামত করতে-কোনো উৎসাহ দেখাতেন না শ্রমিক-কর্মকর্তারা।
পরিবহণ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এম সামছুল হক বলেন, ডেমু ক্রয় পরিকল্পনা থেকে শুরু করে বিদেশে যাওয়া কর্মকর্তা এবং বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এর দায় এড়াতে পারেন না। সরকারি অর্থ মানেই সাধারণ জনগণের অর্থ।
৬৫০ কোটি টাকা একেবারেই কাজে এলো না। এ জন্য প্ল্যানিং কমিশন থেকে শুরু করে রেলপথ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এ প্রকল্পে জড়িতদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা উচিত। দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি হওয়া দরকার। তাহলে এ থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এমন প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে সবাই সতর্ক থাকবে। দেশে যুগের পর যুগ ধরে ইঞ্জিন-কোচ চলছে, আর ডেমু মাত্র কয়েক বছরেই ধ্বংস হয়ে গেল। কেনাকাটার মূল শর্ত যদি হয়-ভালো পণ্য বুঝে নেওয়া, তাহলে সংশ্লিষ্টরা কি করলেন। দায়ীদের বিরুদ্ধে প্ল্যানিং কমিশন কিংবা রেলপথ মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।যুগান্তর