ডেস্ক রির্পোট:- ‘জাহাজে জলদস্যু ছিল ৬৫ জন। শনিবার মধ্যরাতে নয়টি বোটে করে তারা চলে যায়। এরপর জাহাজটি নোঙর তুলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে’- জিম্মি ঘটনা থেকে মুক্তির বিস্তারিত তুলে ধরতে গিয়ে রোববার এসব কথা বলেন কেএসআরএম গ্রুপের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত।
জানা গেছে যাত্রা শুরুর আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে সেই এমভি আবদুল্লাহর। জাহাজের চারপাশে দেওয়া হয়েছে কাঁটাতারের বেস্টনি। অন্য কোন জলদস্যু গ্রুপ যাতে জাহাজটি ফের আক্রমণ করতে না পারে সেজন্য এমন নিরাপত্তা বেস্টনি তৈরি করা হয়েছে জাহাজটিতে।
এছাড়া নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে জাহাজটির ডেকে ফায়ার হোস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবার কোনো বিপদ হলে নাবিকেরা যাতে জাহাজে সুরক্ষিত স্থানে লুকাতে পারেন, সে জন্য জাহাজের গোপন কুঠুরি ‘সিটাডেল’ ও প্রস্তুত রাখা হয়েছে
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কাঁটাতারের এই মজুদ জাহাজেই ছিলো। আমাদের সব জাহাজে এমন প্রস্তুতি থাকে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা অতিক্রমের সময় আমরা সেটা ব্যবহার করি।’ তাহলে জলদস্যু আক্রান্ত হওয়ার সময় ব্যবহার করেননি কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে কেএসআরএম গ্রুপের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, ‘আমাদের জাহাজ তখন হাইরিস্ক এরিয়ার বাইরে ছিল। সোমালিয়ার উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল রিস্কি এলাকা। তখন আমরা ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিলাম। তাই আর্ম গার্ড নেইনি আমরা।’ গত রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও অভিন্ন কথা বলেন তিনি।
কেএসআরএমের আগ্রাবাদস্থ প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সেই সংবাদ সম্মেলনে শাহরিয়ার জাহান রাহাত আরও জানান, জাহাজটি দুবাই পৌঁছানোর পর সেটি চট্টগ্রাম নিয়ে আসা হবে। সাধারণত দস্যুরা মালিকপক্ষকে টার্গেট করে বেশি স্বার্থ হাসিল করতে চায়। তাই আমরা তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে আলোচনা শুরু করি এবং সফল হই।
তিনি আরও বলেন, জাহান মণি জাহাজ জলদস্যুর কবলে পড়ার ১৪ বছর পর দুর্ভাগ্যবশত একই ঘটনা ঘটল। গত ১২ মার্চ এ জাহাজ আক্রমণের শিকার হয়েছিল অস্ত্রের মুখে।
জানতে চাইলে কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে জাহাজটি দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। আশা করছি ২২ এপ্রিল সেখানে নোঙর করবে এটি।’
গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। ১৪ এপ্রিল জাহাজটি মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয় জলদস্যুরা।