শিরোনাম
ইউএনও’র বাসভবনে বান্ডিল বান্ডিল পোড়া টাকার ভিডিও ভাইরাল বিএনপি নেতার চাঁদাবাজি বন্ধে মানববন্ধন ১৮৭ পুলিশ কর্মকর্তাকে সন্ত্রাসী বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো পুনর্গঠন না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন না হওয়ায় কার্যত স্থবির তিন পার্বত্য জেলার উন্নয়ন প্রকল্প শ্রমিক অসন্তোষে পোশাকশিল্পে ক্ষতি ৪৮০০ কোটি টাকা: বিজিএমইএ আ. লীগ নিষিদ্ধসহ ২৩ দফা দাবি এলডিপির খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে ১৮ বছর পর সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার প্রয়োজনে সিস্টেম ভেঙে নতুন লোক বসানো হবে: চট্টগ্রামে আসিফ মাহমুদ বান্দরবানে সাঙ্গু নদীতে রথ উৎসর্গের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা

ডুবে যাচ্ছে ১৩ লাখ কোটি ব্যয়ে সমুদ্রের মাঝে তৈরি বিমানবন্দর

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১০০ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ২৯ বছর আগে ১৯৯৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যাত্রা শুরু করে জাপানের কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। জাপানের ওসাকা, কিয়োটো এবং কোবের মতো ব্যস্ত শহর থেকে নিকটতম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এটি। ওসাকা স্টেশন থেকে ৩৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ওসাকা বের ঠিক মাঝখানে দুটি কৃত্রিম দ্বীপের ওপর তৈরি হয়েছে এ বিমানবন্দর।

কিন্তু যে দুটি কৃত্রিম দ্বীপের ওপর বিমানবন্দর তৈরি করা হয়েছে তা ক্রমেই সমুদ্রের তলায় ডুবে যাচ্ছে। এমনকি, মূল ভূখণ্ড থেকেও ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে এ বিমানবন্দর। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ইতোমধ্যেই কৃত্রিম দ্বীপের ৩৮ ফুটেরও বেশি ডুবে গেছে। ২০৫৬ সালের মধ্যে আরও ১৩ ফুট সমুদ্রের তলায় ডুবে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

দুটি কৃত্রিম দ্বীপের ওপর বিমানবন্দর তৈরি করতে জাপানের খরচ হয়েছিল ১৩ লাখ কোটি টাকারও বেশি। কৃত্রিম দ্বীপ দুটি নির্মাণ করতে প্রথমে সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর পাঁচ ফুট উচ্চতার মাটি দেওয়া হয়। তার উপর গেঁথে দেওয়া হয় ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ২২ লাখ পাইপ।

জমির ভিত শক্ত করতে পাইপের ওপর মাটির সঙ্গে কাদা এবং বালি মেশানো হয়। ওসাকা বের ওপর তৈরি দুটি কৃত্রিম দ্বীপের জমি ছিল ভেজা স্পঞ্জের মতো। সেই জমি পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে তারপর শুরু হয় বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ। ষাটের দশকে টোকিয়ো শহরের সঙ্গে কানসাই এলাকার বাণিজ্যের কথা চিন্তা করে কোবে এবং ওসাকা শহরের কাছাকাছি একটি বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা থেকেই এ বিমানবন্দর নির্মাণের পদক্ষেপ নেয় জাপান সরকার।

প্রথমে ভাবা হয়েছিল ইটামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পুনঃনির্মাণ করে আরও বর্ধিত করা হবে। কিন্তু ইটামি এবং টোয়োনাকা শহরের কাছে এত উঁচু আবাসন রয়েছে যে বিমানবন্দর তৈরির জন্য ফাঁকা জমি পাওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে। এমনকি সেখানকার বাসিন্দারাও আপত্তি জানাতে শুরু করেন। বিমানবন্দর তৈরি হলে শব্দদূষণ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে দাবি জানান তারা। তাই সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।

কোবে শহরে নতুন বিমানবন্দর তৈরির চিন্তাভাবনা করা হলেও সেই চিন্তা থেকে সরে আসে জাপান সরকার।এরপর সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর দুটি কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি।

১৯৮৭ সাল থেকে দ্বীপ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২৬০০ একর জমির ওপর কৃত্রিম উপায়ে দুটি দ্বীপ তৈরি করে তার ওপর তৈরি হয় কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ১৯৯০ সালে কৃত্রিম দ্বীপ দুটি তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর মাধ্যমে যুক্ত করা হয়। সেতু নির্মাণের চার বছর পর সম্পূর্ণভাবে কার্যকর হয় কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

১৯৯৫ সালের ১৭ জানুয়ারি ভূমিকম্প হয় জাপানে। ভূমিকম্পের ফলে জাপানের হোনসু দ্বীপে ৬,৪৩৪ জন মারা যান। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয়। কিন্তু কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছিল সম্পূর্ণ অক্ষত। এরপর ১৯৯৮ সালে এই এলাকায় আঘাত হানা মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ও বিমানবন্দরের কোনো ক্ষতি করতে পারেনি।

তবে ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বরের ঘূর্ণিঝড়ে বেশ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয় কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, কয়েকটি বিমানের ইঞ্জিনের ভেতর পানি ঢুকে যায়। বিমানবন্দরের ভেতর আটকে পড়েন বহু যাত্রী। যে সেতুর মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে বিমানবন্দরের যোগাযোগ ছিল সেই সেতুর ওপর একটি ট্যাঙ্কার আছড়ে পড়ে সেতুর কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। দুদিন বিমান ওঠানামা বন্ধ থাকে বিমানবন্দরে।

ঘূর্ণিঝড়ের এক মাস পর কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি সম্পূর্ণভাবে চালু হয়। ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিলের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হয়। ২০১৬ সালের গণনা অনুযায়ী কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মোট ২ কোটি ৬০ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেছেন। সেই সময় জাপানের তৃতীয় ব্যস্ততম এবং এশিয়ার ত্রিশতম ব্যস্ত বিমানবন্দর হিসেবে নাম লেখায় কানসাই বিমানবন্দর।

তবে কৃত্রিম দ্বীপের প্রতিনিয়ত ডুবে যাওয়ার ঘটনা চিন্তায় ফেলেছে জাপান সরকারকে। তা হলে কী এই বিমানবন্দরটি কয়েক দশকের মধ্যে সমুদ্রের তলায় চলে যাবে? না কি এর বিকল্প হিসেবে অন্যকোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে?

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions