বান্দরবান:- ‘অপহরণের পর থেকে দুচোখে ছিল না ঘুম। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কেটেছে। স্বামীকে ফিরে পেয়ে এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে খুশি আর সুখী মানুষটি মনে হয় আমিই।’ স্বামীকে ফিরে পাওয়ার পর এভাবেই আবেগ প্রকাশ করেন সোনালী ব্যাংকের বান্দরবানের রুমা শাখার ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনের স্ত্রী মাইছুরা ইসফাত। আর নেজাম বলেছেন, ‘এ যেন নতুন জীবন ফিরে পাওয়া।’ স্বামী-স্ত্রী দুজনই সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার রাতে বান্দরবানের রুমার একটি মসজিদ থেকে নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে কেএনএফের সন্ত্রাসীরা। এ সময় ব্যাংকের ভল্টে থাকা ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লুট করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় তারা। তবে তারা পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র ও ৪১৫টি গুলি লুট করে নিয়ে যায়। এরপর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুক্তিপণের বিনিময়ে উদ্ধার হন নেজাম।
বান্দরবান শহরের মেঘলা এলাকার পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলনকক্ষে গতকাল শুক্রবার সকালে র্যাবের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় উদ্ধার অভিযানের বর্ণনা দেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। পরে নেজাম উদ্দিনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
নেজাম উদ্দিনের ভাই চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার উপপরিদর্শক মিজানুর রহমানের মাধ্যমে গতকাল কথা হয় নেজাম ও তাঁর স্ত্রীর মাইছুরার সঙ্গে। মাইছুরা বলেন, ‘আমি এতই আনন্দিত যে বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে ফিরে পেয়েছি। এর চেয়ে খুশির খবর আর কিছু হতে পারে না।’
নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘অপহরণের সময়টুকু ভুলে থাকতে চাই। আমি আবার সবার মাঝে ফিরে এসেছি। এ যেন আমার নতুন জীবন ফিরে পাওয়া। যাঁরা পাশে ছিলেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’
র্যাব জানায়, কেএনএফের অস্ত্রধারীরা ব্যাংক ব্যবস্থাপককে নিয়ে ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ছয়বার স্থান বদল করেছিল। কোথাও পাহাড়ি পথে, কোনো সময় ঝিরির পথ ধরে ও মোটরসাইকেলে সশস্ত্র পাহারার মধ্যে তাঁকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নেওয়া হয়। খেতে দেওয়া হয় কলারপাতায় মোড়ানো গরম ভাত, ডাল ও ডিমভাজি। তবে তাঁকে মারধর করা হয়নি।আজকের পত্রিকার