শিরোনাম
রাঙ্গামাটিতে বিচারকের স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু বাসায় মৃতদেহ উদ্ধার আদালতে সাবেক সিইসি নুরুল হুদার দায় স্বীকার মুক্তি পেলেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৫৬ বন্দি রাঙ্গামাটিতে দুই অটোরিকশার সংঘর্ষে মাছ ব্যবসায়ী নিহত শব্দনিরোধক কক্ষে যমটুপি পরিয়ে ১০ কায়দায় চলত নির্যাতন—গুম কমিশনের প্রতিবেদন পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ও যুগ্ম সচিব কংকন চাকমার যেসব অভিযোগে অপসারণ চাইছে পার্বত্যবাসী জুলাই অভ্যুত্থান ছিল রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেয়া–প্রধান উপদেষ্টা আরও উত্তপ্ত হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ক দুদকের জালে তানভীরসহ ৩৬ প্রেস মালিক চেতনার মানচিত্রে রক্তাক্ত গণ-অভ্যুত্থান

ভয়ংকর সশস্ত্র সংগঠন: ঘোষণা দিয়ে হামলা চালায় কেএনএফ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৪
  • ২১৮ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে সোনালি ও কৃষি ব্যাংকে হামলার তিন সপ্তাহ আগে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ফেসবুকে ‘বদলা নেওয়ার’ ঘোষণা দিয়েছিল। কেএনএফের ইনফরমেশন অ্যান্ড ইন্টিলিজেন্স ব্রাঞ্চের দায়িত্বে থাকা ক্যাপ্টেন ফ্লেমিংয়ের বরাতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণার ২১ দিনের মাথায় হামলার ঘটনা ঘটে।

‘কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি-কেএনএফের’ ফেসবুক পেজে ১২ মার্চ পোস্ট করা এক পোস্টে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চুক্তি ভঙ্গ করে বম সম্প্রদায়ের নিরীহ জনগণ লালমুয়ানওম বম (গিলগাল বা অবচলিতপাড়া) এবং রামনুয়াম বমকে (দুনিবারপাড়া) আটক করেছে। নিরীহ জনগণকে হয়রানি বন্ধ করা না হলে এর ফল খুব সুন্দরভাবে ফিডব্যাক দেওয়া হবে।’

২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে কেএনএফ তৎপরতা শুরু করে। ফেসবুকে ও ইউটিউব পোস্টে কেএনএফ সরকার ও জনসংহতি সমিতির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়ে আসছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা তাদের সামরিক প্রশিক্ষণের তথ্যও প্রচার করছে। চলতি বছরের এপ্রিলে তারা আনুষ্ঠানিক আÍপ্রকাশ করে। ফেসবুকে তারা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি এবং বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদম উপজেলাগুলোর সমন্বয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি করেন।
কেএনএফের ঘোষণা ও বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী-বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির অন্তত ছয়টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে তারা। তাদের দাবি-পাহাড়ের ৯টি উপজেলা তাদের পূর্বপুরুষদের আদি নিবাস। এসব উপজেলা নিয়ে তারা স্বায়ত্তশাসিত কুকি-চিন রাজ্য দাবি করছে।

তাদের দাবি-এ রাজ্যে বম, খিয়াং, পাংখুয়া, লুসাই, খুমি ও ম্রোরা থাকবে এবং চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরারা থাকতে পারবে না। তাদের দাবি- জেএসএসসহ অন্য সংগঠনগুলো তাদের ভূমি ব্যবহার করে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে। বিভিন্ন অপরাধ করছে, তাই এসব থেকে মুক্তি পেতে কেএনএফের সৃষ্টি। সংগঠনটি ২০১৭ সালে কেএনভি নামে সশস্ত্র সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করে। এরপর তারা শতাধিক সক্রিয় সদস্যকে কাচিন ও কারেন প্রদেশ এবং মণিপুর রাজ্যে প্রশিক্ষণে পাঠায়। ২০১৯ সালে কমান্ডো প্রশিক্ষণ শেষে সশস্ত্র অবস্থায় ফিরে আসে। দেশের রুমা সীমান্ত ও ভারতের মিজোরাম সীমান্তের জাম্পুই পাহাড়ে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত সংগঠনের সশস্ত্র ও নিরস্ত্র মিলিয়ে ৬০০-র বেশি সদস্য আছে। বর্তমানে তারা বান্দরবান ও রাঙামাটির পাঁচটি উপজেলায় ঘাঁটি গেড়েছে।

যেভাবে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে কেএনএফ :—
তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে বান্দরবান সবচেয়ে শান্তি ও সম্প্রীতির জেলা হিসাবে পরিচিত। তবে গত বছর থেকে কেএনএফের সশস্ত্র কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ায় হত্যা, গোলাগুলি, অপহরণের ঘটনা ঘটছে। এ কারণে শান্তিচুক্তির আগের অবস্থায় বান্দরবান ফিরছে বলে ধারণা স্থানীয়দের। কেএনএফের কর্মকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ ও তথ্যচিত্র থেকে দেখা যায়Ñএক মিনিটের একটি ফুটেজে শতাধিক উপজাতি নারী-পুরুষ সমস্বরে ইংরেজিতে বলছে, ‘নো ফুল স্টেট, নো রেস্ট’ অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র ব্যতীত অবসর নয়। সেখানে প্রত্যেকেই সেনাবাহিনীর মতোই ‘কম্ব্যাট’ পোশাক পরিহিত। ফুটেজ দেখলে বোঝা যায়Ñদুর্গম কোনো পাহাড়ে সামরিক প্রশিক্ষণের সময় ভিডিওটির ধারণ করা। সবুজ ঢেউয়ের ওপরে নীল আবহের মাঝখানে সাদা একটি তারকাসংবলিত পতাকা তৈরি করেছে তারা। এটি তাদের সেই প্রশিক্ষণকেন্দ্র বা আস্তানায় টানিয়ে রাখা হয়। সংগঠনের নামে তারা একটি লোগো বানিয়েছে। যেখানে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকাল উল্লেখ আছে ২০০৮ সাল।


কেএনএফের প্রধান কে এই নাথাম বম? : পুরো নাম নাথান লনচেও বম (৪১)। কেএনএফের দাবি-নাথান লনচেও বম-ই কেএনএফের প্রধান। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ নম্বর আসন বান্দরবান থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন নাথান বম। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, নাথান বম রুমা উপজেলার হেডেরপাড়ার বাসিন্দা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। স্নাতকোত্তর নাথান এক সন্তানের জনক। তার স্ত্রী স্থানীয় এক স্কুলের শিক্ষক।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যমতে, নাথানের অবস্থান নিশ্চিত করতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২০০৮ সালে অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত কুকি-চিন জনগোষ্ঠীর শিক্ষিত ব্যক্তিদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন কুকি-চিন জাতীয় ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (কেএনডিও)। সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের অনগ্রসর ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য রক্ষা করা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার রূপ বদলাতে থাকে। ২০১৭ সালের পর থেকে নতুন রূপ ধারণ করেন নাথান। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠা করেন কেএনএফ।যু

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions