রাঙ্গামাটি:- রাঙ্গামাটির কাপ্তাই কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকার ভেতরে বাস করা বাসিন্দাদের বড় দুশ্চিন্তার কারণ এখন বুনো হাতি। সন্ধ্যা নামার পরপরই কখন হাতির পাল হানা দেবে সেই ভয় পেয়ে বসে তাঁদের।
মানুষ হাতির আবাসস্থল ধ্বংস করায় এবং জঙ্গলে খাবারের সংকটের কারণেই হাতির পাল লোকালয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে বলে জানান কাপ্তাইয়ের রেঞ্জ কর্মকর্তা।
সর্বশেষ গত সোমবার রাতভর বন্য হাতির একটি দল কাপ্তাই বিদ্যুৎ ভবন এবং কাপ্তাই বক্স হাউস (অফিসার’স কোয়ার্টার) এলাকায় অবস্থান নেয় বলে জানান কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক (নিরাপত্তা) সাখাওয়াত কবির। এ সময় এখানকার বাসিন্দারা ভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে পড়েন।
সাখাওয়াত কবির বলেন, ‘গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় বিদ্যুৎ ভবনের পাশে একদল হাতি অবস্থান নেন। পরে আমরা বাঁশি বাজিয়ে হই-হুল্লোড় করে হাতির পালকে তাড়িয়ে দিই।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বন্য হাতির একটি পাল কাপ্তাই বিদ্যুৎ এলাকার বক্স হাউস, আনসার ব্যারাকে হানা দিয়ে জিনিসপত্র লন্ডভন্ড করে ও দেয়াল ভাঙচুর করে বলে জানান কাপ্তাই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহাদাৎ হোসেন।
কাপ্তাই রাইট ব্যাংক এলাকার বাসিন্দা ফারহানা আহমেদ পপি ও মিজানুর রহমান রাসেল জানান, গতকাল সোমবার ইফতারের পর নতুন বাজারে যাওয়ার উদ্দেশে বের হলে বিদ্যুৎ ভবনের নিচে হাতির মুখোমুখি হন। পরে তাঁরা চেঁচামেচি করে হাতি তাড়ান। যখন-তখন এভাবে হাতির পালের আগমনে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ও চলাচল ব্যাহত হচ্ছেন বলে জানান তাঁরা।
কাপ্তাই প্রজেক্ট এলাকার বাসিন্দা সুবল দাশ বলেন, ‘দুই দিন আগে চৌধুরীছড়া নিচের বাজারে আমি হাতির মুখোমুখি হই। একটুর জন্য প্রাণে বেঁচে যাই।’
কাপ্তাই পিডিবির স্টাফ বকুল বলেন, এক দিন আগে বিদ্যুৎ ভবনে ডিউটিরত অবস্থায় রাতে হাতির সম্মুখীন হই। পরে দৌড়ে গিয়ে বিদ্যুৎ ভবনে ঢুকে আত্মরক্ষা করি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার আবু সুফিয়ান বলেন, ‘বনের মধ্যে খাদ্য না থাকায় হাতি লোকালয়ে এসে তাণ্ডব করছে। আমরা অপরিকল্পিতভাবে বন কেটে জুম চাষ করছি, আবার কেউ কেউ বনের গাছ কেটে বন উজাড় করছি। ফলে হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। তাই সবার উচিত হাতির আবাসস্থল যাতে ধ্বংস না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা।’