শেষ দিনে বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ৩৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে গেলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি শিরীণ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪
  • ২৫১ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী ভিসি শিরীণ আখতার দায়িত্বের শেষ দিনে অন্তত ৩৭ কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। নতুন ভিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত কোনো ধরনের বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বিভিন্ন পদে এই নিয়োগ দেওয়া হয়।
এ নিয়ে গত তিন মাসে একই প্রক্রিয়ায় অন্তত ১০৫ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। ভিসির পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য শিক্ষক সমিতি আন্দোলন শুরু হলে একের পর এক নিয়োগ দেন তিনি।

অধ্যাপক শিরীণ আখতারের শেষ কার্যদিবসে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের ছয়জন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সাতজন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের এলাকা ফতেপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের নিয়োগের অফিস আদেশ যাচাই করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

অধ্যাপক শিরীণ আখতারকে সরিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মো. আবু তাহেরকে গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ১৯তম ভিসি হিসেবে বুধবার তিনি দায়িত্ব নেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো শূন্য পদে নিয়োগ দিতে হলে বিজ্ঞপ্তি দিতে হয়। এরপর প্রার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাই করে মৌখিক অথবা ব্যবহারিক পরীক্ষা নিতে হয়। পরে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশের আবেদন অনুমোদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে পাঠানো হয়। সিন্ডিকেট নিয়োগের চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দেয়। কিন্তু বিদায়ী ভিসির শেষ দিনে এসব নিয়মনীতি মানা হয়নি।

সাবেক ভিসি শিরীণ আখতার ভিসি পদে দায়িত্ব নিয়েছিলেন ২০১৯ সালের নভেম্বরে। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কোনো বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই নিয়োগ দেন ১৭২ জনকে। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির ১১৫ আর চতুর্থ শ্রেণির ৫৭ জন। এর বাইরে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ৩৬৮ জন শিক্ষক ও কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষক ১৩০ জন। অন্যরা কর্মচারী।

নিয়োগ পেলেন ছাত্রলীগ ও স্থানীয়রা : বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, অধ্যাপক শিরীণ আখতারের শেষ কর্মদিবসে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগসংক্রান্ত এসব অফিস আদেশ যাচাই–বাছাই করে দেখা গেছে, ঊর্ধ্বতন সহকারী, উচ্চমান সহকারী, নিম্নমান সহকারী, কম্পিউটার ল্যাব সহকারী, নিরাপত্তা প্রহরী, অফিস পিয়ন, বুক বাইন্ডার, ভোজনালয় সহকারী, সর্টার, পেশ ইমাম, ঝাড়ুদার, পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে এসব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির ১৫ জন ও চতুর্থ শ্রেণির ২২ জন। ছয় মাসের জন্য এসব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বেতন ধরা হয়েছে দৈনিক সর্বনিম্ন ৩৩০ থেকে ৬৫০ টাকা।

নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছয়জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলে- সাবেক সহসভাপতি আবু বকর, ইবনুল নেওয়াজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামিমা আক্তার, সাবেক সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইব্রাহীম হোসেন ওরফে সাদ্দাম, ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী নাঈম আজাদ ও বাদল কান্তি চাকমা। তারা সবাই তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী পদে নিয়োগ পেয়েছেন।

এ ছাড়া তাঁদের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের এলাকা ফতেপুর ইউনিয়নের মদনহাট গ্রামের মো. সোলাইমান, মোহাম্মদ জুবায়ের ও পাপড়ি রুদ্র, জোবরা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, ফতেপুর গ্রামের পারভীন আখতার, জয়নাল আবেদীন, ইব্রাহিম আহমেদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা সবাই চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে নিয়োগ পেয়েছেন।

এসব নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ে জানতে চেয়ে সদ্য বিদায়ী ভিসি শিরীণ আখতারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions