দেশের ব্যাংক সেক্টরে বেহাল দশা,আমানতকারীরা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৪
  • ১০৯ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে আসা ‘লাল, হলুদ ও সবুজ’ রেটিং নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে। রেটিং প্রকাশের পর থেকে একটি গ্রæপ ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
দেশের আর্থিকখাত দীর্ঘদিন থেকেই নানা কেলেঙ্কারিতে টালমাটাল অবস্থা। হলমার্ক কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি, বিসমিল্লাহ গ্রæপের অনিয়ম, জনতা ব্যাংকের অ্যাননটেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রুপের ঋণ অনিয়মের সুরাহা হয়নি।
দেশের অর্থনীতির পরিধির তুলনায় ব্যাংকের সংখ্যা অনেক বেশি। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে শতাধিক ব্যাংক-বিমা কোম্পানী। এসব ব্যাংকে প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক বিবেচনাকে বেশি গুরুত্ব দেয়ায় ব্যাংকগুলো পেশাদারিত্বের শৃঙ্খলায় চলছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্বল নজরদারি এবং বিভিন্ন সময় ভুল সিদ্ধান্ত ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যর্থতায় এসব ব্যাংকের অনেকগুলোরই টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি ইসলামী ব্যাংককে টিকিয়ে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ অর্থ সরবরাহ করেছে। তারপরও কয়েকটি ব্যাংকের নাজুক অবস্থা। অসচ্ছল ব্যাংকগুলোর চিত্র তুলে ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণা প্রতিবেদনে ব্যাংকগুলোর উপর ‘লাল, হলুদ ও সবুজ’ রেটিং করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার একটি ব্যাংককে টিকিয়ে রাখতে অন্য একটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে। ডলার সঙ্কট এবং ব্যাংকগুলোর নাজুক অবস্থায় গ্রাহকদের মধ্যে ভীতি আতঙ্ক শুরু হয়েছে। গত কয়েক মাসে দুই দফায় গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিজেদের কাছে রাখছেন এমন তথ্য প্রচার করা হয়। মূলত গ্রাহকদের মধ্যে কোন ব্যাংকে টাকা নিরাপদে থাকবে কি থাকবে না এ নিয়ে দ্বিধা-দ্ব›দ্ব শুরু হয়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমানতকারীদের সাবধান হতে হবে। কেউ অফার করলেই চলে যাওয়া যাবে না। দেখতে হবে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানটা কেমন। যাচাই-বাছাই ছাড়া আমানত রাখলে বিপদ হবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, ব্যাংক খাতে এখন সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে লাগামছাড়া খেলাপি ঋণ। এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংকের পরিচালকের সঙ্গে জোগসাজশ করে নামে-বেনামে ঋণ নেওয়া, ব্যাংকিং চানেল কিংবা অন্য কোনো চ্যানেলের মাধ্যমে টাকা পাচার করা, আমানতের হার বৃদ্ধি না পাওয়া, ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা না আসা- এগুলোই এখন খাতটির বড় সঙ্কট। আর তাই ব্যাংকগুলোর সূচক অনুযায়ী তালিকা করে ত্রæটি সংশোধন, শৃঙ্খলা ফেরানো বা সতর্ক করার জন্য এই রেটিং দরকার ছিল। তবে সেটা অবশ্যই সঠিক পন্থায় হতে হবে। যদিও আমি এই রেটিংয়ের খারাপ কিছু দেখিনা কারণ ধারণা নেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এটি করতে পারে। বছরের পর বছর খারাপ করা ব্যাংকগুলোর ত্রæটি ধরিয়ে দেয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ। আর শৃঙ্খলা ফেরাতে এ ধরনের পদক্ষেপ সবসময়ই নেয়া হয়।

দেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা। চলতি বছরের শুরুতেই নতুন করে আলোচনায় আসে দুর্বল ব্যাংকগুলো আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে একীভ‚ত হবে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে আসা ‘লাল, হলুদ ও সবুজ’ রেটিং। অবশ্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, এটিকে ধারণাভিত্তিক তালিকা বলেছে। এই তালিকার ওপর ভিত্তি করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রেটিং গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আলোচনা আরও ঘনীভ‚ত হয়েছে। আমানতকারীরা দ্বিধা-দ্ব›েদ্ব ভুগছেন। ব্যাংকে আমানত রাখার ক্ষেত্রে কোন ব্যাংক ভালো, কোন ব্যাংক খারাপ আবার কোন ব্যাংকে রাখবেন এ নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছেন। বিশেষ করে দুর্বল ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে গত বৃহস্পতিবার এক্সিম ব্যাংক পিএলসি দুর্বল পদ্মা ব্যাংক পিএলসিকে একীভূত করার জন্য বোর্ডে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই দুর্বল ব্যাংকের গ্রাহকরা এখন কি করবেন। দুর্বল ব্যাংক থেকে টাকা তুলে কোথায় রাখবেন। কারণ, সঞ্চয়পত্রের সুদ হারও ব্যাংকের চেয়ে এখন কম। দুর্বল ব্যাংকগুলো ভালো ব্যাংকগুলোর সঙ্গে একীভ‚ত হলে তার আমানতকারীদের স্বার্থের কোনও হানি হবে না জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের রেটিং প্রকাশের পর থেকে একটি গ্রæপ ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে বিভিন্ন ব্যাংক নিয়ে। এমনিতেই দেশের আর্থিকখাত দীর্ঘদিন থেকেই নানা কেলেঙ্কারিতে টালমাটাল অবস্থা। এখনো সেই হলমার্ক কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি, বিসমিল্লাহ গ্রæপের অনিয়ম, জনতা ব্যাংকের অ্যাননটেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রæপের ঋণ অনিয়মের সুরাহা হয়নি। এ ছাড়া আলোচিত ঘটনাগুলোর অন্যতম ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমান পদ্মা ব্যাংক) অনিয়ম, ইউনিয়ন ব্যাংকের বেনামি ঋণ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের ঘটনা। এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংকের ঋণ অনিয়মের ঘটনা কয়েক বছর ধরেই আলোচনায়। সর্বশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে ন্যাশনাল ব্যাংকের বোর্ডে আনা হয়েছে পরিবর্তন। আর এসব অনিয়মকে উসকে দিয়েছে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে একটি বিতর্কিত শিল্প গ্রæপের জোরপূর্বক কয়েকটি ব্যাংকের মালিকানা দখল। এসব কেলেঙ্কারিতে আর্থিকখাতে অনেকটাই আস্থার সঙ্কট ছিল। সেখান থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল ব্যাংকগুলো। এরমধ্যে আবার গত বছরের শেষ দিকে দেশের ব্যাংকিংখাতে এক সময়ে আস্থার নাম ইসলামী ব্যাংকগুলোতে তারল্য সঙ্কট দেখা দেয়। এমনকি গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর তারল্য সঙ্কটে থাকা ইসলামী ধারার সাত ব্যাংককে ২২ হাজার কোটি টাকা ধার দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে আমানতকারীরা নতুন করে উদ্বেগে পড়ে যান। এরপর আবার গত কয়েকমাস ব্যাংকে আমানত বাড়ছিল। বিশেষ করে আমানত সংগ্রহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১২ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন সুদহারের নির্দেশনা তুলে নেয়। আগে আমানত সংগ্রহে সুদহার ছিল সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ। এখন যা বাজারের উপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে তারল্য সঙ্কট অনেকটা কেটে যাচ্ছিল। কিন্তু নতুন করে ব্যাংকগুলোর রেটিং প্রতিবেদন প্রকাশ পাওয়ায় আর্থিকখাতে নতুন শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে নানামুখী সঙ্কট আর সরকারি ব্যাংকগুলো যখন খেলাপি ঋণে জর্জরিত তখন গত কয়েক বছরে বিদেশি ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকের আমানত রাখার প্রবণতাও বেড়েছে। এই ধারাবাহিকতায় রেটিংয়ে বিদেশি ব্যাংকগুলোর অবস্থা ভালো দেখানো হয়েছে।

এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল বলেন, ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে কোন ব্যাংক ভালো, কোন ব্যাংক খারাপ আবার কোন ব্যাংক থাকছেনা এরকম নানা কথাবার্তা বলা হচ্ছে। এসব কারণে ব্যাংক খাতে একটি আতঙ্ক আছে। তবে ব্যাংকে আমানতকারীদের টাকা নিরাপদে আছে থাকবে, এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। আর দুর্বল ব্যাংকগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাই গ্রাহকদের ভয়ের কিছু নেই। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘লাল, হলুদ ও সবুজ’ তালিকা এক ধরনের সতর্কবার্তা এবং দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করে ওইসব ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেয়ার জন্য। আমি মনে করি এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের দৈনন্দিন তদারকি কার্যক্রমের অংশ। তাই এ নিয়ে আমানতকারীদের আতঙ্কের কিছু নেই।

সূত্র মতে, ব্যাংকে টাকা রাখলে বিপাকে পড়বে আমানতকারীরা অথবা টাকা নেই ব্যাংকে এমন একটি বার্তা স¤প্রতি ব্যাংকপাড়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেক আমানতকারী। অনেকেই ব্যাংকে আমানত সুরক্ষিত কি না, জানতে ব্যাংকের শাখাগুলোতে যোগাযোগ করছেন। দেশ-বিদেশ থেকে ব্যাংকারদের কাছে, ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকর্তা এমনকি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন পর্যায়ে টেলিফোন আসছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যাংকে তারল্যের সঙ্কট নেই। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হয়নি। তাই আতঙ্কের কিছু নেই। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক তারল্য সঙ্কট নেই বললেও ব্যাংক ও আর্থিকখাতে চলছে আমানত সংগ্রহে এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা। ব্যাংকের কর্মীরা গ্রাহক ও বিভিন্ন দফতরে আমানতের জন্য ভিড় করছেন। কোনো কোনো দুর্বল ব্যাংক আমানত সংগ্রহের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ ১৩-১৪ শতাংশ পর্যন্ত সুদ অফার করছে। এ ধরনের উচ্চ সুদে আমানত নিলে সে প্রতিষ্ঠানকে বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী কমপক্ষে ১৬-১৭ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে হবে। এছাড়া কয়েকটি দুর্বল নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আমানত পেতে সর্বোচ্চ ১৭-১৮ শতাংশ পর্যন্ত সুদ প্রস্তাব করছে। সেক্ষেত্রে ঋণ দিতে হবে ২০-২১ শতাংশ সুদে। এই অসম প্রতিযোগিতার কারণে ঋণের সুদও বেড়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, এতে ঋণগ্রহীতারা পড়ছেন বিপাকে। এছাড়া উচ্চ সুদের এ টাকা ফেরত আসবে কিনা, সে বিষয়েও নেই কোনো নিশ্চয়তা। অবশ্য আর্থিকখাতের বিশ্লেষকরা এটিকে আর্থিকখাতের জন্য অশনিসঙ্কেত বলছেন।

এদিকে দেশীয় ব্যাংকের ওপর আস্থা কমে যাওয়ায় অনেক আমানতকারী বিদেশি ব্যাংকে তাদের অর্থ স্থানান্তর করছেন। সর্বশেষ ডিসেম্বরে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বিদেশি ব্যাংকে আমানত বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। সিটি ব্যাংক এনএ’র বাংলাদেশের সাবেক সিইও মামুন রশিদ বলেছেন, স্থানীয় কিছু ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে উচ্চ-ঝুঁকির কারণে কম মুনাফা থাকা সত্তে¡ও সচেতন আমানতকারীরা বিদেশি ব্যাংকে তাদের আমানত রাখতে পছন্দ করেছেন।

একাধিক বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানিয়েছেন, ডলার সঙ্কট, আইএমএফ’র ঋণ এবং সংস্কারের নানামুখী আলোচনায় দীর্ঘদিন থেকেই ব্যাংকিংখাতে অস্থিরতা চলছে। পাশাপাশি ব্যাংক মালিকদের নেয়া খেলাপি ঋণ ও ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর অনিয়ম ও সুশাসনের অভাবে ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা বিরাজমান। এমনকি কিছুদিন আগেও গ্রাহকরা আতঙ্কিত হয়ে ব্যাংক থেকে নগদ টাকা উত্তোলন করে বাসাবাড়ি ও অফিসে রাখতে শুরু করেছিলেন। অবশ্য সে অবস্থা থেকে কিছুটা উত্তরণ ঘটেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহককে ব্যাংকে ফেরাতে নানামুখী উদ্যোগও নিয়েছে। আমানতের সুদহার সীমা তুলে নিয়েছে। ফলে অনেক আমানতকারী আবার ব্যাংকে ফিরতে শুরু করেছেন। এছাড়া দেশের ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরাতে রোডম্যাপ বা পথনকশা ঘোষণা করে তা বাস্তবায়ন শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে দুর্বল ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ভালো অবস্থানে থাকা ব্যাংকগুলোর সঙ্গে একীভ‚ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যাংক পরিচালক হওয়ার ক্ষেত্রেও শর্ত কঠিন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই আশাকরছি বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘লাল, হলুদ ও সবুজ’ রেটিং নিয়ে যেসব সমস্যা তৈরি হয়েছে তা অচিরেই কেটে যাবে।

উল্লেখ্য, নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও পরিচালনা পরিষদের দায়িত্বহীনতায় দেশের ব্যাংকগুলোর স্বাস্থ্য দিন দিন অবনতি হচ্ছে। রাজনৈতিক ক্ষমতায় একাধিক ব্যাংকের মালিক স¤প্রতি দেশে কার্যরত ৬১টি ব্যাংকের মধ্যে ৫৪টি ব্যাংক নিয়ে এক সমীক্ষা চালিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গোপন এ সমীক্ষায় ৯টি ব্যাংককে লাল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এসব ব্যাংকের অবস্থা খুবই খারাপ। আর ২৯টিকে হলুদ তালিকাভুক্ত করে দুর্বল ব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংক হেলথ ইনডেক্স অ্যান্ড হিট ম্যাপ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। স¤প্রতি ২০২৩ সালের জুন থেকে অর্ধবার্ষিক আর্থিক কর্মক্ষমতার ভিত্তিতে অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য ব্যাংকের স্বাস্থ্য স‚চক তৈরি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা বিভাগ। তবে ভিন্নতা থাকায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক বিশ্লেষণ থেকে বাদ পড়েছে। অন্যদিকে, পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ইনকিলাব

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions