রাঙ্গামাটি:- রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালীতে হাতি হত্যার পর পুঁতে রাখার অপরাধে বন্যপ্রাণী আইনে একটি মামলা করা হয়। হাতির হাড়গোড় উদ্ধারের পর দুজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে চন্দ্রঘোনা থানায় এ মামলা করা হয়।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) মামলাটি করেন কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের আওতাধীন রাইখালী ইউনিয়নের কারিগর পাড়াস্থ রাইখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জাহেদুল ইসলাম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ মার্চ সন্ধ্যায় রাইখালী ইউনিয়নের ডংনালা আমতলীস্থ চন্দনাইয়া কাঁটাপাহাড়ের নিচে ডংনালা গ্রামের রাইখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা চায়থুই মারমার ছেলে উষামং মারমা (৩৮) ও একই এলাকার বাসিন্দা কালাচান মারমার ছেলে উথোয়াই প্রু মারমা (৪৬) এ দুজনসহ ১৫-২০ জন দুষ্কৃতকারী একটি বন্যহাতিকে হত্যা করেছে।
গোপন সূত্রে সংবাদটি জানার পর রেঞ্জ কর্মকর্তার নেতৃত্বে বন কর্মচারীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজাখুঁজির পর দেখতে পায় দুষ্কৃতকারিরা ওই বন্যহাতিকে হত্যা করে হাতির মাংস ভাগ ভাটোয়ারা করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে হাতির দেহের অংশবিশেষ হাড়, নাড়ি-ভুঁড়ি, চোয়ালের নিচের অংশ মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখে।
বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কাপ্তাই উপজেলা পশু চিকিৎসা কেন্দ্রের সার্জন ডা. মো. জাকিরুল ইসলামকে জানালে তিনি সরজমিনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরবর্তীতে মাটির নিচে বন্যহাতির মাংসবিহীন পায়ের হাড়, কিছু মাংস, মল, রক্তমিশ্রিত বালু ময়নাতদন্তের জন্য সংগ্রহ করেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সকাল প্রায় ১০টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে যে কোনো সময় হাতিটিকে হত্যা করা হয়েছে। বিবাদীরা উক্ত ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল। উক্ত তারিখে ঘটনার দিন বিবাদীগণ যোগসাজশ করে সংঘবদ্ধভাবে বন্যহাতিটি হত্যা করে দেহের অনান্য অংশ ভাগভাটোয়ারা করে নেন। যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করেছে।
মামলার বাদী রাইখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, বন্যহাতি সুরক্ষায় আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি। কিন্তু রাইখালীতে হাতি হত্যার মতো জঘন্য কাজ যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ মামলাটি দায়ের করেছি। অনেকটা নিশ্চিত হয়ে ঘটনায় জড়িত দুই ব্যক্তির নাম এবং সঙ্গে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে চন্দ্রঘোনা থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চন্দ্রঘোনা থানার ওসি আনছারুল করিম জানান, বন বিভাগ থেকে হাতি হত্যার বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।