পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কমপ্লেক্স,প্রকল্পের মেয়াদ বাকি চার মাস কাজই শুরু করেনি গণপূর্ত

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ২৫৯ দেখা হয়েছে

রাঙ্গামাটি:- পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে বাকি আছে চার মাস। রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদী রূপনগরে ভবনটির জন্য বরাদ্দ করা হয় খাসজমি। তবে সেখানে ভূমিসহ নানা জটিলতায় প্রকল্পটির কাজ শুরু করতে পারেনি গণপূর্ত অধিদপ্তর। গতকাল আঞ্চলিক পরিষদের মূল ভবনের লে-আউট (কাগজে আঁকা ভবনের নকশাকে প্রকৃত মাপজোকের মাধ্যমে জমিতে স্থানান্তর) করার কথা ছিল। কিন্তু জমি পরিদর্শন ও লে-আউট করতে গেলে সেখানকার বাসিন্দাদের তোপের মুখে পড়েন পরিষদের সদস্য এবং নির্বাহী কর্মকর্তারা। পরে লে-আউট না করেই ফিরে আসেন তারা।

খাসজমিতে বসবাসকারীদের দাবি, ২০০১ সাল থেকে তারা রূপনগর এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন। সরকারি এই জমি আঞ্চলিক পরিষদের স্থায়ী ভবনের জন্য বরাদ্দ করায় উচ্ছেদ আতঙ্কে রয়েছেন। তবে জমি সরকারি হলেও তারা কিনে নিয়ে বসবাস করছেন। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক দলের নেতারা এসব খাসজমি স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করেছেন। সে হিসেবে তারা বসবাস করে আসছেন।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদী রূপনগর (পুরাতন রেডিওস্টেশন) এলাকায় আঞ্চলিক পরিষদ কমপ্লেক্সের জন্য ১৪ দশমিক ৭৫ একর ভূমি নামজারি করা হয়। ২০১৯ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি পাস হয়। ২০২০ সালে ছয়তলার চারতলা ভবন নির্মাণের জন্য তিন বছর মেয়াদি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। নির্ধারিত সময়েও প্রকল্পের কাজ শুরু করতে না পারায় আরো দুই বছর বাড়ানো হয়। বর্ধিত সময় অনুযায়ী প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে চলতি বছরের জুনে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ৩৭ কোটি টাকা।

এদিকে আঞ্চলিক পরিষদের কর্মকর্তাদের ভূমি পরিদর্শনের খবর পেয়ে গতকাল সকাল থেকেই প্রকল্প এলাকায় অবস্থান করছিলেন খাসজমিতে বসবাসকারীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আঞ্চলিক পরিষদের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গেলে সেখানকার বাসিন্দারা বিক্ষোভ শুরু করেন।

চম্পা আক্তার নামে আরেকজন বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন অধিকারের জন্য। এখানে ২০০১ সাল থেকে বসবাস করছি। এখানে তখন কোনো ফাঁকা জমি ছিল না, জঙ্গল ছিল। আমরা জঙ্গল পরিষ্কার করে বসবাস শুরু করেছি। যারা বসবাস করছেন অনেকেই দিনমজুর। আমরা জমি কিনে বসবাস করছি। কিছু দিন পরপর আমাদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এখান থেকে উঠে যেতে হবে। আমরা কেন উঠে যাব, এই জায়গা তো কিনেছি। এখানে যারা থাকে তারা একদিন কাজে না গেলে ঘরে খাবার জুটে না। আমরা এখানেই থাকতে চাই। এখান থেকে উচ্ছেদ করলে আমাদের যাওয়ার জায়গা থাকবে না।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা চাকমা বলেন, ‘গতকাল আঞ্চলিক পরিষদের মূল ভবনের লে-আউট করার কথা ছিল, কিন্তু করতে পারিনি। আমরা এসে দেখি, সেখানে অনেক লোকজন। তাদের কিছু বক্তব্য আছে, আমরা তাদের বক্তব্য শুনেছি। তাদের বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে আমাদের আলোচনায় বসা দরকার। তারা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করবেন; পরে আমরা একটি বৈঠকে বসব, যেন সবাই মিলে শান্তিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারি। এটি সরকারি প্রকল্প। আমরা যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারি, সেজন্য সবার সহযোগিতা লাগবে।’

রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘জমিটি আঞ্চলিক পরিষদ কমপ্লেক্সের জন্য নির্ধারিত। তবে এখানে দীর্ঘদিন ধরে কিছু মানুষ বসবাস করছে। আমরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবে এখানে এসেছি। এখানে যারা বসবাস করছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের বক্তব্য শুনেছেন এবং নীতিমালার আলোকে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করব।’বণিক বার্তা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions