শিরোনাম
জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবিকে ‘চক্রান্ত’ বললেন মির্জা ফখরুল হাসিনার আমলে বছরে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে : টিআইবি সাইবার আইনের সব মামলা প্রত্যাহার চেয়ে যৌথভাবে শ্বেতপত্র প্রকাশ নান্দনিক রূপে ফিরছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শাহ আমানত সেতুতে বেগম খালেদা জিয়ার নামফলক পুনঃস্থাপন সাফজয়ী নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা ‘প্রতি ৪ দিনে একজন সাংবাদিক হত্যা, হয়নি বিচার’ : জাতিসংঘ রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে অকার্যকর হয়ে পড়েছে কোটি টাকার সোলার ফেন্সিং সেনা শাসন ডেকে আনবেন না: বিএনপির তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশে ভিপি নুর স্পেনে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০৫

৮ লাখ মামলা ঝুলছে পাঁচ বছরের বেশি

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৬৫ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজধানীর বাড্ডার আফতাবনগরে নিজ ফ্ল্যাটে হত্যার শিকার হন ও-লেভেল পড়ুয়া মনজিল হক। হত্যাকান্ডের পর তার চাচা ফারুক মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে একটি মামলা করেন। তবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে উঠে আসে মনজিলের সৎ মা লায়লা ইয়াসমিন লিপি ও মামলার বাদী মনজিলের চাচা ফারুক মিয়া ওই হত্যাকান্ডের মূল হোতা। সম্পত্তির লোভেই মনজিলকে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকান্ডের প্রায় সাত বছর পার হলেও শেষ হয়নি মামলার বিচার।

শুধু মনজিল হত্যা মামলাই নয়, দেশের অধস্তন আদালতে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন রয়েছে প্রায় ৮ লাখ মামলা। আইনজ্ঞরা বলছেন, বিচারক স্বল্পতার পাশাপাশি আইনের ত্রুটি, সাক্ষী হাজির না হওয়াই মামলাজটের অন্যতম কারণ। এসব সমস্যা দ্রুত দূর করে পুরনো মামলা নিষ্পত্তিতে নিতে হবে বিশেষ ব্যবস্থা।
সুপ্রিম কোর্টের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিগত ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের সব অধস্তন আদালতে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন মামলা ছিল ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৬১টি। এর মধ্যে ৪ লাখ ৮০ হাজার ১১৫টি দেওয়ানি এবং ৩ লাখ ১৬ হাজার ৯৪৬টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এ সময় সারা দেশের সব আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ৪২ লাখ ১৮ হাজার ৮৭৫টি। এর মধ্যে উচ্চ আদালতের উভয় বিভাগে বিচারাধীন মামলা ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৪৯৭টি এবং অধস্তন আদালতে ৩৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৭৮টি মামলা ছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দায়িত্ব নিয়েই পুরনো মামলা দ্রুত নিষ্পিত্তিতে ৮ বিভাগের জন্য পৃথক আটটি মনিটরিং সেল গঠন করেছিলেন। প্রতি বিভাগেরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল হাই কোর্ট বিভাগের একজন করে বিচারপতিকে। বর্তমান প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব নিয়ে এই মনিটরিং সেলগুলো পুনর্গঠন করে বড় বিভাগগুলোর জন্য হাই কোর্ট বিভাগের দুজন করে বিচারপতিকে দায়িত্ব দিয়েছেন।

তিনি বলেন, মনিটরিং সেল মামলাজট নিরসনে কাজ করছে। বিশেষ করে ৫-১০ বছরের পুরনো মামলার তালিকা করে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোকে ওইসব মামলায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ঝুলে থাকা দেওয়ানি মামলাসমূহের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ১২ হাজার ৩০৯টি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৭২ হাজার ৭৯টি, রাজশাহী বিভাগে ৬৫ হাজার ৩৮৫টি, খুলনা বিভাগে ৮৭ হাজার ১৯৪টি, বরিশাল বিভাগে ৪৩ হাজার ৬৪৪টি, সিলেট বিভাগে ১৮ হাজার ৭৩৮টি, রংপুর বিভাগে ১৮ হাজার ৪৫৭টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬২ হাজার ৩০৯টি দেওয়ানি মামলা পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন রয়েছে।

অন্যদিকে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ঝুলে থাকা ফৌজদারি মামলাও সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে। এর সংখ্যা ঢাকা বিভাগে ১ লাখ ২৩ হাজার ৮২৪টি। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৮ হাজার ১১৩টি, রাজশাহী বিভাগে ৩৯ হাজার ১০৬টি, খুলনা বিভাগে ২৭ হাজার ৭৮৭টি, বরিশাল বিভাগে ৮ হাজার ৮০৩টি, সিলেট বিভাগে ১১ হাজার ২৭৮টি, রংপুর বিভাগে ৩০ হাজার ৫২টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৭ হাজার ৯৮৩টি ফৌজদারি মামলা পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন রয়েছে। জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তিতে বিচারক ও আইনজীবীদের দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। বিচারকরা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করলে যেমন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে, তেমনি ঘন ঘন মামলা মুলতবির আবেদন না করে আইনজীবীরাও ভূমিকা রাখতে পারেন মামলাজট কমাতে। তিনি বলেন, আমাদের বিচারক সংখ্যাও অনেক কম। এটাও মামলা জটের অন্যতম কারণ। তাই অধিক সংখ্যক বিচারক নিয়োগ দিয়ে আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, অনেক সময় সাক্ষী হাজির করতে না পারার কারণেও মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হয়। তাই সাক্ষী হাজির করা যাদের দায়িত্ব, তাদেরও নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে।

মামলাজট নিরসনে বিচারকদের ওপর চাপ কমানো প্রয়োজন বলে মনে করেন হাই কোর্টের সাবেক বিচারপতি ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশে একজন বিচারকের ওপর যে চাপ থাকে তা বিশ্বের কোথাও নেই। নিম্নœ আদালতের বিচারকরা ‘ওভার লাড’ নিয়ে কাজ করে থাকেন। প্রতিদিন তাদেরও অজস্র মামলার শুনানি গ্রহণ করতে হয়। তাই মামলাজট কমাতে হলে অধিক সংখ্যাক বিচারক নিয়োগ দিয়ে বিচারকদের ওপর চাপ কমানো অত্যন্ত জরুরি।বাংলাদেশ প্রতিদিন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions