বান্দরবান:- বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের জলপাইতলী এলাকায় মিয়ানমার থেকে ছোড়া গোলার আঘাতে ২ জন নিহত হয়েছেন। নিহত দুই জনের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নারী, অপর জন রোহিঙ্গা পুরুষ।
নিহত নারী জলপাইতলী গ্রামের বাদশা মিয়ার স্ত্রী হোসনে আরা (৫৫)। নিহত রোহিঙ্গার নাম নবী হোসেন (৬৫)। তিনি বালুখালী আশ্রয়শিবিরের ৮-ই ব্লকের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি হোসেনে আরার বাড়িতে ধানক্ষেতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে এসেছিলেন।
আজ সোমবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামের একটি রান্নাঘরের ওপর মর্টার শেলটি এসে পড়লে তাঁরা মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড জলপাইতলীর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মেম্বার শফিকুল ইসলাম।
নিহতের প্রতিবেশী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. শাহজাহান বলেন, একজন নারী ও তাঁর বাড়িতে কাজ করা এক রোহিঙ্গা মারা গেছেন। তা ছাড়া এক শিশু আহত হয়েছে।
শাহজাহান বলেন, দুপুরে রান্নাঘরে রোহিঙ্গা কৃষিশ্রমিককে খাবার দিচ্ছিলেন হোসনে আরা বেগম। তখন মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হয়। ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন। একই ঘটনায় হোসনে আরা বেগমের নাতি গুরুতর আহত হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সরজমিন দেখা গেছে, মর্টার শেলের আঘাতে রান্নাঘরটি বিধ্বস্ত এবং লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। পুরো রান্নাঘরের রক্তের ছোপ ছোপ দাগ। ছড়ানো-ছিটানো খাবার।
এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ঘটনার পর র্যাব-পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে।
ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহফুজ ইমতিয়াজ বলেন, ‘দুজনের মধ্যে নারীর পরিচয় পাওয়া গেলেও অপরজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। আমরা তার পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করছি। ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ঘুমধুমের এই এলাকাটি বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার অন্তভুক্ত। এর পাশেই মিয়ানমার সীমান্ত। সেখানে মিয়ানমার বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। কিছুক্ষণ পরপরই ভারী আগ্নেয়াস্ত্রের শব্দ। এতে পুরো সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় চলে যাচ্ছেন। দুজনের মৃত্যুর পর ওই বাড়ির আশপাশের পরিবারগুলো বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে।