বান্দরবান:-বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংর্ঘষ চলছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সীমান্তের বাসিন্দারা। এদিকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সীমান্তবর্তী পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমার আবেদনের প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তের কাছে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বন্ধ ঘোষণা করা স্কুলের তালিকায় রয়েছে, বাইশপারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু পশ্চিমকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
সীমান্তবর্তী প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মিয়ানমার-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত ঘেঁষে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও মিয়ানমার জান্তা সরকার মাঝে ব্যাপক গোলাগুলি ঘটনা ঘটেছে । সীমান্ত ঘেঁষে ওপারে গোলা নিক্ষেপের পাশাপাশি বিমান থেকে গোলা বর্ষণ করা হচ্ছে। মিয়ানমার-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষে মিয়ানমার অংশে ৩ দিনে অর্ধশতাধিক মর্টার শেলের প্রকট শব্দে ৪৭ ও ৪৮ নম্বর সীমান্ত পিলারের বাংলাদেশের অভ্যন্তর এসব গোলার আওয়াজে কেঁপে উঠেছে। আর এ কাঁপুনিতে আতঙ্কিত হচ্ছে সীমান্তবাসী।
ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সোমবার সকালে ও মর্টারশেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। এতে কেউ হতাহত না হলেও আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্তে বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দারা।
ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্রো বলেন, আমরা যারা এপারে বসবাস করছি সবাই আতঙ্কে আছি। কখন কোন সময় কি হয় জানি না। বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাহিরে না যাওয়ার জন্য স্থানীয় জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে।
জানা গেছে, মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রদেশে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসা সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘাত বর্তমানে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। কদিন ধরেই সীমান্ত এলাকায় ভারী অস্ত্র থেকে ছোড়া গুলি এবং মর্টারশেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে আগুনের ধোঁয়া। এর আগেও মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া গোলা বাংলাদেশ সীমান্তে এসে পড়ে।
বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান বলেন, মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যার প্রভাব বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যেও এসে পড়েছে। এ অবস্থায় মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্কতা থাকার নির্দেশ পাশাপাশি সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে।