শিরোনাম
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার আগে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ কোটা সংস্কার আন্দোলন চিকিৎসাধীন তিনজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ২০৬,ছুটির দিনেও রাজধানী ফাঁকা এএসআই মোক্তাদিরের ওপর নৃশংসতায় স্তব্ধ পরিবার সারা দেশে অভিযান,এলাকা ভাগ করে ‘ব্লক রেইড’ ‘গুলি আর কারা করবে, আমরা নিরস্ত্র ছিলাম’-মিফতাহ সিদ্দিকী ‘এত মৃত্যু দেখে কেউ চুপ থাকতে পারে না’ কোটা বিক্ষোভ দমনের পর প্রান্তসীমায় বাংলাদেশ,ক্রাইসিস গ্রুপের রিপোর্ট নতুন নির্বাচন দাবি ড. ইউনূসের গণতন্ত্রে রাষ্ট্রের মালিক জনগণ ফেসবুক খুলবে কবে? এই মাধ্যম এখন আন্তর্জাতিকভাবে জাতিসংঘ ঘোষিত মৌলিক মানবাধিকার দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান ৫৫০ মামলা ৬ হাজারের বেশি গ্রেপ্তার

শিল্পকারখানায় গ্যাসের জন্য হাহাকার

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ৭৮ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রিরোট:- দুই দিন তীব্র সংকটে চট্টগ্রাম নগরীর বাসাবাড়িতে গ্যাসের সরবরাহ কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। ঢাকায় আবাসিকে গ্যাসের চাপ বেড়েছে। কিন্তু শিল্পকারখানায় এখনো চলছে হাহাকার। গ্যাসের অভাবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নরসিংদী, আশুলিয়া ও সাভারের শিল্পকারখানাগুলোয় উৎপাদন বন্ধের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সময়মতো ক্রেতাকে পণ্য সরবরাহ করা নিয়ে আতঙ্কে আছেন পোশাকশিল্পের মালিকেরা।

গাজীপুরের প্যাসিফিক ফাইবার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু রায়হান বলেন, ‘গ্যাস-সংকটের কারণে আমাদের অবস্থা খুবই করুণ। আমরা উৎপাদন করতে না পারলেও কারখানা চালু রাখতে হচ্ছে। ডিজেল দিয়ে বা সিএনজি গ্যাস এনে কারখানা চালু রাখার চেষ্টা করছেন অনেকে।

তারপরেও উৎপাদন ৮০ থেকে ৯০ ভাগ কমে গেছে। এ অবস্থায় মাস শেষে শ্রমিকের বেতন, ব্যাংকের পাওনা শোধ করা সম্ভব না-ও হতে পারে। তা ছাড়া, লক্ষ্য অনুযায়ী উৎপাদন না হওয়ায় ক্রেতার বেঁধে দেওয়া পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। এতে অনেক ক্রেতা হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন শিল্পমালিকেরা।’

গ্যাস-সংকটের কারণে টঙ্গী বিসিক এলাকায় বেশির ভাগ সময় কারখানার উৎপাদন বন্ধ রাখতে হচ্ছে। সেখানে কারখানা থাকা এবি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বদরুল হাসান তাসলিম বলেন, এক-দেড় মাস ধরেই গ্যাস-সংকটের মধ্যেই ফ্যাক্টরি চালাতে হচ্ছে। গ্যাসের চাপ যেখানে ৫-১৫ পিএসআই প্রয়োজন, সেখানে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১ থেকে ২ পিএসআই। আবার অনেক সময় চাপ শূন্যে নেমে আসে।

কালিয়াকৈর এলাকার সাদমা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএর সহসভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, ‘টঙ্গী থেকে কালিয়াকৈর লাইনে ৩৫টির মতো কারখানা রয়েছে। এগুলোতে গ্যাস ছাড়া উৎপাদন চলে না। আমরা কাউকে সমস্যাগুলো বোঝাতে পারছি না। মাস শেষে শ্রমিকের বেতন, ব্যাংকের সুদসহ কিস্তি এবং বায়ারদের সময়মতো অর্ডারের পণ্য সরবরাহ অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

এই ব্যবসায়ী অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘মন্ত্রী গ্যাসের দাম বাড়ানোর সময় আমাদের কথা দিয়েছিলেন, প্রয়োজনে বিদেশ থেকে গ্যাস এনে শিল্পকারখানায় নির্দিষ্ট চাপে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা হবে। কিন্তু সরকার সে কথা রাখেনি। আমরা বেশি দাম দিলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গ্যাস পাচ্ছি না।’

শিল্পে তীব্র গ্যাস-সংকটের কথা স্বীকার করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, মাস শেষে পুরো টাকা দিয়েও অনেকে ঠিকমতো গ্যাস পাচ্ছেন না। অনেক স্থানে গ্যাসের চাপ কম। তাই নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতে মিটার লাগিয়ে সমস্যা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে।

এদিকে দুদিন সমস্যার পরে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আবাসিক গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। তবে সব শিল্পকারখানায় সংকট কাটেনি। কারখানার মালিকেরা বলছেন, বয়লার চালাতে প্রতি ঘনফুটে ১৫ পিএসআই গ্যাসের চাপ থাকা দরকার। কিন্তু অনেক কারখানায় চাপ কমে প্রতি ঘনফুটে ১ থেকে ২ পিএসআইতে দাঁড়িয়েছে।

বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ৭৫ শতাংশ শিল্পকারখানায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও ২৫ শতাংশে এখনো গ্যাসের ফ্লো স্বাভাবিক হয়নি। ফলে বয়লার উৎপাদন করা যাচ্ছে না।

যদিও কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) প্রকৌশলী মো. শফিউল আজম খান বলেন, শনিবার রাত থেকে পুরো চট্টগ্রামে গ্যাস পাচ্ছেন গ্রাহকেরা। গ্যাস না পাওয়ার কোনো অভিযোগ আসেনি।

এদিকে নরসিংদীতেও গ্যাস-সংকটে বস্ত্রশিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। শিল্পমালিকেরা জানিয়েছেন, ডাইং ও কম্পোজিট গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল মিলগুলো অনেকটা সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। বস্ত্রশিল্পের মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এতে।

নদী বাংলা গ্রুপের পরিচালক ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সহসভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নরসিংদীতে মূলত দুটি অংশে গ্যাসের দুটি লাইন রয়েছে। এর একটি লাইনে মারাত্মকভাবে গ্যাস-সংকট হচ্ছে, অপরটিতে অল্প সমস্যা হচ্ছে।

দেশের অন্যান্য স্থানের মতো সাভার ও আশুলিয়াতেও গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সাভারের উপমহাব্যবস্থাপকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাভার ও আশুলিয়ায় দেড় হাজার শিল্পকারখানায় গ্যাসের সংযোগ রয়েছে। আবাসিক সংযোগ রয়েছে ৫০ হাজার। সিএনজি ফিলিং স্টেশন রয়েছে ৩৫টি। এসব শিল্পকারখানাসহ বাসাবাড়ি ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনের দৈনিক চাহিদা ২৬০ মিলিয়ন ঘনফুট, কিন্তু সরবরাহ মাত্র ১৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এতে এই এলাকায় তীব্র গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সাভারের ভারপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম বলেন, প্রয়োজনের তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ প্রায় অর্ধেকে নামায় সাভার ও আশুলিয়ায় গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কারখানাগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আবাসিক গ্রাহকেরা গ্যাস পাচ্ছেন না।’আজকের পত্রিকা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions