ডেস্ক রির্পোট:- চীনের মধ্যস্থতায় জান্তাবাহিনীর সঙ্গে অস্ত্রবিরতিতে গিয়েছিল মিয়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জোট থ্রি ব্রাদার্স অ্যালায়েন্স। সম্প্রতি জোটের অংশীদার তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) জানিয়েছে, জান্তাবাহিনী এরই মধ্যে অস্ত্রবিরতির শর্ত ভঙ্গ করেছে এবং শান রাজ্যে বিদ্রোহীদের বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। এই অবস্থায় ফের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহের বুধবার ও বৃহস্পতিবার চীনের মধ্যস্থতায় আলোচনায় বসে উত্তর মিয়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী—মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ)। সেই বৈঠকে অস্ত্রবিরতি সম্মত হয় উভয় পক্ষ। কিন্তু সম্মতির এক দিন না পেরোতেই অস্ত্রবিরতির শর্ত ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে থ্রি ব্রাদার্স অ্যালায়েন্স।
টিএনএলএ জানিয়েছে, শুক্রবার নাগাদ মিয়ানমারের জান্তাবাহিনী উত্তর শান রাজ্যে অন্তত ১৯টি স্থানে গোলা হামলা চালিয়েছে। এর পাশাপাশি মান্দালয়ের মগকে টাউনশিপেও হামলা চালিয়েছে জান্তাবাহিনী। গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, কিয়াউকমে শহরে জান্তা সেনারা পার পোট গ্রামে দুবার গোলাবর্ষণ করেছে এবং মোগোকে ফিউ ইয়ং গ্রামে নিয়াং কোন গ্রামে গোলাবর্ষণ করেছে।
এ ছাড়া, উত্তর শান রাজ্যের হিসিপাও শহরের জান্তা সেনারা একই দিনে মান হে গ্রামে গোলাবর্ষণ করেছে এবং লাশিও টাউনশিপের কোন পাউং, মা কি নু এবং এ নাইন গ্রামে গোলাবর্ষণ করেছে জান্তা সেনারা।
এসব অবস্থানে হামলার পরপরই অস্ত্রবিরতি ভেঙে আবারও যুদ্ধের ময়দানে ফিরেছে টিএনএলএ সেনারা। গত শনিবার কিয়াউকমে শহরে জান্তাবাহিনীর সদস্যরা টিএনএলএর একটি ঘাঁটিতে হামলা চালায়। পরে সেখানে টিএনএলএ বাহিনীর সঙ্গে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলে।
এর আগে, গত শুক্রবার টিএনএলএ জানিয়েছিল—চীনের মধ্যস্থতায় আলোচনার মাধ্যমে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছেন তারা।
মিয়ানমারের জান্তাবাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসে। তারপর থেকেই দেশটিতে বিদ্রোহ-আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। জান্তাবাহিনী ব্যাপক দমনপীড়ন চালানো শুরু করলে দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী জান্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে।
সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবর উত্তর মিয়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী—মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ) জান্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াই শুরু করে। মাঝে চীনের মধ্যস্থতায় এই তিন গোষ্ঠীর সঙ্গে একবার সমঝোতার চেষ্টা হলেও তা ব্যর্থ হয়।