শিরোনাম
খাগড়াছড়িঃ সংঘাত থেকে শুরু হোক শান্তির পদযাত্রা। আওয়ামী লীগ জাপাসহ ১১ দলের কার্যক্রম বন্ধ চেয়ে রিট মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে ২৫২ এসআইকে অব্যাহতির প্রসঙ্গ পার্বত্য টাস্কফোর্সে ফ্যাসিস্ট হাসিনার নিয়োগ পাওয়া চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তারা বহাল তবিয়তে কোন জাদুতে সওজের কাজ বাগাল অনভিজ্ঞ এনডিই,প্রাক-অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক পদোন্নতির হাওয়া বইছে প্রশাসনে, এসএসবির টেবিলে ৮৫০ নথি সাবেক ডিএমপি কমিশনার ফারুকের ৩ হাজার কোটি টাকার সম্পদ! বিশ্বের বহু পলাতক স্বৈরশাসক টাকা দিয়ে রাজনীতিতে ফিরেছে,হাসিনার শক্তি পাচারের টাকা পর্যটকদের জন্য আগামী ১ নভেম্বর থেকে রাঙ্গামাটি ও ৫ নভেম্বর থেকে খাগড়াছড়ি খুলে দেওয়া হচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৭৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

চট্টগ্রামে এক বছরে কর্মক্ষেত্রে মারা গেছেন ১১৮ শ্রমিক

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ২৫৩ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- চট্টগ্রামে ২০২৩ সালে কর্মরত অবস্থায় মারা গেছেন বিভিন্ন পেশার ১১৮ শ্রমিক। নিহতদের মধ্যে সর্বাধিক ৩৩ জন নির্মাণ খাতের, পরিবহন খাতের ২৪ ও কৃষি খাতের ১১ শ্রমিক রয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ১৩৪ শ্রমিক। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন নির্মাণ ও পরিবহন খাত ছাড়াও জাহাজভাঙা, পোশাক শ্রমিক ও দিনমজুর। শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতারা বলছেন, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের ন্যূনতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা পূরণ হচ্ছে না। এমনকি যারা নিরাপত্তা সরঞ্জাম দিচ্ছে সেগুলোও পর্যাপ্ত নয়। যে কারণে শ্রমিকরা কাজের ভালো পরিবেশ পাচ্ছেন না।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামে ২০২৩ সালে ১১৮ কর্মরত শ্রমিক নিহত হয়েছেন। ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ২৩৮ জনে। যদিও শুধু বিএম ডিপোয় বিস্ফোরণ ঘটনায় ২০২২ সালে প্রায় ৫০ শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে চট্টগ্রামে জানুয়ারি-মার্চে মারা গেছেন ৪১ ও আহত হয়েছেন ৫৩ শ্রমিক। এপ্রিল-জুনে নিহত হয়েছেন ২১ ও আহত হয়েছেন ১৫ জন। জুলাই-সেপ্টেম্বরে নিহত হয়েছেন ২৪ জন। আহত হয়েছেন ১৭ এবং অক্টোবর-ডিসেম্বরে নিহত হয়েছেন ২৫ এবং আহত হয়েছেন ১৯ জন। এছাড়া তালিকার বাইরে ২০২৩ সালে জাহাজভাঙা শিল্পের সাত নিহত এবং ৩০ শ্রমিক আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২৩ সালে সর্বাধিক ৩৩ শ্রমিক মারা গেছেন নির্মাণ খাতের। এছাড়া পরিবহন খাতের ২৪, কৃষক ১১, জাহাজভাঙা শিল্পের সাত, সীমা অক্সিকো লিমিটেডের অক্সিজেন কারখানায় বিস্ফোরণে ছয়, দোকানের কর্মচারী তিন, এনজিওকর্মী তিন, নিরাপত্তাকর্মী তিন, ইপিজেডে দুই, গৃহকর্মী দুই, মৎস্য শ্রমিক চার, চা শ্রমিক দুই, পোশাক শ্রমিক এক, সরকারি জেটিতে এক, কাগজ কারখানায় এক, স্টিল মিলে এক এবং অন্যান্য খাতে ১৪ শ্রমিক মারা গেছেন।

এদিকে ২০২৩ সালে অক্সিজেন কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যুর পাশাপাশি ৩০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। এছাড়া জাহাজভাঙা শিল্পে ৩০, ইপিজেডে ১৫, নির্মাণ খাতে ১১, পরিবহন খাতে ১৫, কৃষি খাতে চার, চা শ্রমিক আটসহ বিভিন্ন খাতে ১৩৪ শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে আহত হয়েছেন।

চট্টগ্রামে ২০২৩ সালে কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন বিভিন্ন খাতের ২৮ শ্রমিক। অর্থাৎ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শ্রমিক মৃত্যুর হার ২৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

অন্যদিকে ২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৩৩ শ্রমিক, যা মোট নিহতের ২৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। শুধু চট্টগ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট এবং সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১ দশমিক ৭০ শতাংশ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া জাহাজভাঙা শিল্পে প্রতি বছর অসতর্ক অবস্থায় কাজ করায় অনেক শ্রমিক হতাহতের ঘটনা ঘটছে।

বিলসের সহকারী প্রোগ্রাম অফিসার ফজলুল করিম মিন্টু বলেন, ‘শ্রমিকদের কাজের নিরাপত্তা, কর্মপরিবেশ এবং তাদের বেতন-ভাতা নিয়ে কাজ করে বিলস। শ্রমিকরা কাজের শোভন পরিবেশ না পেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। বিলসের নিজস্ব গবেষণা সেল এবং সাপোর্ট সেন্টার প্রতিদিনের তথ্য সংগ্রহ করে সেটি নিরীক্ষা করে শ্রমিকদের মৃত্যু এবং আহতের চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছে। বেশির ভাগ ভারী শিল্প-কারখানায় শ্রমিকরা যথাযথ সেফটি নিয়ে কাজ করেন না। ভারী বা ঝুঁকিপূর্ণ কাজের জন্য শ্রমিকদের যেসব পোশাক দরকার সেগুলো সেই প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করার কথা থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর গাফিলতি থাকে। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদেরও গাফিলতিও আছে। শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত না হলে শ্রমিকদের কাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না। সেজন্য প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শ্রমিকদেরও নিরাপত্তা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

বিলসের লেবার রিসোর্স অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টারের তথ্যমতে, শিল্পঘন এলাকা হওয়ার কারণে চট্টগ্রামে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ নিয়ে বারবার প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। ২০২২ সালে ওয়ার্কার্স সেফটি অ্যান্ড রাইটসের তথ্যমতে সারা দেশে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৭১২ শ্রমিক মারা গেছেন। যার মধ্যে শুধু চট্টগ্রামেই মারা গেছেন ২৩৮ বা মোট মৃত্যুর ৩৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। বাকি ৬৩ জেলায় সে বছর মারা গিয়েছিলেন ৪৭৪ বা ৬৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অর্থাৎ শ্রমিকের মৃত্যুর তিন ভাগের এক ভাগ চট্টগ্রামে। মূলত ভারী ও ঝুঁকি শিল্প গড়ে ওঠার কারণে শ্রমিক মৃত্যু বা শ্রমিকের কর্মপরিবেশ নিয়ে আলোচনায় থাকে চট্টগ্রাম। শ্রমিকদের সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে বলে মনে করে সংগঠনটি।

বিএসবিআরের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হাসাইনু আরেফিন বলেন, ‘জাহাজভাঙা শিল্প আগামী কয়েক বছরের মধ্যে গ্রিন শিপইয়ার্ডে রূপান্তর হয়ে যাবে। তখন কাজ ম্যানুয়ালি না হয়ে অটোমেটিক হয়ে গেলে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ উন্নত হয়ে যাবে। সংগঠনের পক্ষ থেকে সব ইয়ার্ডকে যাতে দ্রুতই গ্রিন ইয়ার্ডের দিকে নিয়ে যাওয়া যায় সেসব বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শ্রমিকদের যেন কাজে কোনো ঝুঁকি না থাকে সেদিক বিবেচনা করেই কাজ করছি। তার পরও যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে আমরা আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছি। এই খাতের শ্রমিকদের পাওনা বা ক্ষতিপূরণ নিয়ে কোনো জটিলতা নেই।’বণিক বার্তা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions