স্পোর্টস ডেস্ক:-কিলিয়ান এমবাপ্পের গোলে শুরুতেই এগিয়ে গেল পিএসজি। প্রথম গোলে পরোক্ষ অবদান রাখার কয়েক মিনিট পর গোলের দেখা পেলেন নেইমার নিজেও।
কিন্তু তাদের এই স্বস্তি দীর্ঘস্থায়ী হলো না। দুটি গোলই শোধ করে দিল লিল। পরে আরও এক গোল করে অনেকটা সময় এগিয়েও রইলো তারা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এমবাপ্পের গোলে সমতায় ফিরলো পিএসজি। আর শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগে মেসির গোলে নাটকীয় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লো প্যারিসিয়ানরা।
ঘরের মাঠ পার্ক দেস প্রিন্সেসে আজ ফরাসি লিগ ওয়ানের ম্যাচে ৪-৩ গোলে জয় পেয়েছে ক্রিস্তফ গালতিয়েরের দল। এই জয়ে শীর্ষস্থান আরও মজবুত হলো তাদের। ২৪ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৫৭ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা মার্শেইয়ের চেয়ে যা ৭ পয়েন্ট বেশি। অন্যদিকে সমান ম্যাচ খেলে পাঁচে থাকা লিলের পয়েন্ট ৪১।
পিএসজির রক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন অনেকদিনের। মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেকে নিয়ে গঠিত শক্তিশালী আক্রমণভাগ দিয়ে রক্ষণের দুর্বলতা ঢাকে ফরাসি জায়ান্টরা- এমন সমালোচনা প্রায়ই শোনা যায়। লিলের বিপক্ষে তাদের রক্ষণভাগের সেই দুর্বলতা যেন একদম উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। যার জেরে তারা ৩টি গোল হজম করে। যদিও শেষ পর্যন্ত তাদের বিপদমুক্ত করে সেই আক্রমণভাগই।
শুরুতে পিএসজির রক্ষণে দারুণ কিছু আক্রমণ শানায় লিল। তবে স্রোতের বিপরীতে গোল পেয়ে স্বাগতিকরাই। একাদশ মিনিটেই এমবাপ্পের গোলে এগিয়ে যায় তারা। নেইমারের পাস ধরে দৌড়ে দুই লিল ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে দেন ফরাসি ফরোয়ার্ড। সতীর্থের গোলে অবদান রাখার মিনিট কয়েক পরেই গোলের দেখা পান নেইমার। এবারের গোলটির উৎস অবশ্য মেসি। তার বানিয়ে দেওয়া বল নিয়ে যৌথভাবে আক্রমণে ওঠে আসেন নেইমার ও ভিতিনহা। ভিতিনহার প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডার। কিন্তু বল চলে যায় নেইমারের পায়ে; যা থেকে ফাঁকা পোস্টে বলে পাঠিয়ে দেন তিনি।
দুই গোল হজম করে লিল অবশ্য থেমে থাকেনি। একের পর এক আক্রমণে পিএসজির রক্ষণকে পর্যুদস্ত করে রাখে তারা। ২৪তম মিনিটে এর ফলও আসে। দিয়াকাতের গোলে ব্যবধান কমায় সফরকারীরা।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলা শুরুর কিছুক্ষণ পর বড় ধাক্কা খায় পিএসজি। মাঝমাঠে লিলের খেলোয়াড় আন্দ্রের ভয়ানক ট্যাকেলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নেইমার। রেফারি শুরুতে খেয়াল না করলেও কিছুক্ষণ পর থামিয়ে দেন। মাঠেই শুশ্রূষা শেষে তাকে তুলে নেওয়া হয়। স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন তিনি। রিপ্লেতে দেখা যায়, আন্দ্রের বুটের আঘাত লাগার সময় নেইমারের পা বাঁকা অবস্থায় ছিল। স্পষ্ট দুশ্চিন্তার ছাপ পড়ে পিএসজি কোচ গালতিয়েরের কপালে।
নেইমার মাঠ ছাড়ার কিছুক্ষণ পর সমতায় ফেরে লিল। পিএসজির মিডফিল্ডার মার্কো ভেরাত্তির ফাউলে পেনাল্টি উপহার পায় তারা। আর তা থেকে লক্ষ্যভেদ করেন লিলের স্ট্রাইকার জোনাথান ডেভিড। ৬৯তম মিনিটে মিডফিল্ডার জোনাথান বাম্বার গোলে এগিয়েও যায় লিল। ওই গোলের পর পিএসজি ম্যাচ থেকে একপ্রকার ছিটকেই যায়। কিন্তু ৮৭তম মিনিটে আচমকা গোল করে সমতা ফেরান এমবাপ্পে।
এমবাপ্পের গোলের পর ম্যাচের ভাগ্য ড্রয়ের দিকেই গড়াচ্ছিল। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আচগে মেসি-জাদুর দেখা মিললো। পুরো ম্যাচে নিষ্প্রভ থাকা আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে ফ্রি-কিকে দৃষ্টিনন্দন এক গোল করলেন। তার বাঁকানো ফ্রি-কিক ঠেকানোর কোনো উপায় ছিল না লিল গোলরক্ষকের হাতে। শেষ পর্যন্ত ওই গোলেই নিশ্চিত হয় পিএসজির জয়।