খাগড়াছড়ি:- খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে স্কুলশিক্ষকের মারধরে আহত এক শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে সহপাঠীরা। আজ সোমবার উপজেলার গিরিকলি কিন্ডারগার্টেন ও পাবলিক স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কোচিং চলাকালে এ ঘটনাটি ঘটে। আহত শিক্ষার্থীর নাম মো. এমরান হোসেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মানিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনচারুল করিম বলেন, ‘৯৯৯-এ খবর পেয়ে স্কুলে পুলিশ যাওয়ার আগেই আহত ছাত্রকে সহপাঠীরা হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক, প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের রাতে থানায় ডেকে বিস্তারিত জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে উপজেলার গিরিকলি কিন্ডারগার্টেন ও পাবলিক স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কোচিং চলাকালে স্কুলের পেছনে হঠাৎ পরপর দুবার আতশবাজির শব্দ হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন থেকে স্কুলে ফোন আসলে শিক্ষকেরা তৎপর হন। একপর্যায়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী (ব্যবসায় শাখা) মো. এমরান হোসেন ও শিশির মারমাকে সন্দেহ করে অফিসে ডেকে পাঠান সহকারী শিক্ষক মো. এমদাদ হোসেন।
তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে শিক্ষার্থী মো. এমরান হোসেনকে মারধর করেন শিক্ষক মো. এমাদুল হক হোসেন। এ সময় এই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে সহপাঠীরা তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরই মধ্যে কে বা কারা জরুরি পুলিশ সেবা ৯৯৯-এ সাহায্য চেয়ে কল করে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে ঘটনার সত্যতা পায়।
আহত শিক্ষার্থী মো. এমরান হোসেন অভিযোগ করে বলে, ‘এমাদুল স্যার সময়-অসময়ে ছেলে-মেয়েদের বকাঝকা ও জুতাপেটা করেন। এ নিয়ে অনেকবার স্কুলে সালিসও হয়েছে।’
এমরান হোসেন আরও বলে, ‘আজও তিনি আতশবাজির ঘটনায় আমাকে সন্দেহ করে অফিসে ডেকে পাঠান। যাওয়া মাত্র আমার শরীরের দিকে গরম চা ছুড়ে মারেন। পরে চেয়ার থেকে উঠে আমার অণ্ডকোষ লক্ষ্য করে পরপর দুবার লাথি মারেন। এ সময় আমি পড়ে গিয়ে চিৎকার করলে বন্ধুরা এসে আমাকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে।’
অন্যদিকে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মো. এমাদুল হক বলেন, ‘স্কুলের আঙিনায় আতশবাজির বিষয়ে ওই ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদকালে সে গায়ের ওপর আঘাতের চেষ্টা করলে আমি কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মারি। এতে সে অভিনয় করে নাটকের সূত্রপাত ঘটায় এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়। একজন ছাত্রের কাছে এ ধরনের আচরণ অপ্রত্যাশিত।’
উপজেলা হাসপাতালের চিকিৎসক মহি উদ্দীন বলেন, ‘ওই স্কুলছাত্রের অণ্ডকোষের ওপর অংশে ব্যথা অনুভব করায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে।’
শিক্ষার্থীর চাচা সাবেক ইউপি সদস্য মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘ওই স্কুলের একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অতীতেও ছাত্রদের মারধর ও অশ্লীল ভাষায় বকাঝকা করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করব।’
স্কুলের অধ্যক্ষ মো. মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘আতশবাজির বিষয়ে জানতে সেনাবাহিনী ফোন করার পর ছাত্রটিকে সন্দেহ হয়। এতে শিক্ষক তাকে জিজ্ঞাসাবাদকালে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটে যায়। এ বিষয়ে শিক্ষকের অপরাধ থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থা নেবে।’ আজকের পত্রিকা