শিরোনাম
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ, বদিউল বললেন, ‘বিবেচনায় রয়েছে’ বান্দরবানে নৌকা বাইচ দিয়ে ক্রীড়া মেলা শুরু রাঙ্গামাটিতে সাফজয়ী পাহাড়ের তিন কন্যাকে উষ্ণ সংবর্ধনা পলাতক পুলিশ সদস্যদের বেতন বন্ধ, মামলার প্রস্তুতি শেখ মুজিব দেশে ফ্যাসিবাদের জনক : মির্জা ফখরুল অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীর হাতে পিটুনি নেতাদের বাঁচার উপায় বাতলে দিলেন তারেক রহমান দেশে মাদক ঢুকছে নতুন রুটে, পাচার হচ্ছে ট্রেনেও নামে-বেনামে দেওয়া হয় গায়েবি মামলা,দণ্ডিত বিএনপি নেতাদের নির্বাচনী দুয়ার খুলছে

আ.লীগ দেশকে দুইভাগ করে ফেলেছে : মির্জা ফখরুল

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪
  • ১৩৭ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ দেশটাকে দুইভাগে ভাগ করে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশটাকে তারা দুইটি ভাগ করে ফেলেছে, একটা ভাগ হচ্ছে আওয়ামী লীগ, আরেকটা ভাগ বিরোধী দল। এই অবস্থা তৈরি করে তারা এই দেশকে নিজেরাই সাম্প্রদায়িক একটা অবস্থা তৈরি করেছে। তারা আবার দাবি করে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে তাদের নাকি এই জেহাদ সব সময় অব্যাহত থাকবে। যারা সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে, যারা নিজেরা গোষ্ঠি তৈরি করেছে, বর্ণবাদ সৃষ্টি করছে তাদের মুখে একথা শোভা পায়। শুধু কথা বলে মানুষের সম্পদ লুট করে, মানুষজনকে সর্বশান্ত করে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা যায় না। গতকাল বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির ‘স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটি’র উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দেশের অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ শুধু ফ্যাসিস্টদের কবলে পড়েনি, বাংলাদেশ বর্ণবাদীদের কবলে পড়েছে। আমাদের বিএনপি যারা করে তাদের ঘর-বাড়ি পর্যন্ত দখল করে নেয়া হচ্ছে, আমাদের বিএনপি যারা করে তাদের জমি দখল করে নেয়া হচ্ছে, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে নেয়া হচ্ছে, তাদের ছেলে-মেয়েদেরকে চাকরির কোনো সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। এমনকি দুঃসম্পর্কের আত্মীয় যারা আছে তাদেরকে বিএনপি হিসেবে চিহ্নিত করে বঞ্চিত করা হচ্ছে, এটা বর্ণবাদ ছাড়া কিছু নয়।

তিনি বলেন, প্রত্যেকদিন দেখছেন কি হারে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে, কিভাবে ব্যাংকিং ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধবংস করা হচ্ছে? বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমন একটা অবস্থা তৈরি করেছে যেখানে স্বেচ্ছাচারিতা, বিভিন্ন রকমের অসামাজিক কার্যকলাপ ছাড়া সেখানে আর কিছু হচ্ছে না। যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে তাদেরকে দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। যাদের যোগ্যতা নেই তাদেরকে ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, সব প্রতিষ্ঠানগুলোতে এমনকি প্রাইমারি স্কুলগুলোতেও সেই দলীয়করণ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এক কথায় পুরো দেশকে, রাষ্ট্রকে তারা গিলে ফেলেছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি।

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার পদক্ষেপগুলোও তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেখবেন যা কিছু বাংলাদেশে শুভ কাজ হয়েছেন তা বিএনপির নেতারাই করেছেন।
তরুন সমাজকে জেগে উঠার আহ্বান রেখে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, চলমান আন্দোলনে এতো ত্যাগের পরেও আমার কাছে মনে তরুনদেরকে আরো শক্ত করে জেগে উঠতে হবে, যুবকদেরকে জেগে উঠতে হবে। ২৮ তারিখের ঘটনায় পরে আমার কাছে মনে হয়েছে যে, আমরা তরুনদেরকে আমরা বোধহয় সেভাবে নামাতে পারিনি। আমার কাছে মনে হয়েছে মানুষকে জাগিয়ে তোলা এটা এখন আমাদের প্রধান কাজ। মানুষকে আবারও সংগঠিত করতে হবে, জনগণকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, নিজের অধিকারের জন্য, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদেরকে অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, গাজায় প্যালেস্টাইনে দীর্ঘ ৭ মাস ধরে নির্বিচারে একটা গণহত্যা চলছে অথচ তারই প্রতিবেশি মুসলিম দেশগুলো এখন পর্যন্ত সেভাবে কথা বলছে না, গোটা বিশ্ব সেইভাবে কথা বলছে না। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটা রেজুলেশন পাস হয়েছে। তার পরে গাজায় বোমা মেরেছে প্রায় ১৫ জন হত্যা করেছে। আজকে ইউক্রেনে রাশিয়া আক্রমন করেছে, সেখানে যুদ্ধ করছে প্রায় দুই বছর ধরে, সেখানে অসংখ্য লোক মৃত্যুবরণ করছে, মারা যাচ্ছে, সারা বিশ্বের যারা বৃহৎ-ধনী দেশ তাদের একটাই লক্ষ্য সেটা হচ্ছে তাদের স্বার্থ আদায় করা।

সংগঠন শক্তিশালী করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলন আরো জোরদার করার ঘোষণা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে, বিশ্বপ্রেক্ষিতকে সামনে নিয়ে, সামগ্রিক অবস্থাকে সামনে নিয়ে আমাদের রাজনীতি, আমাদের কৌশল আবারো সেভাবে এগিয়ে নিতে হবে, যেভাবে গত দিনগুলোতে এগিয়েছি। সকলকে মনে রাখতে হবে, সংগ্রামের কোনো বিকল্প নেই, আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই এবং গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা, ভোটের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করা তার কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য সেই সংগ্রাম আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমাদেরকে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলে সেই সংগ্রামকে আরো বেশি জোরদার করতে হবে।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না, তারা দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অধিকারও বিশ্বাস করে না। ৭২-৭৫’এ তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) একবার একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলো জাতীয় সংসদের ভেতরে দাঁড়িয়ে মাত্র ১১ মিনিটে এবং এবার এরা সারাদেশে অলিখিত বাকশাল কায়েম করেছে। আমরা নয় বিশ্বের একটি নামী দামী নিউজ ম্যাগাজিন ‘টাইম ম্যাগাজিন’ তারা বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের নাম দিয়েছে বাকশাল-টু। কাজেই এই সরকার একদলীয় সরকার তাদের কথা আমরা শুধু বলছি না, সারা বিশ্ব বলেছে যে, এই সরকার জগদ্দল পাথরের মতো বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের ওপর চেপে বসেছে এবং তাদের ওপরে জুলুম-অত্যাচার-নির্যাতন করছে, বাংলাদেশের বিরোধী দলের বিরুদ্ধে এক লক্ষ মামলা দেয়া হয়েছে ৫০ লাখ নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেন, আমি আজকে ছাত্র সমাজ যুব সমাজ যারা এখানে শ্লোগান দিচ্ছেন এই দেশ তো আপনাদের দেশ। আপনাদের আগের ছাত্ররা জীবন দিয়েছে, আমি তার সাক্ষী। একাত্তর সালে আমি তাদেরকে নিয়ে যুদ্ধ করেছি। তাই তরুন সমাজকে বলব, প্রিয় দেশ আপনাদেরকে ডাকছে, দেশবাসী আপনাদেরকে ডাকছে। আপনারা ঐক্যবদ্ধ হোন, মোবাইলটা বাদ দিয়ে রাস্তায় নেমে আসুন। শ্লোগান আর ভোটের মাধ্যমে কাজ হবে না, আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। এই অবস্থার অবসান করতে হবে। জিয়াউর রহমান মানে আমাদের আদর্শ। ৬ বছর রাষ্ট্র শাসন করার পরে তার ব্যাংকে একটা টাকাও নেই, কোনো জমি নেই, বাড়ি নেই, জীবন উৎসর্গ করে গেছেন দেশের জন্য। সেই নেতার আদর্শের মানুষজন আমাদের কি শুধু বসে বসে খালি শ্লোগান দিলে হবে? দেশের ডাকে সাড়া দিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।

স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী ও সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনিরুল হক চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বক্তব্য রাখেন।###

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions