ডেস্ক রির্পোট:- টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মহাসড়কে ছিনতাইকালে দুই পুলিশ কনস্টেবলকে হাতেনাতে ধরার পর পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা। গতকাল সোমবার রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার ধেরুয়া এলাকা থেকে তাঁদের ধরা হয়। পরে স্থানীয়রা তাঁদের মির্জাপুরের দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করে।
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর থানায় কর্মরত ওই দুই পুলিশ কনস্টেবল হলেন— টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার মিরেকপুর গ্রামের কৈলা রাজবংশীর ছেলে রিপন রাজবংশী ও সিরাজগঞ্জ জেলা চৌহালী উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের ময়নাল হকের ছেলে মো. মোহসীন মিয়া।
মানিকগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান সোমবার রাতেই ওই দুই পুলিশ কনস্টেবলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন।
মির্জাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম জানান, ছিনতাইয়ের শিকার পিকআপ চালক রানা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। পিকআপ চালক রানার বাড়ির জেলার মধুপুর উপজেলায়।
জানা গেছে, ওই দুই পুলিশ কনস্টেবল ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উপজেলার ধেরুয়া রেলওভারব্রিজের দক্ষিণ পাশে একটি পিকআপকে সিগনাল দিয়ে গতিরোধ করেন। পরে চালক ও হেলপারকে পিকআপ থেকে নামিয়ে পাশেই দেওহাটা পুলিশ ফাঁড়ির কাছে নিয়ে গিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে ১১ হাজার ৫৫০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় চালক ও হেলপারদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে ওই দুই পুলিশ সদস্যদের ধরে ফেলেন। পরে তাঁদের কাছ থেকে ৩০ হাজার ২১০ টাকা, একটি মোটরসাইকেল, একটি হ্যান্ডকাফ, পুলিশের পোশাক ও বেল্ট উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের তল্লাশির নামে মহাসড়কের উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানি, পুষ্টকারী চরপাড়া, দেওহাটা ও ধেরুয়া এলাকায় প্রতিনিয়ত ট্রাক, পিকআপ ও মোটরসাইকেল চালকসহ বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে ছিনতাই ও চাঁদাবাজি হয়ে থাকে। পুলিশ ইউনিফর্ম পরিহিতরা এবারে ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করার কারণে মহাসড়কের ওই অংশ অনিরাপদ হয়ে পড়েছে পড়েছে। গত ১১ মার্চ রাতে মহাসড়কের পুষ্টকারী চরপাড়া এলাকায় গোপাল রাজবংশী নামের একজন মাছ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পুলিশ পরিচয়ে ৫৬ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় মির্জাপুর থানায় অভিযোগ করলেও তার টাকা উদ্ধার হয়নি।
মির্জাপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম ফারুক সিদ্দিকী বলেন, ‘যখন পুলিশের পোশাক পরিহিতরা কোনো যানবাহন ও ব্যক্তিকে আটকিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি করে থাকে সেখানে সাধারণ মানুষের সন্দেহ বা চ্যালেঞ্জ করার সাহস থাকে না। ফলে তাঁরা সহজে গ্রেপ্তার ও মামলার ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষ, যানবাহনের চালক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সর্বস্ব লুটে নেয়।’
মির্জাপুর থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘তারা দুজন পুলিশের পোশাক পরিহিত ছিল। ছিনতাইকারী, ছিনতাইকারীই তারা পুলিশ সদস্য হতে পারে না।’
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সোমবার রাতেই অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।