ডেস্ক রির্পোট:- অত্যাবশ্যকীয় ১১৭টি ওষুধের দাম বাড়ানো হয়নি বলে জানিয়েছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ। আর স্ট্যান্টের (হার্টের রিং) দাম বাড়ানো হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে হৃদরোগীদের স্ট্যান্টের দাম নিয়ে আয়োজিত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তারা এ কথা জানান।
সচিব বলেন, আজ ওষুধের দাম নিয়ে আমরা পুরোপুরি আলোচনা করতে পারিনি, সময়ের স্বল্পতা ছিল। তবে স্ট্যান্টের দাম নিয়ে আলোচনা করেছি। এখানে এই খাতের অংশীজনরা ছিলেন। আমরা বলেছি যে স্ট্যান্টের দামের বিষয়ে সরকার যেমন জনগণের স্বার্থ দেখছে তেমনি ব্যবসায়ীদের স্বার্থও দেখবে।
তিনি বলেন, আবার যারা স্ট্যান্ট ব্যবহার করছেন তাদের ওপর যেন বাড়তি কোনও চাপ না পড়ে, অস্বাভাবিক দামে কিনতে না হয়, সেটাও দেখতে হবে। এ দুটির সমন্বয় করে আজকের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মূলত আমেরিকা ও ইউরোপ থেকে এই দুটি পণ্য আমদানি করা হয়। বাংলাদেশে আমেরিকা থেকে আসা স্ট্যান্টের ব্যবহার ৭৫ শতাংশ। বাকিটা আসে ইউরোপ থেকে। ইউরোপের পণ্যের ডিস্ট্রিবিউটররা আজকের বৈঠকে অংশ নেননি। তবে তাদের সঙ্গেও আমরা কথা বলবো।
তিনি জানান, স্ট্যান্টের দাম আগে যেটা ছিল সেটাই আমরা রেখেছি। আর লাভ করতে গেলে একটা মার্কার প্রাইস দিতে হয়। তাদের প্রশাসনিক খরচ, ভ্যাট ও ট্যাক্স মিলিয়ে মার্কার প্রাইস এক দশমিক দুই শতাংশ নির্ধারণ করা আছে। তাছাড়া আমদানি মূল্যের সঙ্গে একটা যুক্ত করা আছে। কাজেই স্ট্যান্টের দাম আগে যেটা ছিল সেটাই থাকবে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে সমন্বয় করে এই দাম নির্ধারণ হয়েছিল। আমি মনে করি সরবরাহকারী ও ভোক্তা দুই পক্ষই এতে লাভবান হবে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, যেসব ওষুধ না খেলে মানুষ মারা যেতে পারে, সেই ১১৭টি ওষুধের দাম এক পয়সাও বাড়ানো হয়নি। বর্তমানে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। আর ওষুধের কাঁচামাল বিদেশ থেকে আনতে হয়। সেই অনুযায়ী, কিছু দামে সমন্বয় করা হয়েছে। তবে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম এক পয়সাও বাড়ানো হয়নি। ১১৭টি ওষুধের দাম সরকার আগে যা ঠিক করে রেখেছিল, সেগুলো আমরা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি।
তিনি বলেন, যেসব পণ্য আমরা বিদেশ থেকে আমদানি করি সেগুলোর দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে কিছু সমন্বয় করা হয়েছে। তবে স্বাভাবিকভাবে বেশি বাড়তে দেওয়া হয়নি।
মহাপরিচালক বলেন, এর বাইরে কিছু নতুন নতুন ওষুধ এসেছে। সেগুলোর দাম বাড়ছে আমি স্বীকার করি। তবে তা ডলারের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে।
ওষুধের দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে, এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এটা কোনও কোনও ক্ষেত্রে সঠিক, কোনও ক্ষেত্রে সঠিক নয়। সঠিক না এ কারণে যে কিছু কিছু ওষুধের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। কিছু কিছু ওষুধের দাম ফ্লেক্সিবল (নমনীয়) আছে। সেটার দাম নির্ধারণে আজ আমরা বৈঠক করতে পারিনি। তবে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে বৈঠক করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ সময়ে স্ট্যান্টের দাম বর্তমানে কত আছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত বছরের ১২ ডিসেম্বরের যেটা ঠিক করা হয়েছে সেটাই থাকবে।
এর আগে গত ডিসেম্বরে হার্টের রিংয়ের দাম সমন্বয় করে সরকার। তখন দাম কমিয়ে স্ট্যান্ট আমদানি প্রতিষ্ঠান ভেদে খুচরা মূল্য সর্বনিম্ন ১৪ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সে সময় দেওয়া নির্দেশনায় হার্টের রিংয়ের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হাসপাতালের নোটিশ বোর্ডে প্রদর্শনের নির্দেশনাও দেওয়া হয়।