ডেস্ক রিপেৃাট:- কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে পাহাড় কেটে জলাধার ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণের ঘটনায় ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আইনি নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাকিয়া সুলতানা এই নোটিশগুলো সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠিয়েছেন। শিগগিরই নোটিশগুলো গ্রহীতাদের পাওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বেলা চট্টগ্রামের সমন্বয়ক মুনীরা পারভীন।
এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলার পরিচালকের কাছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম মহানগরীসহ বিভাগের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলার সব পাহাড় কাটা বন্ধে ২০১১ সালে বেলা একটি জনস্বার্থমূলক মামলা (নং ৭৬১৬/২০১১) করে। মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১২ সালের ১৯ মার্চ আদালত উল্লিখিত জেলা গুলোর সব পাহাড় কাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত উল্লিখিত এলাকায় পাহাড় কেটে কোনো আবাসন প্রকল্প বা ইটভাটা স্থাপন করা হলে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বন উজাড় বন্ধ করতে এবং পাহাড়ি প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যের আধার অক্ষুণ্ণ রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও পাহাড়ধস অব্যাহত থাকায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি এ বিভাগের সব পাহাড়ের তালিকা (দাগ, খতিয়ানসহ) এবং পাহাড়গুলোর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রস্তুত ও তা আদালতে জমা দেওয়া এবং ২০১২ সালের ১৯ মার্চ আদালতের রায়ের আলোকে পাহাড় কাটা রোধে সরকারি সংস্থাগুলো কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, সে বিষয়ে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।
আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশ থাকা স্বত্বেও ৬ নং নোটিশ গ্রহীতা কক্সবাজারের কলাতলী এলাকা পাহাড় কেটে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে বলে বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশ পায়। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী কক্সবাজারের কলাতলী বাইপাস সড়কের পাশে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আবাসিক ফ্ল্যাট উন্নয়ন প্রকল্প-১-এর এলাকায় নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের পূর্ব পাশে গাছে ভরপুর বিশাল একটি পাহাড় কাটা হচ্ছে। আর এই পাহাড়ের কাটা মাটি দিয়ে আবার ভরাট করা হচ্ছে পাশের একটি জলাধার।
প্রচলিত আইন অনুসারে পাহাড় কাটা/মোচন ও জলাধার ভরাট সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ৬ নং নোটিশ গ্রহীতা দেশের প্রচলিত আইন পরিপন্থী কাজে লিপ্ত এবং আদালতের আদেশের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করছেন।
নোটিশ গ্রহীতাদের প্রতি কক্সবাজারের কলাতলীতে পাহাড় কাটা বন্ধের দাবি ও পাহাড়ের কাটা অংশে দেশীয় প্রজাতির বৃক্ষরোপণ ও রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ এবং ভরাটকৃত জলাশয় পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার অনুরোধ জানিয়েছে বেলা। একই সঙ্গে কক্সবাজারের অন্য পাহাড়গুলোকে ধ্বংস থেকে রক্ষায় সব ধরনের কার্যকর আইনি পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।