রাফা নিয়ে বিশ্বনেতাদের উদ্বেগ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৯৮ দেখা হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:- ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নিরাপদ অঞ্চল বলে বিবেচিত দক্ষিণের শহর রাফা থেকে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বলেছে ইসরায়েল। তবে ছোট একটি এলাকা থেকে জোরপূর্বক লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে সরানো নিয়ে এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ দেখা গেছে।

সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রবিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতি জানানোর পাশাপাশি বলা হয়েছে, ‘রাফা থেকে জোরপূর্বক নির্বাসনের যেকোনো প্রচেষ্টার নিন্দা করে রিয়াদ।’ পাশাপাশি এর প্রতিক্রিয়া গুরুতর হতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটি।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানান, রাফাতে ইসরায়েলি সেনাদের হামলার শঙ্কায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন তিনি। কারণ অঞ্চলটিতে বর্তমানে গাজার অর্ধেকেরও বেশি বাসিন্দা অবস্থান করছেন। তিনি লেখেন, ‘অগ্রাধিকার হতে হবে জিম্মিদের বের করে আনা এবং একটি যুদ্ধবিরতি। এর পর স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দিকে অগ্রসর হওয়া।’

ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলও শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, সেখানে সামরিক অভিযান পরিচালনা করা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে এবং এটি মিসরের সঙ্গেও ইসরায়েলের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। তিনি এক্সে লেখেন, ‘জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য আলোচনা শুরু করা এবং শত্রুতা বন্ধ করাই হলো রক্তপাত এড়ানোর একমাত্র উপায়।’

ইসরায়েলের পরিবহনমন্ত্রী মিরি রেগেভ জানিয়েছেন, মিসরের সীমান্তের কাছে হওয়ায় রাফাতে সামরিক অভিযানের বিষয়ে কায়রোর সংবেদনশীলতাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে তারা। এ বিষয়ে মিসরের সঙ্গে আলোচনাও চলছে। রেগেভের আশা, খুব শিগগিরই এই ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে এ আলোচনার বিষয়ে কায়রোর পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।

এদিকে ফিলিস্তিনি পুলিশের বরাতে রবিবার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার পৃথক ইসরায়েলি বিমান হামলার ঘটনায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। একই সময় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ দাবি করেছে, শনিবার তাদের হামলায় দুই জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাসহ তিন জন হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তবে এই দুই দাবির কোনো যোগসূত্রের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ছাড়া আল-নাজ্জর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় ১২ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাফাই কেবল একমাত্র শহর, যেখানে এখনো ইসরায়েলি সেনারা প্রবেশ করেনি। যদিও সেখানে প্রতিদিনই বিমান হামলার ঘটনা ঘটছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্যানুসারে বর্তমানে এই শহরটিতে ১৩ থেকে ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি রয়েছেন। যাদের অধিকাংশই ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে অন্যান্য শহর থেকে এখানে এসেছেন।

তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সেখানে অভিযান চালাতে বদ্ধপরিকর। এরই মধ্যে এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি রাফা থেকে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে ‘নিরাপদ পথ’ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা এটি (অভিযান শুরু) করতে যাচ্ছি।’

গাজা এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপের উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। মিসরও কার্যত সীমান্ত বন্ধ করে রেখেছে। ফলে এত বিপুলসংখ্যক মানুষ কোথায় যাবে, তা স্পষ্ট নয়। তবে নেতানিয়াহুর দাবি, তারা একটি বিস্তর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন।

এদিকে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনিবিষয়ক বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার ফ্রান্সেসকা আলবানিজের কঠোর সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট দিয়েছে ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আলবানিজের দাবি ছিল, ইহুদি বিদ্বেষ থেকে নয়, ইসরায়েলের নিপীড়নের কারণেই অক্টোবরের হামলা হয়েছে। সূত্র : সিএনএন/আল-জাজিরা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions