নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ বিক্রি করছে ফার্মা সল্যুশনস : ভোক্তা অধিদপ্তর

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ২১৪ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি রোশের মোড়কে নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ বাজারে বিক্রি করছে ফার্মা সল্যুশনস নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এই নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ বিক্রি মানুষ হত্যার মতো অপরাধ।

রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ বিক্রয় প্রতিরোধে আমদানিকারকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব তথ্য জানান।

ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, রাজধানীর নয়াপল্টনে বহুজাতিক এক প্রতিষ্ঠানের ডায়াবেটিস স্ট্রিপের মোড়ক ছাপা হয়। এটি উদ্ভাবনী শক্তির বড় বহির্প্রকাশ হলেও লজ্জারও বিষয়। লাজ ফার্মার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে আমরা ফার্মা সল্যুশনসের বিরুদ্ধে অননুমোদিত ডায়াবেটিস স্ট্রিপ সরবরাহের অভিযোগ পাই। তাদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও অস্বীকার করে। এমনকি আমাদের অফিসে এসে উদ্ধত আচরণ করে। ফার্মা সল্যুশনস অস্বীকার করলেও আমরা তাদের সার্ভারে প্রবেশ করে দেখি, এটা তারাই করেছে। লাজ ফার্মার মতো অনেক ফার্মেসিতে তারা এটি সরবরাহ করেছে।

তিনি বলেন, পণ্যটি যে কোম্পানি অর্থাৎ রোশ ইন্টারন্যাশনালের নামে বিক্রি করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ব্যাচ নম্বর দেখে জানায়, এই ব্যাচের স্ট্রিপ তারা উৎপাদন করেনি, বাজারেও ছাড়েনি। এরপর নয়াপল্টনের প্রিন্ট ওয়ান নামের একটি প্রিন্টিং প্রেসে অভিযান চালানো হয়। তাতে ধরা পড়ে। অথচ তারা এটা স্বীকার করেনি।

সফিকুজ্জামান আরও বলেন, চাল-ডালের দাম বাড়ানোর থেকে অনেক ভয়াবহ অপরাধ হচ্ছে নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ বিক্রি। কারণ ভুল রিপোর্টের ফলে ভুল চিকিৎসা পেয়ে মানুষ যেকোনো সময় মারা যেতে পারে। এটি মানুষ হত্যার মতো অপরাধ। প্রতিবেশী একটি দেশ থেকে কাপড়ের লটের মধ্যে লাগেজ পার্টির মাধ্যমে এই স্ট্রিপ আসছে। কাস্টমস পয়েন্টে তার কোনো তদারকি হচ্ছে না। তাদের উচিত হবে, এগুলো ভালোভাবে দেখভাল করা। ঔষধ প্রশাসনেরও বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান করা উচিত। আইনে তাদের ক্ষমতা দেওয়া আছে।

এ সময় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ফার্মা সল্যুশনসের প্রধান নির্বাহী পল্লব চক্রবর্তী কৌশল অবলম্বন করে বলেন, কোম্পানির কিছু বিক্রয়কর্মীর মাধ্যমে এটি ঘটেছে। বিক্রয়কর্মীদের নানা ধরনের চাপ থাকে। তাই চাপে পড়ে তারা এটা করেছে। তবে দায় আমাদের নিতে হবে। এ ব্যাপারে বাড়তি বলার কিছু নাই। আর মোড়ক তৈরি করা প্রতিষ্ঠান ওয়ান প্রিন্টের মালিক বলেন, ফার্মা সল্যুশনসের সঙ্গে আমাদের বিশ্বাসের সম্পর্ক ভালো থাকায় মোড়ক ছাপাতে আমাদের দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি। এ কাজের জন্য আমি ২ লাখ টাকা জরিমানা দিয়েছি। এরপরও আমার বিরুদ্ধে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলে আমি তা মাথা পেতে নেব।

ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবদুল জব্বার মণ্ডল বলেন, ‘অভিযানকালে শুধু নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ নয়, বাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ স্ট্রিপও পাওয়া গেছে। এমনও ফার্মেসি পাওয়া গেছে, যেখানে পাঁচ মিনিট অভিযান করে ৪৩ প্যাকেট মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া গেছে। ২০১৭ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ এখনো ফার্মেসিতে পাওয়া যাচ্ছে। মানুষের প্রাণহানি হতে পারে জেনেও তারা এসব বন্ধ করছেন না। এটা খুবই দুঃখজনক।

কারওয়ান বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ফার্মা সল্যুশনসের প্রধান নির্বাহী পল্লব চক্রবর্তী, নকল স্ট্রিপের মোড়ক তৈরি করা প্রতিষ্ঠান ওয়ান প্রিন্টের মালিক লুৎফর রহমান, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী, কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির, ফার্মেসি কাউন্সিলের সচিব মুহাম্মদ মাহবুবুলসহ অন্যরা।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions