বান্দরবান:-কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মায়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাত-সংঘর্ষ চললেও এতে খুব একটা প্রভাব পড়েনি টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে। তবে এখনও উৎকন্ঠায় বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তের বাসিন্দারা। উড়ে এসেছে অবিস্ফোরিত রকেট লঞ্চার, মর্টারশেল।
বান্দরবানের ঘুমধুম, তুমব্রু সীমান্তে অস্থিরতার পর মায়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের রেশ ছড়িয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তে। বৃহস্পতিবার রাতভর টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মায়ানমারের অভ্যন্তরে থেমে থেমে চলেছে গোলাগুলি। আর এপারে উৎকন্ঠায় কাটিয়েছেন বাসিন্দারা।
সকালে ঝিমংখালী সীমান্তের ওপারে মায়ানমারের ৪/৫ কিলোমিটার অভ্যন্তরে মারিক্কমপাড়া ও হারিংগাছা এলাকায় সকালে মর্টারশেল হামলা, গোলাগুলির খবর মিলেছে। বিভিন্ন স্থানে দেখাযায় ধোঁয়ার কুণ্ডলী। তবে দূরত্ব বেশি হওয়ায় এর আঁচ পড়েনি বাংলাদেশ সীমান্তে। এরপর পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক টেকনাফ সীমান্তে।
উত্তরপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ সোলায়মান (৬৭) বলেন, স্ত্রী, চার ছেলে, ছেলের বউ ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে তার সংসার। সবাইকে রামু পাঠিয়ে দিয়ে খেত-খামার ও গরু-ছাগল নিয়ে বসতবাড়িতে থেকে গেছেন তিনি। তার কাছে এখনও সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। এ কারণে খাবারদাবারে কষ্ট হলেও পরিবারের সদস্যদের এখনও সেখানে রেখে দিয়েছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় হাজারো কৃষক আছেন। তাদের জীবন-জীবিকা ধান ও সবজিখেতের ওপর নির্ভরশীল।
তবে গতকাল দুপুরে আবারও ভারি মর্টারশেল বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ কেঁপেছে বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্ত। উড়ে এসেছে অবিস্ফোরিত রকেট লঞ্চার। এর আগে বুধবারও একটি অবিস্ফোরিত মর্টারশেল উদ্ধার করা হয়। পরে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করে সেনাবাহিনী। তবে এসব ঘটনা নতুন করে আতংক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। মায়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশ পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছেন দেশটির ৩৩০ জন সীমান্তরক্ষী। দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনার পর তাদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে মায়ানমার। ইতোমধ্যে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানালেন শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান।
উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি মায়ানমার থেকে বান্দরানের ঘুমধুমে উড়ে আসা মর্টারশেলের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা।