ডেস্ক রিরোট:- বলিউডের আলোচিত সিনেমা ‘ফাইটার’। এটি পরিচালনা করেছেন সিদ্ধার্থ আনন্দ। হৃতিক রোশন ও দীপিকা পাড়ুকোন অভিনীত এ সিনেমাটি বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে একই দিনে আজ বাংলাদেশেও মুক্তির কথা ছিল। এমনটি জানিয়েছিলেন সিনেমাটির আমদানিকারী প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্টের কর্ণধার নির্মাতা অনন্য মামুন। মুক্তি উপলক্ষে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পেয়েছিলেন অনুমতিও। তবে শেষ মুহূর্তে এসে সিনেমাটির মুক্তি স্থগিত করল প্রতিষ্ঠানটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অনন্য মামুন।
তিনি জানান, সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে দেশের কোন সিনেমা হলে ‘ফাইটার’ প্রদর্শনীর ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে। সেন্সর পেলে শুধু ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সিনেমাটি হলে চলতে পারবে। বাংলাদেশ সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের এমন বিশেষ শর্তের কারণেই সিনেমাটির মুক্তি স্থগিত করেছে আমদানিকারী প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।
এ সম্পর্কে অনন্য মামুন বলেন, ‘আমরা নিয়ম অনুযায়ী সরকারকে ভ্যাট ট্যাক্স পরিশোধ করেই তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে সিনেমাটি মুক্তি দিতে চেয়েছিলাম। এ জন্য গত মঙ্গলবার সিনেমাটি মুক্তির জন্য সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদে আবেদন করেছিলাম। হঠাৎ করেই তারা আমাকে জানান ভাষার মাসে হিন্দি সিনেমা চালানো যাবে না। তাই সিনেমাটি মুক্তি দিলে মাত্র ছয় দিন প্রেক্ষাগৃহে চালাতে পারব। এমন শর্ত দেওয়ায় ফাইটার বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে আমরা সরে এসেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নীতিমালায় আছে দুই ঈদ এবং পূজায় কোনো বিদেশি সিনেমা আমদানি করা যাবে না। ভাষার মাসে সিনেমা চালানো যাবে না এমন নিয়ম কোথাও নেই। তাই সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ এক ধরনের জোর করেই নিজেদের মতো নিয়ম চালু করে সিনেমাটি মুক্তির শর্ত জুড়ে দিয়েছে। আমি মনে করি, এতে করে সিনেমার প্রযোজকের কাছে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। শুধু তাই নয়, এসব অনিয়ম ঠিক না হলে বাংলাদেশে আর কোনো হিন্দি সিনেমা আমরা আনব না।’
এদিকে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের আহ্বায়ক খোরশেদ আলম খসরু বলেন, “হিন্দি ছবি মুক্তি দিতে হলে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের অনাপত্তিপত্র লাগে। গত বুধবার পরিষদের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৮ সংগঠনের নেতাদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয় এফডিসিতে। ভাষার মাসে হিন্দি ছবির প্রদর্শনী যাতে না হয় সভায় সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে মার্চ মাসে হিন্দি ছবির প্রদর্শনী হতে পারে। এ ব্যাপারে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়। এই শর্ত মেনে ‘ফাইটার’ ছবির আমদানিকারী অনাপত্তিপত্র চাইলে দেওয়া হবে, তা পেতে পারেন।”
এ ছাড়া ‘ফাইটার’ সিনেমা নিয়ে ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কয়েকটি দেশ এটি নিষিদ্ধ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের ৫টি দেশ বাহরাইন, ওমান, কাতার, কুয়েত ও সৌদি আরব।
এদিকে ‘ফাইটার’ সিনেমা মুক্তি না পেলেও আগের ঘোষণা অনুযায়ী রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে চিত্রনায়ক কায়েস আরজু অভিনীত সিনেমা ‘রুখে দাঁড়াও’। এই সিনেমার মাধ্যমে দীর্ঘ চার বছর পর রুপালি পর্দায় হাজির হচ্ছেন এই নায়ক। সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রেম ও সংঘাতের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। এই সিনেমায় আরজুর বিপরীতে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়িকা তানহা তাসনিয়া।
মোহনা মুভিজের ব্যানারে দেবাশীষ সরকারের কাহিনি সংলাপ, চিত্রনাট্য ও গীত রচনায় সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন সুকুমার চন্দ্র দাশ।
এতে আরও অভিনয় করেছেন আঁখি চৌধুরী, কাজী হায়াৎ, আশিক, নাদের চৌধুরী, সুব্রত, গাংগুয়া প্রমুখ।
সিনেমাটি সম্পর্কে কায়েস আরজু বলেন, ‘এটি রোমান্টিক ও অ্যাকশন ঘরানার ছবি। এখানে কলেজের নানা অনিয়ম, দ্বন্দ্ব, প্রেম ও নানা বিষয় উঠে এসেছে। এটি মাটি ও মানুষের গল্প। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পরিবার ও সমাজে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলোর জন্যই সিনেমাটি দর্শকদের ভালো লাগবে। এ ছাড়া আমার আগের সিনেমাগুলো যেভাবে দর্শকরা গ্রহণ করেছেন, এই সিনেমাটিও তেমনভাবে তারা গ্রহণ করবেন বিশ্বাস করি।’
কায়েস আরজু অভিনীত মুক্তির প্রতীক্ষায় রয়েছে ইফতেখার চৌধুরীর ‘মুক্তি’, মেহেদী হাসানের ‘আগুনে পোড়া কান্না’, মির্জা সাখাওয়াত হোসেনের ‘অপুর বসন্ত’সহ প্রায় ৮টি চলচ্চিত্র। আগামী মাসে নতুন আরও দুটি সিনেমার কাজ শুরু করবেন বলেও জানান এই নায়ক।
উল্লেখ্য, আরজু অভিনীত সর্বশেষ সিনেমা ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’। এতে আরজু জুটি বেঁধেছিলেন চিত্রনায়িকা পরীমনির সঙ্গে। সুত্র খবরের কাগজ